০১:২২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
                       

সুশাসন কী? সুশাসনের ধারণা, সংজ্ঞা ও উপাদান কী?

আহমেদ মিন্টো
  • প্রকাশ: ০১:১২:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ নভেম্বর ২০২১
  • / ৭৭৩৯৯ বার পড়া হয়েছে


Google News
বিশ্লেষণ-এর সর্বশেষ নিবন্ধ পড়তে গুগল নিউজে যোগ দিন

বিশেষ শর্তসাপেক্ষে এবং স্বল্পমূল্যে এই ওয়েবসাইটটি সামাজিক কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ কিংবা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নিকট বিক্রি করা হবে।

সুশাসন হলো এক ধরনের শাসন প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে ক্ষমতার সুষ্ঠু চর্চা হয়। এই শাসন প্রক্রিয়ায় জনগণ স্বাধীনভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে, সরকারের নীতি ও কর্মকান্ড সম্পর্কে অবগত থাকে এবং নারী-পুরুষ স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশ করতে পারে। এটি স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও আইনের শাসন নিশ্চিত করে।

সুশাসনের ধারণা (Concept of Good Governance)

সাধারণত শাসন হচ্ছে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ও তা বাস্তবায়নের একটি প্রক্রিয়া। শাসনের ধারণা কোন নতুন বিষয় নয় বরং এটা মানব সভ্যতার মতোই পুরাতন। শাসন ব্যবস্থার অর্থ ও মাত্রা সম্পর্কে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন আলোচনা ও বিতর্ক রয়েছে।

সুশাসন শব্দটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেমন: আন্তর্জাতিক শাসন, জাতীয় শাসন, স্থানীয় শাসন, যৌথশাসন ইত্যাদি হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। বর্তমানে সুশাসনকে একটি দেশের উন্নয়নের দিক নির্দেশনা প্রদানকারী হিসেবে দেখা হয়।

শাসন বলতে বুঝায় ক্ষমতাকে কিভাবে প্রয়োগ করা হয়, কিভাবে জনগণের দাবি-দাওয়ার প্রতি সাড়া প্রদান করা হয় কিংবা কিভাবে একটি জনসমষ্টি শাসিত ও পরিচালিত হয়।

সাধারণ অর্থে সুশাসন হলো এমন এক প্রক্রিয়া যা একটি দেশের রাজনৈতিক,অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখে। এই শাসন প্রক্রিয়ায় জনগণের আত্মনির্ভরশীলতা বৃদ্ধি পায়। সরকারের স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতার সঙ্গে নিশ্চিত হয় সামাজিক ন্যায় বিচার ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক বহুত্ববাদ। সুশাসনের মূল ভিত্তি হলো মূল্যবোধ।

সুশাসনের ধারণাটি বহুমাত্রিক।

  • রাজনৈতিক সুশাসন
  • সামাজিক সুশাসন
  • অর্থনৈতিক সুশাসন
  • সাংস্কৃতিক সুশাসন

তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়ন ও শাসন প্রক্রিয়ায় সুশাসন এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা, সরকারের জবাবদিহিতা, নারীর ক্ষমতায়ন, দুর্নীতি দূরীকরণ, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, শিল্পায়ন সব ক্ষেত্রেই সুশাসন জরুরি। তৃতীয় বিশ্বে সুশাসনের সমস্যাকে সব সমস্যার মূল কারণ হিসাবে সনাক্ত করেছে দাতারা। তাদের মতে, এসব রাষ্ট্রে সম্পদের স্বল্পতা রয়েছে। তবে এর থেকেও বড় সমস্যা হলো সম্পদের ব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি। একটি বহুমুখী ধারণা হিসাবে (multi-dimensional) সুশাসনের উদ্ভব হয় মূলত ১৯৮৯ সালে। বিশ্বব্যাংক প্রথম এই ধারণা উপস্থাপন করে। ‘সবুজ বিপ্লব’ আর ‘কাঠামো সমন্বয় কর্মসূচি’র ব্যর্থতার পর বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (IMF) উন্নয়নের শর্ত হিসাবে এ ধারণার অবতারণা করে।

