‘পারুয়ারা আবদুল মতিন খসরু কলেজ আমার ভালোবাসার ক্যাম্পাস’
- প্রকাশ: ১০:৩০:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১
- / ১৯৮২ বার পড়া হয়েছে
কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের কোল ঘেঁষা এক প্রত্যন্ত জনপদ পারুয়ারা। জেলা শহরের সুদূর সীমানায়, উপজেলা সদর থেকে অনেকখানি দূরের এই সুবিধা বঞ্চিত এলাকায় গড়ে উঠেছে অনন্য এক বিদ্যাপীঠ, যার নাম ‘পারুয়ারা আবদুল মতিন খসরু কলেজ’। এই পারুয়ারা আবদুল মতিন খসরু কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৯ সালে। এখানে আমার ভালোবাসার ‘পারুয়ারা আবদুল মতিন খসরু কলেজ’ এবং এই কলেজকে ঘিরে আমার স্মৃতির কিছু অংশ সবার সাথে ভাগাভাগি করার চেষ্টা করেছি।
এক নজরে এই নিবন্ধ
- কলেজ প্রতিষ্ঠা ও নামকরণ
- কলেজে আমার স্মৃতি
- পারুয়ারা আবদুল মতিন খসরু কলেজের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য
- পারুয়ারা আবদুল মতিন খসরু কলেজের বৈশিষ্ট্য
- কলেজের কার্যক্রম
- সহ-শিক্ষা কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে
- কলেজের ছাত্রাবাস
- পারুয়ারা আবদুল মতিন খসরু কলেজের সাফল্য
- কলেজের শিক্ষকদের আন্তরিকতা
- পারুয়ারা আবদুল মতিন খসরু কলেজ আমার ভালোবাসার কলেজ
কলেজ প্রতিষ্ঠা ও নামকরণ
প্রত্যন্ত এলাকায় আলোকিত মানুষ তৈরির প্রত্যয়ে এগিয়ে চলা প্রতিষ্ঠানটি ইতিমধ্যে অর্জন করেছে কুমিল্লা বোর্ডের অন্যতম সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি। কেবল দরিদ্র হবার কারণে কেউ শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে না এই ভাবনা থেকে ১৯৯৯ সালে কলেজটি প্রতিষ্ঠান করেন বিদ্যানুরাগী জনপ্রতিনিধি আলহাজ্ব মোহাম্মদ আবদুর রহমান রব চেয়ারম্যান। যার নামে কলেজের নামকরণ করা হয় ‘পারুয়ারা আবদুল মতিন খসরু কলেজ’ তিনি আবদুল মতিন খসরু (১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৫০—১৪ এপ্রিল ২০২১) বাংলাদেশের একজন রাজনীতিবিদ, মুক্তিযোদ্ধা ও আইনজীবী যিনি কুমিল্লা-৫ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। জনাব মতিন খসরু ছিলেন শেখ হাসিনার প্রথম মন্ত্রিসভায় তিনি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী; এছাড়া তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
কলেজে আমার স্মৃতি
ভালোবাসার কলেজ ক্যাম্পাসের মুখরিত ২ বছরের স্মৃতি আজও অমলিন ও মধুর বটে। স্মৃতির মণিকোঠায় প্রাণের প্রিয় কলেজ ক্যাম্পাস। ক্যাম্পাসের সেই স্মৃতিগুলো, ফেলে আসা দিনগুলো স্মৃতির আকাশে বারবার উঁকি দিয়ে যায়। ভোলা যায় না, ভোলা সম্ভব নয় স্মৃতির মণিকোঠায় জায়গা করে নেওয়া সেই নানা রঙের দিনগুলো, ভালোবাসাময় দিনগুলো।
ক্যাম্পাসের দিনগুলির কথা মনে করলেই অনেক স্মৃতি বিজড়িত আয়নায় ভেসে ওঠে। কতই না মধুর ছিল সেই সময়গুলো। বন্ধুদের সঙ্গে ক্যাম্পাসের অদূরে বালু নদীতে বিকেলবেলা ঘুরতে যাওয়া, গলা ছেড়ে সমস্বরে গেয়ে ওঠা গান- ‘তোরা ছিলি তোরা আছিস জানি তোরাই থাকবি, বন্ধু বোঝে আমাকে’ ভালোবাসার জয় গান গেয়ে ওঠা, ক্যান্টিনে সবাই মিলে কফিতে চুমুক, আড্ডাবাজি।
বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ডেকোরেশন থেকে শুরু করে গান-বাজনার রিহার্সাল, শিক্ষকদের বসার বিশেষ আসন প্রস্তুত করা বিশেষ অতিথি ও প্রধান অতিথির জন্য ফুলেল শুভেচ্ছা পর্ব পরিচালনা,’ডিআইইউসাস’র হয়ে ক্যাম্পাস সম্পর্কিত নানান নিউজ কাভার করা, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ফিচার লেখা, অন্যান্যদের অনুপ্রাণিত করা, ডিপার্টমেন্টের বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে যুক্তির মার-প্যাঁচে প্রতিপক্ষকে নাস্তানাবুদ করা, মেধা, মননে, সৃষ্টিশীল, ও প্রকৃত আধুনিক সমাজ গঠনের মনোভাব নিয়ে বিশ্বজয়ের স্বপ্ন দেখা ও বিভিন্ন বাস্তবধর্মী পরিকল্পনা করা, শিক্ষকদের হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা অর্জনে ক্যাম্পাসের কর্মকাণ্ডে মনোনিবেশ করা আজ যেন সবই স্মৃতি। দুই বছরের কলেজ জীবন যেখানে যৌবনাদীপ্ত তরুণ তরুণীরা পায় অগ্রিম আনন্দ-সাগরে ভাসার এক অনাবিল প্রশান্তি।
সমমনাদের নিয়ে গঠিত হয় বন্ধুত্ব ও ভালোবাসার এক নিবিড় বন্ধন। দেশের ভিন্ন ভিন্ন জায়গা থেকে আগত ভিন্ন মানসিকতা, ভিন্ন সংস্কৃতি, ভিন্ন ধর্মের ছেলেমেয়ে গুলো হয়ে ওঠে এক আত্মার একই প্রাণ। শিক্ষাঙ্গনের শিক্ষার্থীদের মতে এখানেই ঘটে মেধার বুদ্ধিদীপ্ত প্রতিভার বাতিঘর।
বন্ধুত্ব পৃথিবীর সবথেকে মধুর নাম। কত বলা না বলা কথা, কত স্বপ্ন একসাথে দেখা, কতখানি ঘুরতে যাওয়া, কতনা আবেগ অনুভূতি জড়িয়ে আছে আমাদের এই বন্ধুত্বের ছোট্ট একটি শব্দের মধ্যে। আজ আমি তেমনি বন্ধুত্বের দুষ্ট মিষ্টি গল্পগুলো মিস করি। তার সাথে মিস করি কলেজের ঘাসের উপর পড়ে থাকা প্রতিটি শিশিরবিন্দুকে, বাতাসে ভেসে বেড়ানো ধূলিকণাকে, সূর্যের আলোয় আলোকিত কলেজটাকে।
এই বন্ধুত্ব জাতি, ধর্ম, বর্ণ সব কিছুর ঊর্ধ্বে। শেখায় আমাদেরকে সহমর্মিতা, সমব্যথী বিনয়ী ও দূরদর্শী হতে। বন্ধু ছাড়া ক্যাম্পাস যেন এক মরুভূমি। নিবিড় প্রয়োজনে বন্ধুরাই অবতীর্ণ হয় মা, বাবা,ভাইয়ের ভূমিকায়। তাই বন্ধুদের কাছে আজীবন রয়ে যায় বন্ধুত্বের ঋণ। বন্ধুদের সঙ্গে কাটানো ২ বছরের বর্ণিল-স্বপ্নিল স্মৃতিগুলো কথায় কথায় আপন-আলাপনে লিপিবদ্ধ হয়ে গেল স্মৃতির ভাণ্ডারে। এমনি শত-সহস্র স্মৃতিতে দিয়ে ঘেরা আমাদের ছোট্ট কলেজ ক্যাম্পাসটি।
আমার কলেজ ক্যাম্পাসের কথা মনে পড়তেই স্মৃতি কথন বারবার স্মরণ করিয়ে দেয় সেই চমৎকার স্মৃতিজাগানিয়া গানটি— দিনগুলি মোর সোনার খাঁচায় রইল না, সেই-যে আমার নানা রঙের দিনগুলি।
কান্না-হাসির বাঁধন তারা সইল না, সেই-যে আমার নানা রঙের দিনগুলি’।
ভোরের স্নিগ্ধ আবেশে ও অবিচ্ছিন্ন নীরবতায় প্রকৃতির সুরের মূর্ছনায় কখন যে চোখ দুটো বন্ধ করে হারিয়ে গিয়েছিলাম অতীতের সেই দিনগুলোতে, বুঝতে পারিনি! সেই দিনগুলোতে, যে দিনগুলো হৃদয় পটে আজও অমলিন হয়ে আছে আমার সেই সব নানান রঙের দিনগুলি।
