০৯:২১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
                       

রাশিয়ার পারমাণবিক মহড়া ও শংকটাপূর্ণ যুদ্ধাবস্থা— পরিস্থিতির দায় কার?

দেলোয়ার জাহিদ
  • প্রকাশ: ১০:৪৬:১১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ অক্টোবর ২০২২
  • / ৩৯০৯ বার পড়া হয়েছে

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব কী হতে পারে?


Google News
বিশ্লেষণ-এর সর্বশেষ নিবন্ধ পড়তে গুগল নিউজে যোগ দিন

বিশেষ শর্তসাপেক্ষে এবং স্বল্পমূল্যে এই ওয়েবসাইটটি সামাজিক কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ কিংবা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নিকট বিক্রি করা হবে।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিয়েছিলেন। চলতি মাসেই পারমাণবিক অস্ত্রের বড়ো ধরনের মহড়া চালাতে যাচ্ছে রাশিয়া। এর ফলে রাশিয়ার মহড়া ও পারমাণবিক অস্ত্রের বাস্তব পরিস্থিতি যাচাই করাটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের জন্য চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। ক্রাইমিয়ার সঙ্গে রাশিয়ার সংযোগকারী সেতুতে বিস্ফোরণের ঘটনার পর ইউক্রেন জুড়ে বড় ধরনের হামলা শুরু করেছে রাশিয়া। কিয়েভসহ বড় শহরে গত দুইদিনে প্রায় একশত ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত করেছে। ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো গুলো লক্ষ্য করে বেশি ভাগ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। ফলে অনেক এলাকা বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে। পানি সরবরাহ ও ঘর গরম রাখার ব্যবস্থা অচল হয়ে যায় (বিবিসি)। 

ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে অবশ্যই আলোচনার টেবিলে ফিরতে হবে। ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রো বুধবার এ কথা বলেন। তিনি সম্প্রচারকেন্দ্র ফ্রান্স টুকে আরো বলেন, সবার আগে পুতিনকে অবশ্যই যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখন্ডতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। এরপর আলোচনার টেবিলে ফিরে আসতে হবে। তিনি বিশ্বযুদ্ধ এড়াতে চান বলেও উল্লেখ করেন।

(বাসস, অক্টোবর ১৩, ২০২২)

যুদ্ধের জন্য অনুশোচনা নেই পুতিনের

ইউক্রেন যুদ্ধে এ পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির সঠিক হিসাব পাওয়া যায়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, ইউক্রেনের স্বাস্থ্য অবকাঠামো লক্ষ্য করে ছয় শর বেশি হামলা চালানো হয়েছে। তবে এরপরও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, এই হামলা নিয়ে তাঁর কোনো অনুশোচনা নেই।

শুক্রবার কাজাখস্তানে এক সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়ে পুতিন বলেন, ‘আমার কোনো অনুশোচনা নেই। আমি এটা পরিষ্কার বলতে চাই, সেখানে এখন যা ঘটছে, তা অপ্রীতিকর।’ ইউক্রেনে যে অভিযান চালানো হয়েছে তা সঠিক ও সময়মতো চালানো হয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। (প্রথমআলো, ১৪ অক্টোবর ২০২২)

পারমাণবিক মহড়া নিয়ে শংকা সৃষ্টি হয়েছে যদিও বছরের এই সময়ে সাধারণত  বড়ো  ধরণের মহড়া চালিয়ে থাকে রাশিয়া।  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা কর্মকর্তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। রয়টার্স জানিয়েছে, এবারের মহড়ায় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণও অন্তর্ভুক্ত থাকবে বলে ধারণা করছেন পশ্চিমা কর্মকর্তারা। ন্যাটোর মহাসচিব জেন্স স্টোলটেনবার্গ ব্রাসেলসে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ন্যাটো জোট রাশিয়ার বার্ষিক পারমাণবিক মহড়াগুলো খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করবে, যেমনটি কয়েক দশক ধরে করে আসছে।