মোটা দাগে সুশাসনের প্রধান ক্ষেত্রসমূহ হল

  • রাজনৈতিক: গণতন্ত্র ও সরকারের স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ
  • অর্থনৈতিক: মুক্তবাজার অর্থনীতি ও বেসরকারিকরণ
  • সামাজিক-সংস্কৃতিক: পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রসার এবং
  • তথ্য ও প্রযুক্তি: বিশ্বজুড়ে তথ্য-প্রযুক্তির প্রসার।

সুশাসনের সংজ্ঞা

সুশাসনের ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো ‘Good Governance’। এখানে Governance শব্দটি গ্রিক ভার্ব kubernaein [kubernáo] থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে।

বিশ্বব্যাংকের মতে, সুশাসন হলো এমন এক প্রক্রিয়া যেখানে রাজনৈতিক কর্তৃত্ব ও প্রাতিষ্ঠানিক সম্পদ সমাজের সমস্যা ও চাহিদা পূরণে ব্যবহৃত হয়। 

  • ম্যাককরনি (MacCorney)-এর মতে, “সুশাসন হলো রাষ্ট্রের সাথে সুশীল সমাজের, সরকারের সাথে শাসিত জনগনের, শাসকের সাথে সাশিতের সম্পর্ক”। (Good governance is the relationship between civil society and the state, between government and tgoverned, the ruler and ruled.)
  • বিশ্বব্যাংকের মতে সুশাসনের সংজ্ঞা হলো, “Governance is the manner in which power is exercised in the management of a country’s economic and social resources for development.”
  • UNDP এর মতে, সুশাসন হলো অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক কর্তৃত্বের বিধিবদ্ধ চর্চা যার মাধ্যমে একটি দেশের উন্নয়ন কার্যাবলি পরিচালনা করা হয়।
  • যে শাসন ব্যবস্থায় আইনের শাসন, দায়িত্বশীলতা, জবাবদিহিতা, ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ এবং জনগণে অংশগ্রহণ গনতান্ত্রিক উপায়ে সুনিশ্চিত হয় তাকেই সুশাসন বলে।

সুশাসন হলো প্রাতিষ্ঠানিক পরিবেশ যার মাধ্যমে নাগরিক নিজের সাথে এবং সরকারি কর্মকর্তা বা এজেন্সির সাথে একত্রে কাজ করতে পারে, যাতে নাগরিকদের আত্ম-মর্যাদা উপলব্ধিতে সমর্থন যোগায় ও আর্থসামাজিক রূপান্তরে সহায়তা করে। রাষ্ট্রীয় শাসন কাঠামোকে জনগণের কল্যাণে কাজে লাগাবার জন্য নব্বই দশকে শাসনব্যবস্থায় একটি নতুন ধারণার অবতারণা হয়েছে। আর এই ধারণাটি হলো নানা ধরনের এজেন্সি ও দাতাসংস্থা প্রদত্ত সুশাসন সম্পর্কিত ধারণা।

সুশাসনের উপাদানসমূহ (Elements of Good Governance)

বিশ্বব্যাংকের মতে সুশাসনের উপাদান

১৯৯৪ সালে বিশ্বব্যাংক এক রিপোর্টে সুশাসনের ৪ টি উপাদানের কথা বলেছে। বিশ্বব্যাংক ১৯৯২ সালে প্রথম সুশানের সংজ্ঞা প্রদান করে ‘Governance and Development’ প্রতিবেদনে। বিশ্বব্যাংক সুশাসনের ধারণা প্রদান করে ১৯৮৯ সালে।

বিশ্বব্যাংকের মতে সুশাসনের ৪ টি উপাদান বা স্তম্ভ হলো- 

  • ১. সরকারি প্রশাসন ব্যবস্থা
  • ২. যথাযথ বা বৈধ উন্নয়ন কাঠামো
  • ৩. দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা
  • ৪. স্বচ্ছতা ও অবাধ তথ্য প্রবাহ
যে শাসন ব্যবস্থায় আইনের শাসন, দায়িত্বশীলতা, জবাবদিহিতা, ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ এবং জনগণে অংশগ্রহণ গনতান্ত্রিক উপায়ে সুনিশ্চিত হয় তাকেই সুশাসন বলে। | Photo: UNDP BANGLADESH)