শ্রান্তপথের ক্লান্ত পথিকের মতো পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখি। সময়ের অবিশ্রান্ত ধারায় চলমান সময়ের মাঝে বিলীন হয়ে যায় জীবনের মুহূর্তগুলো প্রতিনিয়ত।
আমরা হেঁটে যাই জীবনের একপ্রান্ত হতে অন্যপ্রান্তের দিকে ক্রমশ, ক্রমাগতভাবে অনন্তের দিকে। হয়তো আমাদের সমাজ জীবনে ও ব্যক্তিজীবনে এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আসবে, কিন্তু কলেজ ক্যাম্পাসকে ঘিরে আমার এই স্বচ্ছ ও আবেগী অনুভূতি শেষ হওয়ার নয়।
পারুয়ারা আবদুল মতিন খসরু কলেজের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য
ছাত্রছাত্রীদের চারিত্রিক ও মানবিক গুলাবলির সার্বিক বিকাশ সাধনের মাধ্যমে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা। দেশপ্রেম ও দেশাত্মবোধ জাগ্রত করা এবং নেতৃত্বের গুণাবলির বিকাশ ঘটানো। শিক্ষার্থীদের শারীরিক, মননশীলতা,সাংস্কৃতিক চর্চা ও সৃজনী শক্তির বিকাশ ঘটানো। ছাত্রছাত্রীদের বোর্ড পরিক্ষায় শতভাগ সাফল্য নিশ্চিত করা এবং এসএসসির তুলনায় এইচএসসিতে জিপিএ বৃদ্ধি করা। স্নাতক, স্নাতক (সম্মান) উচ্চশিক্ষার মাধ্যমে আলোকিত মানুষ এবং দেশের সুযোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা।
পারুয়ারা আবদুল মতিন খসরু কলেজের বৈশিষ্ট্য
কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের সন্নিকটে মনোরম পরিবেশে অবস্থিত। কম্পিউটার ও সাইন্সল্যাবের সুব্যবস্থা। পর্যাপ্ত পাঠ্য সহায়ক লাইব্রেরি এবং সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা। সম্মিলিত টিউটোরিয়াল পরিক্ষা ও মডেল টেস্টের ব্যবস্থা। বোর্ড পরিক্ষায় ভালো ফলাফলের লক্ষ্য নির্বাচনী পরীক্ষার পর বিষয়ভিত্তিক স্পেশাল ক্লাস ও মডেল টেস্টের ব্যবস্থা। শিক্ষার্থীদের সার্বিক মানোন্নয়নের লক্ষ্যে অবিভাবকদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের রক্ষা করা।
কলেজের কার্যক্রম
- জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক প্রণীত শিক্ষাক্রম এবং কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠদান ও মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
- জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও মাধ্যমিক উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুসারে উচ্চতর স্তরের কার্যক্রম পরিচালিনা।
- সম্মিলিত টিউটোরিয়াল পরিক্ষার ফলাফলের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের মানোন্নয়ন নিয়ে অবিভাবক সমাবেশের মাধ্যমে শিক্ষক সাথে অধ্যক্ষ মহোদয়েয়র পর্যালোচনা।
- সেমিস্টার পরিক্ষা, ফলাফল এইগুলো নিয়ে অবিভাবক, কমিটির সদস্য, শিক্ষকবৃন্দ, অধ্যক্ষ মহোদয়ের সেমিনার।
সহ-শিক্ষা কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে
- নবীন বরণ অনুষ্ঠান
- কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা
- বার্ষিক দোয়া ও বিদায় অনুষ্ঠান
- জাতীয় দিবসসমূহ উদযাপন
- সাংস্কৃতিক সপ্তাহ ( বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা)
- বিশেষ দিবসে দেয়ালিকা প্রকাশ
- শিক্ষা সফর
- নিয়মিত বিদায় স্মরণিকা সতীর্থ প্রকাশ।
ক্লাব কার্যক্রম
- বাচিক শিল্প: আবৃত্তি, বিতর্ক, উচ্চারণ।
- সাইন্সক্লাব: বিজ্ঞান মেলা, গনিত ও পদার্থ অলিম্পিক, আইসিটি প্রজেক্ট
- উদ্যম: বিএনসিসি, স্কাউটস
- খেলাধুলা: সাঁতার, ক্রিকেট, ফুটবল, দাবা, কেরাম, ব্যাডমিন্টন
- পিসি শিল্পী গোষ্ঠী: আধুনিক গান,পল্লীগীতি, ,দেশাত্মবোধক গান ,জারিগান, ভাটিয়ালি গান, নজরুল সংগীত, রবীন্দ্রসংগীত
- ভাষা ও সাহিত্য ক্লাব: ধারাবাহিক গল্প বলা, প্রবন্ধ, স্পোকেন ইংলিশ, বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বক্তব্য
- প্রজন্ম থিয়েটার: নৃত্য, নাটক,অভিনয়, কৌতুক, ডিসপ্লে, যেমন খুশি তেমন সাজো
- মেধা যাচাই: সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ, কুইজ
কলেজের ছাত্রাবাস
সোহেল স্মৃতি ছাত্রাবাস নামে আবাসিক ব্যবস্থা রয়েছে। সোহেল স্মৃতি শিক্ষাবৃত্তি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান করা হয়। ছাত্রাবাসে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন, পত্রিকা পড়া, খেলাধুলা, বিনোদনের সুব্যবস্থা রয়েছে। কলেজে মোবাইল ব্যবহার এবং রাজনৈতিক কর্মকান্ড নিষিদ্ধ।
পারুয়ারা আবদুল মতিন খসরু কলেজের সাফল্য
২০১৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় পাশের হার ছিল ৯৯% এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৩ জন। ২০১৫ সালের পাশের হার ৯৯.০৭% এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩০ জন। ২০১৬ সালের পাশের হার ছিল ৮৭% এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৬ জন। ২০১৭ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় পাশের হার ছিল ৮৭% এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ জন। ২০১৮ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় পাশের হার ছিল ৯৭.৫৬% এবং জিপিএ- ৫ পেয়েছে ৫০ জন।
২০১৮ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ৩৫ জন শিক্ষার্থী দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। তার মধ্যে আমিও আছি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ। নোয়াখালী মেডিকেল কলেজে ১ জন, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে ১ জন, দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে ১ জন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬ জন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩ জন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ জন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ জন, সিলেট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ জন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ জন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬ জন, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ জন, গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ১ জন, মেরিন একাডেমি চট্টগ্রামে ২ জন।