০৯:২৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
                       

সেন্ট হেলেনা দ্বীপ

জারিন তাসনিম
  • প্রকাশ: ০৬:৫৭:১৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জানুয়ারি ২০২২
  • / ২২০০ বার পড়া হয়েছে

উপকূল থেকে অনেক দূরবর্তী হওয়ায় সেন্ট হেলেনা দ্বীপ ব্যবহৃত হতো প্রধান প্রধান বন্দীদের নির্বাসন দ্বীপ হিসেবে।


Google News
বিশ্লেষণ-এর সর্বশেষ নিবন্ধ পড়তে গুগল নিউজে যোগ দিন

বিশেষ শর্তসাপেক্ষে এবং স্বল্পমূল্যে এই ওয়েবসাইটটি সামাজিক কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ কিংবা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নিকট বিক্রি করা হবে।

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলের অন্যতম বড়ো শহর ও পূর্বের রাজধানী রিও ডি জেনেইরো থেকে চার হাজার কিলোমিটার পূর্বে, দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরে অবস্থিত আগ্নেয়গিরি থেকে উৎপন্ন সেন্ট হয় হেলেনা দ্বীপ (Saint Helena Island)। এটি ১৫°৫৫’ দক্ষিণ অক্ষাংশ এবং ৫°৪২’ পশ্চিম দ্রাঘিমাংশের মধ্য আটলান্টিক সাগর দক্ষিণ এবং অ্যাঙ্গোলার উপকূল থেকে প্রায় ১৯০০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থান করছে। বর্তমানে সেন্ট হেলেনা দ্বীপ যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ক্যারোলাইনা রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত।

সেন্ট হেলেনা আবিষ্কৃত হয় ১৫০২ খ্রিষ্টাব্দে। আবিষ্কারের সময় এখানে কোনো লোকজন ছিল না। কন্সন্টাটিনোপলের সেন্ট হেলেনা ‘সেন্ট হেলেনা আইল্যান্ড’ নামে নামকরণ করা হয়েছে। 

সেন্ট হেলেনা দ্বীপ আবিষ্কার করে পর্তুগীজরা। দ্বীপটি আবিষ্কৃত হবার পর থেকেই এটি হয়ে ওঠে ইতিহাসের নানা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের সাক্ষী।

সুয়েজ খাল খনন এবং বাষ্প ইঞ্জিন আবিষ্কারের পূর্ব পর্যন্ত এই উষ্ণপ্রধান দ্বীপটি ছিল নৌ বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত সুবিধাজনক।

প্রথমদিকে ওলন্দাজরা (ডাচ) সেন্ট হেলেনা দ্বীপ শাসন করছিল, তবে অল্প সময়ের ব্যবধানে এই দ্বীপের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছে। ঘটনাচক্রে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির থেকে এই সেন্ট হেলেনা দ্বীপের শাসন ক্ষমতা সরাসরি ব্রিটিশ রাজপরিবারের কাছে চলে যায়।

সেন্ট হেলেনা দ্বীপ পৃথিবীর সব চেয়ে প্রাচীন দ্বীপ ছিল এবং অনেক শতাব্দী ধরে এটি ইউরোপ থেকে এশিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকার নৌকার জন্য কৌশলগত গুরত্বপূর্ণ ছিল।

উপকূল থেকে অনেক দূরবর্তী হওয়ায় সেন্ট হেলেনা দ্বীপ ব্যবহৃত হতো প্রধান প্রধান বন্দীদের নির্বাসন দ্বীপ হিসেবে। ব্রিটিশরাই দ্বীপটিকে নির্বাসন দ্বীপ হিসেবে ব্যবহার করত।

ফরাসি বিপ্লবের শিশু হিসেবে খ্যাত, বিশ্বের সর্বকালের সেরা সেনাপতিদের একজন, ইতিহাস বিখ্যাত নেপোলিয়ন বোনাপার্টকে সেন্ট হেলেনা দ্বীপে নির্বাসন দেওয়া হয়। ১৮১৫ সালে ওয়াটারলুর যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর নেপোলিয়নকে এই দ্বীপে নির্বাসন দেওয়া হয়। ১৮২১ সালে সেন্ট হেলেনা দ্বীপেই মৃত্যুবরণ করেন নেপোলিয়ন। এই দ্বীপে অন্তরীণ থাকাকালে তিনি বই পড়া, বাগান করা আর নিজের স্মৃতি রোমন্থন করে সময় কাটাতেন। মৃত্যুর সময় তার বয়স ছিল ৫১ বছর ছিল।

