ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা
- প্রকাশ: ০৪:৫১:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২
- / ৭৬১৮ বার পড়া হয়েছে
ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাকে প্রতিনিধিত্ব করা এই শিল্পকর্মটির শিল্পির নাম খুঁজে পাওয়া যায়নি। শিল্পির নাম পাওয়া মাত্রই উল্লেখ করে দেওয়া হবে।
ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে লেখা এই নিবন্ধটি পড়লে ভারতের পুরো শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে না। তবে ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পাবেন যা থেকে বিভিন্ন পরীক্ষায় ন্যূনতম নম্বর পাওয়ার ক্ষেত্রে উপকৃত হতে পারেন। ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পেতে চাইলে নিবন্ধটি এড়িয়ে যেতে অনুরোধ করা হলো।
ভারতের জাতীয় শিক্ষা সংস্কারের পটভূমি
১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্তরের শিক্ষা সংস্কারের মুধালিয়র শিক্ষা কমিশন (১৫৫৩) মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা সংস্কারের জন্য গঠিত হয়। ভারতের উচ্চ শিক্ষার সামগ্রিক মান উন্নয়নের জন্য রাধা কৃষ্ণনান শিক্ষা কমিশন এবং সকল স্তরের শিক্ষার সংস্কারের জন্য প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ ডি. এস. কোঠারীর নেতৃত্বে ১৯৬৪ – ১৯৬৬ সালে শিক্ষা কমিশন গঠন করা হয়।
জাতীয় শিক্ষার উন্নয়ন এবং ভারতের স্বাধীনতা লাভের প্রায় ৪৭ বছর পর ১৯৮৬ সালে ভারত সরকার ‘জাতীয় শিক্ষানীতি ৮৬’ নামে একটি শিক্ষানীতি প্রণয়ন করে। ভারতের সামগ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীতকরণের লক্ষ্যে গত দুই/তিন দশক যাবৎ কেন্দ্রীয় সরকার পূর্বের তুলনায় অধিক পরিমাণ সময় ও আর্থিক ব্যয় করে যাচ্ছে।
শিক্ষাক্ষেত্রে ভারতের ইউনিয়ন সরকারের দায়িত্ব
ভারতের ইউনিয়নের মানব সম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রণালয় দেশের সামগ্রিক শিক্ষার মান উন্নয়নে বিশেষ করে বিজ্ঞান ও গবেষণার ক্ষেত্রে যে সব প্রধান বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে যাচ্ছে সেগুলো হলো:
- বিভিন্ন কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা কমিটি/বোর্ড গঠনের মাধ্যমে সারা দেশের বিভিন্ন প্রকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মধ্যে সমন্বয় সাধন করা।
- কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক সংরক্ষিত এলাকার শিক্ষা নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনার দায়িত্ব ইউনিয়ন সরকারের।
- কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ সংসদের অনুমোদন ও নির্দেশ অনুসারে ভারতের অপরাপর জাতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনা করা।
- ভারতের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিতকরণ, আর্থিক অনুদান এবং তদারকীকরণ- এসব কাজ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের মাধ্যমে পরিচালনা করা।
- দেশে ও বিদেশে উচ্চ শিক্ষার জন্য বৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থাকরণ।
- উপদেষ্টা পরিষদসমূহের পরামর্শ মোতাবেক জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে Action Plan প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের উপায় উদ্ভাবন এবং তা ব্যবহারে সংশ্লিষ্ট সকলকে উদ্বুদ্ধ করা।
- জাতীয় শিক্ষা সংস্কার ও উন্নয়নের পরামর্শ প্রদানের জন্য বিভিন্ন কমিটি/বোর্ড/উপদেষ্টা পর্ষদ ইত্যাদি নিয়োগ এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করা।
- প্রাথমিক, মাধ্যমিক, কারিগরি, নানা প্রকার গবেষণা ও প্রশিক্ষণ এসব ইউনিয়ন সরকারের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হবে।
- ইউনিয়ন সরকার কর্তৃক প্রণীত শিক্ষা সম্বন্ধীয় ঘোষণা, আদেশ, আইন ইত্যাদি বাস্তবায়নে রাজ্য সরকারকে সহায়তা করা।
শিক্ষাক্ষেত্রে ভারতের রাজ্য সরকারের ভূমিকা
সংবিধান অনুসারে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার দায়িত্ব রাজ্য সরকার পালন করে থাকে। সমগ্র রাজ্যের শিক্ষা প্রশাসন, নিয়ন্ত্রণ এবং পরিচালনার দায়িত্ব রাজ্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপর ন্যস্ত। রাজ্য আইন পরিষদের নির্বাচিত সদস্য হতে মুখ্যমন্ত্রী তার সরকারের শিক্ষামন্ত্রী নিয়োগ করে। কোন কোন রাজ্যে একজন ডেপুটি মন্ত্রী রাজ্য শিক্ষামন্ত্রীর কাজে সহায়তা করেন। শিক্ষামন্ত্রী তাঁর কাজের জন্য আইন পরিষদের নিকট দায়ী থাকেন।
রাজ্য সরকার ইউনিয়ন সরকার কর্তৃক প্রণীত রীতিনীতি, আইন, আদেশ, ঘোষণা ইত্যাদি যথাযথ বাস্তবায়নে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে থাকে। তবে এর প্রধান কাজগুলো হলো:
- উচ্চ শিক্ষা পরিচালনায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সঙ্গে সহযোগিতা করা।
- প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে স্থানীয় শিক্ষা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যৌথভাবে দায়িত্ব পালন করা।
- মাধ্যমিক শিক্ষার বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করা।
এসব দায়িত্ব পালন ছাড়াও রাজ্য শিক্ষামন্ত্রী আরও কিছু দায়িত্ব পালন করে থাকেন। যেমন— রাজ্য সরকারের প্রণীত শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন কাজ তদারক করা ও সমগ্র রাজ্যের শিক্ষার সমন্বয় সাধন করা, রাজ্যের সকল শিক্ষার উন্নয়ন ও সংস্কার কার্যের নেতৃত্ব প্রদান, রাজ্যের শিক্ষা আইন ও নীতি বাস্তবায়ন কতদূর কার্যকরী হয়েছে তা মূল্যায়ন করা, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে অর্থ সাহায্য প্রদান, পাঠ্যপুস্তক অনুমোদন ও স্থানীয় শিক্ষা কর্তৃপক্ষকে সাহায্য করা ইত্যাদি।
শিক্ষায় স্থানীয় সরকারের ভূমিকা
শিক্ষা ব্যবস্থার সুষ্ঠু পরিচালনার ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি স্থানীয় কর্তৃপক্ষ যথেষ্ট সহযোগিতা দান করেন। মিউনিসিপালিটি ও জেলা বোর্ডগুলো প্রথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার পরিচালনার ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করে থাকে।
(বি. দ্র.: শিক্ষানীতি ২০২০-এর আলোকে ভারতী শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্ষা ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে নতুন নিবন্ধন আহ্বান করা যাচ্ছে। ভারত থেকে লেখা পাঠালে তা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে প্রকাশ করা হবে। লেখা পাঠাতে এখানে ক্লিক করুন।)