UNDP-এর মতে সুশাসনের উপাদান

১৯৯৭ সালে ইউএনডিপি (United Nations Development Program – UNDP) সুশাসনের ৯ টি প্রধান বা মূল উপদানের কথা বলেছে। এগুলো হলো-

  • ১. অংশীদারত্ব (Perticipation)
  • ২. আইনের শাসন (Rule of Law)- সমতা ও ন্যায্যতা 
  • ৩. স্বচ্ছতা (Transparency)
  • ৪. সংবেদনশীলতা (Responsiveness)
  • ৫. জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা (Consensus orientation)
  • ৬. সাম্য (Equity)
  • ৭. কার্যকরীতা ও দক্ষতা (Effectiveness and Efficiency)
  • ৮. দায়বদ্ধতা (Accountability )
  • ৯. কৌশলগত লক্ষ্য (Strategic Vision)

IDA-এর মতে সুশাসনের উপাদান

আইডিএ (The International Development Association – IDA) ১৯৯৮ সালে সুশাসনের ৬ টি মূল উপাদানের কথা বলেছে। এগুলো হলো-

  • ১. টেঁকসই কাঠামোগত সংস্কার (sustainability of structural reforms)
  • ২. সম্পত্তি অধিকার এবং আইনের শাসন (property rights and rule-based governance)
  • ৩. গুণগত বাজেট এবং পাবলিক বিনিয়োগ প্রক্রিয়া (quality of budget and public investment process)
  • ৪. রাজস্ব সংগ্রহের দক্ষতা এবং সাম্য (efficiency and equity of revenue mobilization)
  • ৫. সরকারি ব্যয়ের দক্ষতা এবং সমতা (efficiency and equity of public expenditures)
  • ৬. জনসেবার জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতা (accountability and transparency of the public service)

সুশাসনের অত্যাবশ্যকীয় উপাদান

১. স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা

স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা হচ্ছে সুশাসনের প্রধান উপাদান। এটি সরকারের স্বচ্ছতা ও আইনের শাসনের উপর নির্ভর করে। জবাবদিহিতার মাধ্যমেই সুশাসন প্রতিষ্ঠা পায়। শুধু সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতেই নয় বরং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সুশীল সমাজের জবাবদিহিতাও আবশ্যক। দুর্নীতি কমাতে ও রাজনৈতিক উন্নয়নে জবাবদিহিতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অন্যদিকে, আইন ও নীতি মান্য করে যখন কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও তার বাস্তবায়ন করা হয় তখন তাকে স্বচ্ছতা বলে। সিদ্ধান্ত বা পরিকল্পনা প্রণয়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিত হলে সহজেই সঠিক তথ্য পাওয়া যায়। স্বচছতা প্রতিষ্ঠা পেলে সরকারি অর্থ ব্যয়ে দুর্নীতি অনেকাংশে কমে যায়।

২. অংশগ্রহণ

পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে প্রত্যেক নাগরিকের অংশগ্রহণ সুশাসনের অন্যতম একটি উপাদান। সুশাসনের মূল ভিত্তি নারী এবং পুরুষ উভয়রেই অংশগ্রহণ। বিশ্বব্যাংক মনে করে, সকলের অংশগ্রণের মাধ্যমেই কার্যকরী উন্নয়ন সম্ভব। অংশগ্রহণের উদ্দেশ্য হচ্ছে জনগণকে অধিক ক্ষমতাশীল করা। রাজনৈতিক অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ হচ্ছে ভোটদান।

৩. আইনের শাসন

সুশাসনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে আইনের শাসন। এটি একটি রাষ্ট্রের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় ও বৈধ উপকরণ। মানবাধিকার নিশ্চিতকরণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আইনের শাসন। প্রশাসনের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে আইনের শাসন থাকা দরকার। আইনের মাধ্যমেই স্বেচ্ছাচারী ক্ষমতা ও আধিপত্য রোধ করা যায়। আইন হতে হবে অবশ্যই নিরপেক্ষ। রাষ্ট্রের সংবিধান হচ্ছে একটি রাষ্ট্রের আইনের প্রধানতম উৎস।