ইউক্রেন যুদ্ধে কি কৌশল নিচ্ছে রাশিয়া এ বিষয়ে বিবিসিকে বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেন জুড়ে এভাবে ব্যাপক হামলার ঘটনা গত কয়েক মাসে দেখা যায়নি। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে যখন রাশিয়া প্রথম ইউক্রেনে হামলা শুরু করে, তখন এরকম কিয়েভের আশেপাশের এলাকায় হামলা চালিয়েছিল রাশিয়া। কিন্তু পরবর্তীতে কিয়েভ থেকে রাশিয়া সেনা প্রত্যাহারে বাধ্য হওয়ার পর মূলত পূর্বাঞ্চলীয় এলাকাগুলো দখলে রাখতে রাশিয়া মনোনিবেশ করেছিল। কিন্তু ক্রিমিয়া রাশিয়ার সঙ্গে সংযোগকারী সেতুতে বিস্ফোরণের ঘটনার পর রাশিয়া আবার হামলা শুরু করেছে। ক্ষেপণাস্ত্র বা বিমানহামলা চালালে রাশিয়া গত বছরের মতো আর ইউক্রেনে বড় ধরনের হামলা শুরু করবে বলে মনে করেন না ইস্তাম্বুল-ভিত্তিক সমর বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মুরাত আসলান।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, চলমান যুদ্ধে ইউক্রেনে আর বড়ো ধরনের কোনো হামলা চালানোর প্রয়োজন নেই। তাই এখন থেকে ইউক্রেনে আর বড়ো কোনো হামলা চালাবে না রাশিয়া। ইউক্রেনজুড়ে ধারাবাহিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কয়েক দিন পর পুতিন এমন মন্তব্য করেন। খবর বিবিসির।

তবে ইউক্রেনে হামলার বিষয়ে অনুতপ্ত নন পুতিন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমার কোনো অনুশোচনা নেই। আমি এটা পরিষ্কার বলতে চাই, সেখানে এখন যা ঘটছে, তা অপ্রীতিকর।’ ইউক্রেনে যে অভিযান চালানো হয়েছে, তা সঠিক ও সময়মতো চালানো হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। (সূত্র:প্রথম আলো)

সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ নিয়ে সমকালে (০২ অক্টোবর ২২) ড. দেলোয়ারের “শান্তিময় বিশ্ব গঠনে বাংলাদেশের তাগিদ” নিবন্ধে  জাতিসংঘের ৭৭তম সাধারণ অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবার ১৯তম বারের মতো যে ভাষণ দিয়েছেন এর একটি পর্যালোচনা লিখিছেন… পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বেগ প্রসঙ্গে লেখক বলেন, প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে যুদ্ধের বিপরীতে শান্তিময় বিশ্বের ওপর জোর দিয়েছেন। বিশ্বের কাছে তিনি দ্ব্যর্থকণ্ঠে বলেছেন, শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা ছাড়া আর্থসামাজিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। যুদ্ধ বা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞার মতো বৈরী পন্থা কখনও কোনো জাতির মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না। যুদ্ধের ভয়াবহতা, হত্যা-ক্যু-সংঘাতে মানুষের যে দুঃখ-কষ্ট-দুর্দশা হয় তা অবর্ণনীয়। আগামী প্রজন্মের জন্য শান্তিময় বিশ্বের তাগিদ এবং যুদ্ধ ও অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধের যে আকুতি তাঁর কণ্ঠে ঝরেছে তা বিশ্ব সম্প্রদায় অনুধাবন করবে বলে আমাদের প্রত্যাশা। বলা চলে, তিনি সরাসরি পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করেছেন। নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে একটি দেশকে শাস্তি দিতে গিয়ে যে নারী ও শিশুরাও সংকটে পড়ছে সেটিও তিনি উল্লেখ করতে ভোলেননি। প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব বিবেকের কাছে অস্ত্র প্রতিযোগিতা, যুদ্ধ ও নিষেধাজ্ঞা বন্ধেরআহ্বান জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে যুদ্ধের বিপরীতে শান্তিময় বিশ্বের ওপর জোর দিয়েছেন। বিশ্বের কাছে তিনি দ্ব্যর্থকণ্ঠে বলেছেন, শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা ছাড়া আর্থসামাজিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। যুদ্ধ বা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞার মতো বৈরী পন্থা কখনও কোনো জাতির মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না। যুদ্ধের ভয়াবহতা, হত্যা-ক্যু-সংঘাতে মানুষের যে দুঃখ-কষ্ট-দুর্দশা হয় তা অবর্ণনীয়। আগামী প্রজন্মের জন্য শান্তিময় বিশ্বের তাগিদ এবং যুদ্ধ ও অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধের যে আকুতি তাঁর কণ্ঠে ঝরেছে তা বিশ্ব সম্প্রদায় অনুধাবন করবে বলে আমাদের প্রত্যাশা। বলা চলে,  তিনি সরাসরি পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করেছেন। নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে একটি দেশকে শাস্তি দিতে গিয়ে যে নারী ও শিশুরাও সংকটে পড়ছে সেটিও তিনি উল্লেখ করতে ভোলেননি। প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব বিবেকের কাছে অস্ত্র প্রতিযোগিতা, যুদ্ধ ও নিষেধাজ্ঞা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।

