০৮:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
দর্শন কাকে বলে বা দর্শনের সংজ্ঞা কী?
- প্রকাশ: ১০:৪৮:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২
- / ৫০৫৪০ বার পড়া হয়েছে
দর্শনের সুস্পষ্ট কোনো সংজ্ঞা এক কথায় অল্প কথায় প্রদান করা সম্ভব নয়। তবে ইতিহাস সাক্ষী, যুগে যুগে ব্যক্তি বিভিন্নভাবে দর্শনের সংজ্ঞা দিয়েছেন বা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। ইতিহাসখ্যাত দার্শনিকগণ যে সকল সংজ্ঞা প্রদান করেছেন তা পর্যালােচনা করলে যে সারসংক্ষেপ পাওয়া যায় তাতে দেখা যায় যে, প্রত্যেক দার্শনিকই জগৎ জীবনের ব্যাখ্যা, জগতের সঙ্গে জীবনের সম্পর্ক, স্রষ্টার সংগে সৃষ্টির সম্পর্ক ইত্যাদির ওপর গুরুত্বারােপ করেছেন।
দর্শনের কয়েকটি প্রামাণ্য সংজ্ঞা
কয়েকজন বিখ্যাত দার্শনিক কর্তৃক প্রদত্ত দর্শনের সংজ্ঞা এখানে উল্লেখ করা হলো—
- গ্রিক দার্শনিক প্লেটোর মতে, “চিরন্তন এবং বস্তুর মূল প্রকৃতির জ্ঞান অর্জন করাই দর্শনের লক্ষ্য”।
- অ্যারিস্টটলের মতে, “আদি সত্ত্বার স্বরূপ এবং এ স্বরূপের অঙ্গীভূত যে সব বৈশিষ্ট্য তার অনুসন্ধান করে যে বিজ্ঞান তাই হলাে দর্শন”।
- হার্বার্ট স্পেন্সার বলেন, “বিশৃঙ্খল জ্ঞান নিম্নমানের জ্ঞান। বিজ্ঞান হলাে আংশিক একীভূত জ্ঞান। বিভিন্ন বিজ্ঞানের সাধারণ সত্যগুলােকে অন্তর্নিবিষ্ট ও দৃঢ়ীকৃত করার ফলে যে সম্পূর্ণ ঐক্য বা জ্ঞান তাই হলো দর্শন”।
- কানিংহাম বলেন, “মানুষ দার্শনিক হবে কি না, তা কোনাে প্রশ্ন নয়; প্রশ্ন হলাে ভালাে এবং মন্দ এই দুই দর্শনের মধ্যে একটিকে নির্বাচন করা”।
- শেলিং-এর মতে, “জগৎ ঠিক কি হলে মন একে বুঝতে পারবে এবং মন ঠিক কি হলে জগৎ একে বুঝতে পারবে এটি নির্দিষ্ট করার চেষ্টাই দর্শন”।
- আর. জে. হার্স্ট-এর মতে, “জগৎ ও মানব প্রকৃতি সম্পর্কে যেসব নির্দিষ্ট মৌলিক সমস্যা আছে তার যৌক্তিক উত্তর অনুসন্ধানই হচ্ছে দর্শন”।
উপর্যুক্ত সংজ্ঞাগুলোকে পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, জীবন ও জগৎকে ঘিরে উদ্ভূত মৌলিক সমস্যাবলির যৌক্তিক অনুসন্ধান এবং চলার পথে তার যৌক্তিক প্রতিফলন ঘটানোকে দর্শন বলে।।
দর্শন ভালো মন্দ নিয়ে বিচার বিশ্লেষণ করে
জগতের কোন নিয়মটা করলে আপনার মঙ্গল হবে এবং ভ্যবিষৎ সুন্দর হবে তা নিয়ে দর্শন আলোচনা করে।
জীবন ও জগৎকে নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে নিখুঁত ভাবে দেখা হলো দর্শন। যিনি এ কাজটি করতে পারেন, তিনি দার্শনিক। আপনি যতই জ্ঞান অর্জন করুন না কেন, নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে নিখুঁত ভাবে দেখতে না পারলে সে জ্ঞান জগতের কল্যাণের পরিবর্তে অকল্যাণ বয়ে আনতে পারে। তাই সকল মানুষের দার্শনিক হওয়া দরকার। দার্শনিক হতে না পারলে মানব জন্ম বৃথা।
জগৎ ও মানব প্রকৃতি সম্পর্কে যেসব নির্দিষ্ট মৌলিক সমস্যা আছে তার যৌক্তিক উত্তর অনুসন্ধানই হচ্ছে দর্শন”। জীবন ও জগৎকে ঘিরে উদ্ভূত মৌলিক সমস্যাবলির যৌক্তিক অনুসন্ধান এবং চলার পথে তার যৌক্তিক প্রতিফলন টানোকে দর্শন বলে।
দর্শন কী এবং দর্শনের উৎপত্তি কীভাবে