৪. নিরপেক্ষতা ও দায়িত্বশীলতা

পক্ষপাতহীন অবস্থা বা নিরপেক্ষতাই পারে সুশাসন নিশ্চিত করতে। সুশাসন ততক্ষণ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠা পাবে না যতক্ষণ না পর্যন্ত প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে ভূমিকা পালন করে। নিরপেক্ষতা আসতে হলে মেধার ভিত্তিতে সরকারি চাকুরি দিহে হবে। অন্যদিকে, দায়িত্বশীলতা না থাকলে কখনোই কোন কাজ সুন্দরভাবে সম্পন্ন করা যায় না। সরকারি, বেসরকারি এবং ব্যক্তিগত প্রত্যেকটি কাজের ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল হতে হবে। একমাত্র দায়িত্বশীলতাই পারে সঠিকসময়ে কাজ সম্পন্ন করতে।

৫. জনপ্রশাসনের উৎকর্ষতা ও বিকেন্দ্রীকরণ

সুশাসন আনয়নের জন্য জনপ্রশাসনের উৎকর্ষ সাধন করতে হবে। এই উৎকর্ষ সাধন করার জন্য জনপ্রশাসনকে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও গতানুগতিক ধারা থেকে বের হতে হবে। জনপ্রশাসনের উৎকর্ষতা সাধন বলতে বোঝায় জনপ্রশাসনে দক্ষতা আনয়ন, প্রযুক্তি ব্যবহারকরণ ও কার্যকর কৌশল গ্রহণ করা। সুশাসনের আরেকটি উপাদান হচ্ছে বিকেন্দ্রীকরণ। ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমেই সকল বিভাগ সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে। এটি প্রশাসনের কর্তৃত্ববাদী প্রবণতা কমিয়ে দেয় এবং প্রশাসনকে জনগণের দোড় গোড়ায় পৌঁছে দেয়। তাই একটি রাষ্ট্রের সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সরকারের প্রতিটি বিভাগে বিকেন্দ্রীকরণ অপরিহার্য।

সুশাসন সম্পর্কে ইউনেস্কো কী বলেছে?

ইউনেস্কো (United Nations Education, Science and Cultural Organisation – UNESCO) সুশাসনের উপাদনের কথা বলতে গিয়ে বিশ্বব্যাংকের উপাদানগুলোর পাশাপাশি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর অংশগ্রহণের কথা বলেছে।

কোন সংস্থার মতে সুশাসনের উপাদান কয়টি?

সংস্থার নামউপাদানগৃহীত সাল
বিশ্বব্যাংক (World Bank)১৯৯৪
এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক (Asian Development Bank)১৯৯৫
জাতিসংঘ (United Nations)
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (UNDP)১৯৯৭
আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সমিতি (IDA)১৯৯৮
আফ্রিকান উন্নয়ন ব্যাংক (AfDB)১৯৯৯

সারসংক্ষেপ

সাধারণভাবে সুশাসন বলতে এমন এক আদর্শ শাসন ব্যবস্থাকে বুঝায় যা একটি দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন ঘটায়। অন্যভাবে, সুশাসন বলতে এমন এক ধরনের শাসন ব্যবস্থাকে বোঝায় যা জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা, প্রশাসনিক দক্ষতা, আইনের অনুশাসন, মানবাধিকার ইত্যাদি বিষয়কে গুরুত্ব দেয়। সুশাসন আইনের শাসনেরই আরেক নাম। সুশাসন হলো যৌক্তিক এবং দক্ষভাবে শাসন পরিচালনা। সুশাসন অবশ্যই আইনের শাসনের ওপর প্রতিষ্ঠিত। এটি রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক জবাবদিহিতার নিশ্চিত করে। জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা, আইনের শাসন, মানবাধিকার, প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ, সরকারের দক্ষতা ও সাড়া প্রদানের ক্ষমতার উপর নির্ভর করে সুশাসন প্রক্রিয়া।

শেয়ার করুন

মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার তথ্য সংরক্ষিত রাখুন

লেখকতথ্য

আহমেদ মিন্টো

মিন্টো একজন ফ্রিল্যান্স লেখক এবং বিশ্লেষণ'র কন্ট্রিবিউটর।

বিশেষ শর্তসাপেক্ষে এই ওয়েবসাইটটি সামাজিক কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ কিংবা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নিকট বিক্রি করা হবে।

সুশাসন কী? সুশাসনের ধারণা, সংজ্ঞা ও উপাদান কী?