বিশ্ব শান্তির জন্য যে  রোডম্যাপের প্রয়োজন এর একটি রূপরেখা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে ফুটে উঠেছে।  রুশ পারমাণবিক মহড়ায় বর্তমানে  যে সংকট ও সংশয় সৃষ্টি হয়েছে, বৈশ্বিক এ সংকটে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করতে পারেন না। বলার অপেক্ষা রাখে না বৈশ্বিক এ সংকটে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বের যুদ্ধে উস্কানি ও মদদ দেয়ার পরিবর্তে  এখনই  সংকট ও বিরোধ নিষ্পত্তিতে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনা শুরু করা দরকার। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে দরকার আন্তর্জাতিকভাবে মতানৈক্যের, কারণ রুশ পারমাণবিক অস্র ব্যবহারের পরিস্থিতির দায় কেউই  এড়াতে পারবে না।

শেয়ার করুন

One thought on “রাশিয়ার পারমাণবিক মহড়া ও শংকটাপূর্ণ যুদ্ধাবস্থা— পরিস্থিতির দায় কার?

মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার তথ্য সংরক্ষিত রাখুন

লেখকতথ্য

দেলোয়ার জাহিদ

সিনিয়র রিসার্চ ফ্যাকাল্টি মেম্বার, প্রাবন্ধিক ও রেড ডিয়ার (আলবার্টা, কানাডা) নিবাসী

বিশেষ শর্তসাপেক্ষে এই ওয়েবসাইটটি সামাজিক কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ কিংবা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নিকট বিক্রি করা হবে।

রাশিয়ার পারমাণবিক মহড়া ও শংকটাপূর্ণ যুদ্ধাবস্থা— পরিস্থিতির দায় কার?

প্রকাশ: ১০:৪৬:১১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ অক্টোবর ২০২২

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিয়েছিলেন। চলতি মাসেই পারমাণবিক অস্ত্রের বড়ো ধরনের মহড়া চালাতে যাচ্ছে রাশিয়া। এর ফলে রাশিয়ার মহড়া ও পারমাণবিক অস্ত্রের বাস্তব পরিস্থিতি যাচাই করাটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের জন্য চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। ক্রাইমিয়ার সঙ্গে রাশিয়ার সংযোগকারী সেতুতে বিস্ফোরণের ঘটনার পর ইউক্রেন জুড়ে বড় ধরনের হামলা শুরু করেছে রাশিয়া। কিয়েভসহ বড় শহরে গত দুইদিনে প্রায় একশত ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত করেছে। ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো গুলো লক্ষ্য করে বেশি ভাগ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। ফলে অনেক এলাকা বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে। পানি সরবরাহ ও ঘর গরম রাখার ব্যবস্থা অচল হয়ে যায় (বিবিসি)। 

ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে অবশ্যই আলোচনার টেবিলে ফিরতে হবে। ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রো বুধবার এ কথা বলেন। তিনি সম্প্রচারকেন্দ্র ফ্রান্স টুকে আরো বলেন, সবার আগে পুতিনকে অবশ্যই যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখন্ডতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। এরপর আলোচনার টেবিলে ফিরে আসতে হবে। তিনি বিশ্বযুদ্ধ এড়াতে চান বলেও উল্লেখ করেন।

(বাসস, অক্টোবর ১৩, ২০২২)

যুদ্ধের জন্য অনুশোচনা নেই পুতিনের

ইউক্রেন যুদ্ধে এ পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির সঠিক হিসাব পাওয়া যায়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, ইউক্রেনের স্বাস্থ্য অবকাঠামো লক্ষ্য করে ছয় শর বেশি হামলা চালানো হয়েছে। তবে এরপরও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, এই হামলা নিয়ে তাঁর কোনো অনুশোচনা নেই।

শুক্রবার কাজাখস্তানে এক সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়ে পুতিন বলেন, ‘আমার কোনো অনুশোচনা নেই। আমি এটা পরিষ্কার বলতে চাই, সেখানে এখন যা ঘটছে, তা অপ্রীতিকর।’ ইউক্রেনে যে অভিযান চালানো হয়েছে তা সঠিক ও সময়মতো চালানো হয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। (প্রথমআলো, ১৪ অক্টোবর ২০২২)

পারমাণবিক মহড়া নিয়ে শংকা সৃষ্টি হয়েছে যদিও বছরের এই সময়ে সাধারণত  বড়ো  ধরণের মহড়া চালিয়ে থাকে রাশিয়া।  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা কর্মকর্তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। রয়টার্স জানিয়েছে, এবারের মহড়ায় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণও অন্তর্ভুক্ত থাকবে বলে ধারণা করছেন পশ্চিমা কর্মকর্তারা। ন্যাটোর মহাসচিব জেন্স স্টোলটেনবার্গ ব্রাসেলসে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ন্যাটো জোট রাশিয়ার বার্ষিক পারমাণবিক মহড়াগুলো খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করবে, যেমনটি কয়েক দশক ধরে করে আসছে।