২০২৯ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় পাশের হার ছিল ১০০% এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৫১।এইবছরও শিক্ষার্থীরা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছে২০২০ সালের পাশের হার ছিল ১০০%। কলেজের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় এ এলাকায় উচ্চ শিক্ষা প্রসারের জন্য ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষে ৩ টি বিষয়ে অনার্স ও ডিগ্রি কোর্স চালু করা হয়েছে।
কলেজের শিক্ষকদের আন্তরিকতা
ছাত্ররা জ্ঞানার্জনের যে সাধনায় নিয়োজিত হয়, তাতে শিক্ষকগণ উদার সহযোগিতা প্রদান করেন। শিক্ষকগণের সুচিন্তিত নির্দেশনায় ছাত্ররা শিক্ষার অভীষ্ট লক্ষ্যে উপনীত হওয়ার চেষ্টা করে। শিক্ষকের কল্যাণধর্মী স্নেহচ্ছায়ায় শিক্ষার্থীর জীবন বিকশিত হয়। শিক্ষক ছাত্রদের সামনে জ্ঞানের আলো তুলে ধরেন। শিক্ষকের প্রদর্শিত জ্ঞানসম্পদে ছাত্ররা নতুন জীবন লাভ করে। এ জীবনই তার বিকাশের, যোগ্যতা প্রদর্শনের আর গুণাবলি চর্চার। এ সবই শিক্ষকের অকৃত্রিম আশীর্বাদপুষ্ট হলেই সম্ভব হয়ে ওঠে। এই পটভূমিকায় ছাত্র-শিক্ষকের পরম পবিত্র সম্পর্ক গড়ে ওঠে, মহত্ত্বের এক অনাবিল সৌন্দর্যের বিকাশ ঘটায়। বাবা-মায়ের পর শিক্ষকই যে ছাত্রের কাছে দ্বিতীয় পিতা বা মাতার মর্যাদায় আসীন হন তার মূলে রয়েছে ছাত্রের জীবনে শিক্ষকের বিশেষ ভূমিকা। তাই ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের ক্ষেত্রে শিক্ষকের ভূমিকাই বিশেষ কার্যকর হলেও ছাত্র-শিক্ষক উভয়ের ভূমিকা ও অবস্থানের ওপর ঐ সম্পর্কের প্রকৃতি নির্ভর করে। এবং সম্পর্কটি মধুর ও পবিত্র হলে তার ভিত্তিতেই ছাত্রের ভবিষ্যৎ জীবন সার্থক ও মহিমান্বিত হয়ে ওঠে। ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্কের মধ্যে একটি পরম আন্তরিকতার সুর ধ্বনিত হয় পারুয়ারা আবদুল মতিন খসরু কলেজে। ছাত্ররা জ্ঞান আহরণের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গমন করে। যেখানে শিক্ষর বিচিত্র উপকরণের সমাবেশ থাকে। সব ধরনের উপকরণের সহায়তায় জ্ঞান বিতরণ করেন শিক্ষকরা। শিক্ষককে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বললেও অযৌক্তিক বলা হবে না। ছাত্ররা জ্ঞানার্জনের প্রস্তুতি ও আগ্রহ নিয়ে শিক্ষকের শরণাপন্ন হয়। নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক অত্যন্ত আন্তরিকতায় জ্ঞানদানে প্রবৃত্ত হন। আগ্রহী ছাত্রের কাছে নিজের হৃদয়মন উজাড় করে দিতে শিক্ষকের কোনো কার্পণ্য নেই। বরং ছাত্র যদি সুযোগ্য হয় তাহলে