প্রকাশ: ০১:১২:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ নভেম্বর ২০২১

সুশাসন হলো এক ধরনের শাসন প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে ক্ষমতার সুষ্ঠু চর্চা হয়। এই শাসন প্রক্রিয়ায় জনগণ স্বাধীনভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে, সরকারের নীতি ও কর্মকান্ড সম্পর্কে অবগত থাকে এবং নারী-পুরুষ স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশ করতে পারে। এটি স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও আইনের শাসন নিশ্চিত করে।

সুশাসনের ধারণা (Concept of Good Governance)

সাধারণত শাসন হচ্ছে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ও তা বাস্তবায়নের একটি প্রক্রিয়া। শাসনের ধারণা কোন নতুন বিষয় নয় বরং এটা মানব সভ্যতার মতোই পুরাতন। শাসন ব্যবস্থার অর্থ ও মাত্রা সম্পর্কে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন আলোচনা ও বিতর্ক রয়েছে।

সুশাসন শব্দটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেমন: আন্তর্জাতিক শাসন, জাতীয় শাসন, স্থানীয় শাসন, যৌথশাসন ইত্যাদি হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। বর্তমানে সুশাসনকে একটি দেশের উন্নয়নের দিক নির্দেশনা প্রদানকারী হিসেবে দেখা হয়।

শাসন বলতে বুঝায় ক্ষমতাকে কিভাবে প্রয়োগ করা হয়, কিভাবে জনগণের দাবি-দাওয়ার প্রতি সাড়া প্রদান করা হয় কিংবা কিভাবে একটি জনসমষ্টি শাসিত ও পরিচালিত হয়।

সাধারণ অর্থে সুশাসন হলো এমন এক প্রক্রিয়া যা একটি দেশের রাজনৈতিক,অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখে। এই শাসন প্রক্রিয়ায় জনগণের আত্মনির্ভরশীলতা বৃদ্ধি পায়। সরকারের স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতার সঙ্গে নিশ্চিত হয় সামাজিক ন্যায় বিচার ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক বহুত্ববাদ। সুশাসনের মূল ভিত্তি হলো মূল্যবোধ।

সুশাসনের ধারণাটি বহুমাত্রিক।

  • রাজনৈতিক সুশাসন
  • সামাজিক সুশাসন
  • অর্থনৈতিক সুশাসন
  • সাংস্কৃতিক সুশাসন

তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়ন ও শাসন প্রক্রিয়ায় সুশাসন এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা, সরকারের জবাবদিহিতা, নারীর ক্ষমতায়ন, দুর্নীতি দূরীকরণ, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, শিল্পায়ন সব ক্ষেত্রেই সুশাসন জরুরি। তৃতীয় বিশ্বে সুশাসনের সমস্যাকে সব সমস্যার মূল কারণ হিসাবে সনাক্ত করেছে দাতারা। তাদের মতে, এসব রাষ্ট্রে সম্পদের স্বল্পতা রয়েছে। তবে এর থেকেও বড় সমস্যা হলো সম্পদের ব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি। একটি বহুমুখী ধারণা হিসাবে (multi-dimensional) সুশাসনের উদ্ভব হয় মূলত ১৯৮৯ সালে। বিশ্বব্যাংক প্রথম এই ধারণা উপস্থাপন করে। ‘সবুজ বিপ্লব’ আর ‘কাঠামো সমন্বয় কর্মসূচি’র ব্যর্থতার পর বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (IMF) উন্নয়নের শর্ত হিসাবে এ ধারণার অবতারণা করে।