শেয়ার করুন

মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার তথ্য সংরক্ষিত রাখুন

লেখকতথ্য

জারিন তাসনিম

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং স্বাধীন লেখক।

বিশেষ শর্তসাপেক্ষে এই ওয়েবসাইটটি সামাজিক কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ কিংবা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নিকট বিক্রি করা হবে।

সেন্ট হেলেনা দ্বীপ

প্রকাশ: ০৬:৫৭:১৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জানুয়ারি ২০২২

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলের অন্যতম বড়ো শহর ও পূর্বের রাজধানী রিও ডি জেনেইরো থেকে চার হাজার কিলোমিটার পূর্বে, দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরে অবস্থিত আগ্নেয়গিরি থেকে উৎপন্ন সেন্ট হয় হেলেনা দ্বীপ (Saint Helena Island)। এটি ১৫°৫৫’ দক্ষিণ অক্ষাংশ এবং ৫°৪২’ পশ্চিম দ্রাঘিমাংশের মধ্য আটলান্টিক সাগর দক্ষিণ এবং অ্যাঙ্গোলার উপকূল থেকে প্রায় ১৯০০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থান করছে। বর্তমানে সেন্ট হেলেনা দ্বীপ যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ক্যারোলাইনা রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত।

সেন্ট হেলেনা আবিষ্কৃত হয় ১৫০২ খ্রিষ্টাব্দে। আবিষ্কারের সময় এখানে কোনো লোকজন ছিল না। কন্সন্টাটিনোপলের সেন্ট হেলেনা ‘সেন্ট হেলেনা আইল্যান্ড’ নামে নামকরণ করা হয়েছে। 

সেন্ট হেলেনা দ্বীপ আবিষ্কার করে পর্তুগীজরা। দ্বীপটি আবিষ্কৃত হবার পর থেকেই এটি হয়ে ওঠে ইতিহাসের নানা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের সাক্ষী।

সুয়েজ খাল খনন এবং বাষ্প ইঞ্জিন আবিষ্কারের পূর্ব পর্যন্ত এই উষ্ণপ্রধান দ্বীপটি ছিল নৌ বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত সুবিধাজনক।

প্রথমদিকে ওলন্দাজরা (ডাচ) সেন্ট হেলেনা দ্বীপ শাসন করছিল, তবে অল্প সময়ের ব্যবধানে এই দ্বীপের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছে। ঘটনাচক্রে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির থেকে এই সেন্ট হেলেনা দ্বীপের শাসন ক্ষমতা সরাসরি ব্রিটিশ রাজপরিবারের কাছে চলে যায়।

সেন্ট হেলেনা দ্বীপ পৃথিবীর সব চেয়ে প্রাচীন দ্বীপ ছিল এবং অনেক শতাব্দী ধরে এটি ইউরোপ থেকে এশিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকার নৌকার জন্য কৌশলগত গুরত্বপূর্ণ ছিল।

উপকূল থেকে অনেক দূরবর্তী হওয়ায় সেন্ট হেলেনা দ্বীপ ব্যবহৃত হতো প্রধান প্রধান বন্দীদের নির্বাসন দ্বীপ হিসেবে। ব্রিটিশরাই দ্বীপটিকে নির্বাসন দ্বীপ হিসেবে ব্যবহার করত।

ফরাসি বিপ্লবের শিশু হিসেবে খ্যাত, বিশ্বের সর্বকালের সেরা সেনাপতিদের একজন, ইতিহাস বিখ্যাত নেপোলিয়ন বোনাপার্টকে সেন্ট হেলেনা দ্বীপে নির্বাসন দেওয়া হয়। ১৮১৫ সালে ওয়াটারলুর যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর নেপোলিয়নকে এই দ্বীপে নির্বাসন দেওয়া হয়। ১৮২১ সালে সেন্ট হেলেনা দ্বীপেই মৃত্যুবরণ করেন নেপোলিয়ন। এই দ্বীপে অন্তরীণ থাকাকালে তিনি বই পড়া, বাগান করা আর নিজের স্মৃতি রোমন্থন করে সময় কাটাতেন। মৃত্যুর সময় তার বয়স ছিল ৫১ বছর ছিল।