শিক্ষক জ্ঞান বিতরণে অপরিসীম আনন্দ অনুভব করেন। নিজের মানসশিষ্য বলে ছাত্রদের বিবেচনা করে শিক্ষক তাঁর সর্বোত্তম জ্ঞানদানে তৎপর হন। ছাত্র তখন আর দূরে থাকে না। হয়ে ওঠে শিক্ষকের একান্ত আপনজন। একজন মানুষের জীবনের পরিপূর্ণতা বলতে বুঝায় জীবনের বিকাশ, ব্যক্তিত্বের জাগরণ ও তার সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ। এই সুপ্ত প্রতিভার বিকাশে শিক্ষকের অগ্রণী ভূমিকার কথা অস্বীকার করার উপায় নেই। এক্ষেত্রে শিক্ষক যথেষ্ট পরিশ্রমী, ধৈর্যশীল ও অধ্যবসায়ী হয়ে শিক্ষার্থীর মনের খোরাক মেটাতে সচেষ্ট হন। শিক্ষক তাঁর মেধা দিয়ে শিক্ষার্থীর মনে প্রচণ্ড কৌতূহল জাগিয়ে তোলেন। রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, “None but those who have the spirit of forbearance are fit to be teacher”: কৌতূহল জাগানো ও কৌতূহল নিবৃত্ত করা শিক্ষকের কাজ।
ছাত্ররা অর্থের বিনিময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠ নিতে যায়। জ্ঞান বিতরণের বেলায় বিদ্যা দান ও বিদ্যা গ্রহণের বেলায় ছাত্র-শিক্ষকের মাঝে আর্থিক সম্পর্কের স্বরূপটি উপেক্ষিত। শিক্ষক ছাত্রদের তৈরি করেন, তাদের যোগ্য করে তুলে জ্ঞানের দ্বারা হৃদয় পূর্ণ করেন। এভাবে দান ও গ্রহণের মাধ্যমে ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যে একটি পবিত্র নিবিড় ও অচ্ছেদ্য বন্ধন সৃষ্টি হয়। ফলে শিক্ষাজীবনে ছাত্ররা যেমন শিক্ষকের কাছ থেকে উপকৃত হয়, তেমনি পরবর্তীকালেও শিক্ষকের আশীর্বাদ ছাত্রের জীবনে সম্পৃক্ত হয়ে থাকে। অপরদিকে শিক্ষার্থী যে অকৃত্রিম শ্রদ্ধাবোধ নিয়ে শিক্ষকের কাছে থেকে জ্ঞান অর্জন করে, সেই শ্রদ্ধাবোধ তার শিক্ষা জীবনের শেষেও অম্লান হয়ে থাকে। ছাত্রের কাছে শিক্ষকের স্মৃতি চিরউজ্জ্বল হয়ে থাকে। পারুয়ারা আবদুল মতিন খসরু কলেজের প্রতিটি শিক্ষক খুবই আন্তরিকত।
পারুয়ারা আবদুল মতিন খসরু কলেজ আমার ভালোবাসার কলেজ
ভালোবাসি, খুব ভালোবাসি ঐ পারুয়ারা আবদুল মতিন খসরু কলেজটাকে। হ্যাঁ, রবি ঠাকুরের গীতাঞ্জলি থেকে নয়, নজরুলের অগ্নিবীণা থেকে নয়, শরৎ বাবুর দেবদাস থেকেও নয়, আমার অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে বলছি- পারুয়ারা আবদুল মতিন খসরু কলেজ আমার স্বপ্নের রাজমহল, আমার হৃদয় নিংড়ানো ভালবাসার ক্যাম্পাস, আমার স্মৃতির পৃষ্ঠায় এক স্বর্ণালী অধ্যায়। আমার কলেজ এ সেই অনন্ত যে অনন্তের শুরু আছে অন্ত বা শেষ নেই, আছে মায়া যা লিখে শেষ করা যাবে না।
সারাদেশে, আমার ও আমাদেরই মতো কলেজভক্ত ছাত্রছাত্রী ক্যাম্পাসকে ঘিরে শত-সহস্র,আবেগী, সুন্দর ও বৈপ্লবিক স্বপ্নের জয় হোক, ভালোবাসার জয় হোক, পৃথিবী সুস্থ হোক। ভালো থাকুক আমাদের সবার প্রাণপ্রিয় স্বপ্নের কলেজ, ভালোবাসার ক্যাম্পাস।
এই কলেজে কি ইন্টারমিডিয়েট লেভেলের স্টুডেন্টদের জন্য হোস্টেলের ব্যবস্থা আছে?
জানালে খুবই উপকৃত হতাম
ছেলেদের জন্য আছে, মেয়েদের জন্য নেই।