মোটা দাগে সুশাসনের প্রধান ক্ষেত্রসমূহ হল

  • রাজনৈতিক: গণতন্ত্র ও সরকারের স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ
  • অর্থনৈতিক: মুক্তবাজার অর্থনীতি ও বেসরকারিকরণ
  • সামাজিক-সংস্কৃতিক: পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রসার এবং
  • তথ্য ও প্রযুক্তি: বিশ্বজুড়ে তথ্য-প্রযুক্তির প্রসার।

সুশাসনের সংজ্ঞা

সুশাসনের ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো ‘Good Governance’। এখানে Governance শব্দটি গ্রিক ভার্ব kubernaein [kubernáo] থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে।

বিশ্বব্যাংকের মতে, সুশাসন হলো এমন এক প্রক্রিয়া যেখানে রাজনৈতিক কর্তৃত্ব ও প্রাতিষ্ঠানিক সম্পদ সমাজের সমস্যা ও চাহিদা পূরণে ব্যবহৃত হয়। 

  • ম্যাককরনি (MacCorney)-এর মতে, “সুশাসন হলো রাষ্ট্রের সাথে সুশীল সমাজের, সরকারের সাথে শাসিত জনগনের, শাসকের সাথে সাশিতের সম্পর্ক”। (Good governance is the relationship between civil society and the state, between government and tgoverned, the ruler and ruled.)
  • বিশ্বব্যাংকের মতে সুশাসনের সংজ্ঞা হলো, “Governance is the manner in which power is exercised in the management of a country’s economic and social resources for development.”
  • UNDP এর মতে, সুশাসন হলো অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক কর্তৃত্বের বিধিবদ্ধ চর্চা যার মাধ্যমে একটি দেশের উন্নয়ন কার্যাবলি পরিচালনা করা হয়।
  • যে শাসন ব্যবস্থায় আইনের শাসন, দায়িত্বশীলতা, জবাবদিহিতা, ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ এবং জনগণে অংশগ্রহণ গনতান্ত্রিক উপায়ে সুনিশ্চিত হয় তাকেই সুশাসন বলে।

সুশাসন হলো প্রাতিষ্ঠানিক পরিবেশ যার মাধ্যমে নাগরিক নিজের সাথে এবং সরকারি কর্মকর্তা বা এজেন্সির সাথে একত্রে কাজ করতে পারে, যাতে নাগরিকদের আত্ম-মর্যাদা উপলব্ধিতে সমর্থন যোগায় ও আর্থসামাজিক রূপান্তরে সহায়তা করে। রাষ্ট্রীয় শাসন কাঠামোকে জনগণের কল্যাণে কাজে লাগাবার জন্য নব্বই দশকে শাসনব্যবস্থায় একটি নতুন ধারণার অবতারণা হয়েছে। আর এই ধারণাটি হলো নানা ধরনের এজেন্সি ও দাতাসংস্থা প্রদত্ত সুশাসন সম্পর্কিত ধারণা।

সুশাসনের উপাদানসমূহ (Elements of Good Governance)

বিশ্বব্যাংকের মতে সুশাসনের উপাদান

১৯৯৪ সালে বিশ্বব্যাংক এক রিপোর্টে সুশাসনের ৪ টি উপাদানের কথা বলেছে। বিশ্বব্যাংক ১৯৯২ সালে প্রথম সুশানের সংজ্ঞা প্রদান করে ‘Governance and Development’ প্রতিবেদনে। বিশ্বব্যাংক সুশাসনের ধারণা প্রদান করে ১৯৮৯ সালে।

বিশ্বব্যাংকের মতে সুশাসনের ৪ টি উপাদান বা স্তম্ভ হলো- 

  • ১. সরকারি প্রশাসন ব্যবস্থা
  • ২. যথাযথ বা বৈধ উন্নয়ন কাঠামো
  • ৩. দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা
  • ৪. স্বচ্ছতা ও অবাধ তথ্য প্রবাহ
যে শাসন ব্যবস্থায় আইনের শাসন, দায়িত্বশীলতা, জবাবদিহিতা, ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ এবং জনগণে অংশগ্রহণ গনতান্ত্রিক উপায়ে সুনিশ্চিত হয় তাকেই সুশাসন বলে। | Photo: UNDP BANGLADESH)

UNDP-এর মতে সুশাসনের উপাদান

১৯৯৭ সালে ইউএনডিপি (United Nations Development Program – UNDP) সুশাসনের ৯ টি প্রধান বা মূল উপদানের কথা বলেছে। এগুলো হলো-

  • ১. অংশীদারত্ব (Perticipation)
  • ২. আইনের শাসন (Rule of Law)- সমতা ও ন্যায্যতা 
  • ৩. স্বচ্ছতা (Transparency)
  • ৪. সংবেদনশীলতা (Responsiveness)
  • ৫. জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা (Consensus orientation)
  • ৬. সাম্য (Equity)
  • ৭. কার্যকরীতা ও দক্ষতা (Effectiveness and Efficiency)
  • ৮. দায়বদ্ধতা (Accountability )
  • ৯. কৌশলগত লক্ষ্য (Strategic Vision)

IDA-এর মতে সুশাসনের উপাদান

আইডিএ (The International Development Association – IDA) ১৯৯৮ সালে সুশাসনের ৬ টি মূল উপাদানের কথা বলেছে। এগুলো হলো-

  • ১. টেঁকসই কাঠামোগত সংস্কার (sustainability of structural reforms)
  • ২. সম্পত্তি অধিকার এবং আইনের শাসন (property rights and rule-based governance)
  • ৩. গুণগত বাজেট এবং পাবলিক বিনিয়োগ প্রক্রিয়া (quality of budget and public investment process)
  • ৪. রাজস্ব সংগ্রহের দক্ষতা এবং সাম্য (efficiency and equity of revenue mobilization)
  • ৫. সরকারি ব্যয়ের দক্ষতা এবং সমতা (efficiency and equity of public expenditures)
  • ৬. জনসেবার জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতা (accountability and transparency of the public service)

সুশাসনের অত্যাবশ্যকীয় উপাদান

১. স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা

স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা হচ্ছে সুশাসনের প্রধান উপাদান। এটি সরকারের স্বচ্ছতা ও আইনের শাসনের উপর নির্ভর করে। জবাবদিহিতার মাধ্যমেই সুশাসন প্রতিষ্ঠা পায়। শুধু সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতেই নয় বরং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সুশীল সমাজের জবাবদিহিতাও আবশ্যক। দুর্নীতি কমাতে ও রাজনৈতিক উন্নয়নে জবাবদিহিতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অন্যদিকে, আইন ও নীতি মান্য করে যখন কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও তার বাস্তবায়ন করা হয় তখন তাকে স্বচ্ছতা বলে। সিদ্ধান্ত বা পরিকল্পনা প্রণয়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিত হলে সহজেই সঠিক তথ্য পাওয়া যায়। স্বচছতা প্রতিষ্ঠা পেলে সরকারি অর্থ ব্যয়ে দুর্নীতি অনেকাংশে কমে যায়।

২. অংশগ্রহণ

পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে প্রত্যেক নাগরিকের অংশগ্রহণ সুশাসনের অন্যতম একটি উপাদান। সুশাসনের মূল ভিত্তি নারী এবং পুরুষ উভয়রেই অংশগ্রহণ। বিশ্বব্যাংক মনে করে, সকলের অংশগ্রণের মাধ্যমেই কার্যকরী উন্নয়ন সম্ভব। অংশগ্রহণের উদ্দেশ্য হচ্ছে জনগণকে অধিক ক্ষমতাশীল করা। রাজনৈতিক অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ হচ্ছে ভোটদান।

৩. আইনের শাসন

সুশাসনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে আইনের শাসন। এটি একটি রাষ্ট্রের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় ও বৈধ উপকরণ। মানবাধিকার নিশ্চিতকরণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আইনের শাসন। প্রশাসনের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে আইনের শাসন থাকা দরকার। আইনের মাধ্যমেই স্বেচ্ছাচারী ক্ষমতা ও আধিপত্য রোধ করা যায়। আইন হতে হবে অবশ্যই নিরপেক্ষ। রাষ্ট্রের সংবিধান হচ্ছে একটি রাষ্ট্রের আইনের প্রধানতম উৎস।

৪. নিরপেক্ষতা ও দায়িত্বশীলতা

পক্ষপাতহীন অবস্থা বা নিরপেক্ষতাই পারে সুশাসন নিশ্চিত করতে। সুশাসন ততক্ষণ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠা পাবে না যতক্ষণ না পর্যন্ত প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে ভূমিকা পালন করে। নিরপেক্ষতা আসতে হলে মেধার ভিত্তিতে সরকারি চাকুরি দিহে হবে। অন্যদিকে, দায়িত্বশীলতা না থাকলে কখনোই কোন কাজ সুন্দরভাবে সম্পন্ন করা যায় না। সরকারি, বেসরকারি এবং ব্যক্তিগত প্রত্যেকটি কাজের ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল হতে হবে। একমাত্র দায়িত্বশীলতাই পারে সঠিকসময়ে কাজ সম্পন্ন করতে।

৫. জনপ্রশাসনের উৎকর্ষতা ও বিকেন্দ্রীকরণ

সুশাসন আনয়নের জন্য জনপ্রশাসনের উৎকর্ষ সাধন করতে হবে। এই উৎকর্ষ সাধন করার জন্য জনপ্রশাসনকে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও গতানুগতিক ধারা থেকে বের হতে হবে। জনপ্রশাসনের উৎকর্ষতা সাধন বলতে বোঝায় জনপ্রশাসনে দক্ষতা আনয়ন, প্রযুক্তি ব্যবহারকরণ ও কার্যকর কৌশল গ্রহণ করা। সুশাসনের আরেকটি উপাদান হচ্ছে বিকেন্দ্রীকরণ। ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমেই সকল বিভাগ সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে। এটি প্রশাসনের কর্তৃত্ববাদী প্রবণতা কমিয়ে দেয় এবং প্রশাসনকে জনগণের দোড় গোড়ায় পৌঁছে দেয়। তাই একটি রাষ্ট্রের সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সরকারের প্রতিটি বিভাগে বিকেন্দ্রীকরণ অপরিহার্য।

সুশাসন সম্পর্কে ইউনেস্কো কী বলেছে?

ইউনেস্কো (United Nations Education, Science and Cultural Organisation – UNESCO) সুশাসনের উপাদনের কথা বলতে গিয়ে বিশ্বব্যাংকের উপাদানগুলোর পাশাপাশি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর অংশগ্রহণের কথা বলেছে।

কোন সংস্থার মতে সুশাসনের উপাদান কয়টি?

সংস্থার নামউপাদানগৃহীত সাল
বিশ্বব্যাংক (World Bank)১৯৯৪
এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক (Asian Development Bank)১৯৯৫
জাতিসংঘ (United Nations)
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (UNDP)১৯৯৭
আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সমিতি (IDA)১৯৯৮
আফ্রিকান উন্নয়ন ব্যাংক (AfDB)১৯৯৯

সারসংক্ষেপ

সাধারণভাবে সুশাসন বলতে এমন এক আদর্শ শাসন ব্যবস্থাকে বুঝায় যা একটি দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন ঘটায়। অন্যভাবে, সুশাসন বলতে এমন এক ধরনের শাসন ব্যবস্থাকে বোঝায় যা জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা, প্রশাসনিক দক্ষতা, আইনের অনুশাসন, মানবাধিকার ইত্যাদি বিষয়কে গুরুত্ব দেয়। সুশাসন আইনের শাসনেরই আরেক নাম। সুশাসন হলো যৌক্তিক এবং দক্ষভাবে শাসন পরিচালনা। সুশাসন অবশ্যই আইনের শাসনের ওপর প্রতিষ্ঠিত। এটি রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক জবাবদিহিতার নিশ্চিত করে। জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা, আইনের শাসন, মানবাধিকার, প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ, সরকারের দক্ষতা ও সাড়া প্রদানের ক্ষমতার উপর নির্ভর করে সুশাসন প্রক্রিয়া।