ইউক্রেন যুদ্ধে কি কৌশল নিচ্ছে রাশিয়া এ বিষয়ে বিবিসিকে বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেন জুড়ে এভাবে ব্যাপক হামলার ঘটনা গত কয়েক মাসে দেখা যায়নি। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে যখন রাশিয়া প্রথম ইউক্রেনে হামলা শুরু করে, তখন এরকম কিয়েভের আশেপাশের এলাকায় হামলা চালিয়েছিল রাশিয়া। কিন্তু পরবর্তীতে কিয়েভ থেকে রাশিয়া সেনা প্রত্যাহারে বাধ্য হওয়ার পর মূলত পূর্বাঞ্চলীয় এলাকাগুলো দখলে রাখতে রাশিয়া মনোনিবেশ করেছিল। কিন্তু ক্রিমিয়া রাশিয়ার সঙ্গে সংযোগকারী সেতুতে বিস্ফোরণের ঘটনার পর রাশিয়া আবার হামলা শুরু করেছে। ক্ষেপণাস্ত্র বা বিমানহামলা চালালে রাশিয়া গত বছরের মতো আর ইউক্রেনে বড় ধরনের হামলা শুরু করবে বলে মনে করেন না ইস্তাম্বুল-ভিত্তিক সমর বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মুরাত আসলান।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, চলমান যুদ্ধে ইউক্রেনে আর বড়ো ধরনের কোনো হামলা চালানোর প্রয়োজন নেই। তাই এখন থেকে ইউক্রেনে আর বড়ো কোনো হামলা চালাবে না রাশিয়া। ইউক্রেনজুড়ে ধারাবাহিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কয়েক দিন পর পুতিন এমন মন্তব্য করেন। খবর বিবিসির।

তবে ইউক্রেনে হামলার বিষয়ে অনুতপ্ত নন পুতিন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমার কোনো অনুশোচনা নেই। আমি এটা পরিষ্কার বলতে চাই, সেখানে এখন যা ঘটছে, তা অপ্রীতিকর।’ ইউক্রেনে যে অভিযান চালানো হয়েছে, তা সঠিক ও সময়মতো চালানো হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। (সূত্র:প্রথম আলো)

সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ নিয়ে সমকালে (০২ অক্টোবর ২২) ড. দেলোয়ারের “শান্তিময় বিশ্ব গঠনে বাংলাদেশের তাগিদ” নিবন্ধে  জাতিসংঘের ৭৭তম সাধারণ অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবার ১৯তম বারের মতো যে ভাষণ দিয়েছেন এর একটি পর্যালোচনা লিখিছেন… পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বেগ প্রসঙ্গে লেখক বলেন, প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে যুদ্ধের বিপরীতে শান্তিময় বিশ্বের ওপর জোর দিয়েছেন। বিশ্বের কাছে তিনি দ্ব্যর্থকণ্ঠে বলেছেন, শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা ছাড়া আর্থসামাজিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। যুদ্ধ বা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞার মতো বৈরী পন্থা কখনও কোনো জাতির মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না। যুদ্ধের ভয়াবহতা, হত্যা-ক্যু-সংঘাতে মানুষের যে দুঃখ-কষ্ট-দুর্দশা হয় তা অবর্ণনীয়। আগামী প্রজন্মের জন্য শান্তিময় বিশ্বের তাগিদ এবং যুদ্ধ ও অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধের যে আকুতি তাঁর কণ্ঠে ঝরেছে তা বিশ্ব সম্প্রদায় অনুধাবন করবে বলে আমাদের প্রত্যাশা। বলা চলে, তিনি সরাসরি পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করেছেন। নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে একটি দেশকে শাস্তি দিতে গিয়ে যে নারী ও শিশুরাও সংকটে পড়ছে সেটিও তিনি উল্লেখ করতে ভোলেননি। প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব বিবেকের কাছে অস্ত্র প্রতিযোগিতা, যুদ্ধ ও নিষেধাজ্ঞা বন্ধেরআহ্বান জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে যুদ্ধের বিপরীতে শান্তিময় বিশ্বের ওপর জোর দিয়েছেন। বিশ্বের কাছে তিনি দ্ব্যর্থকণ্ঠে বলেছেন, শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা ছাড়া আর্থসামাজিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। যুদ্ধ বা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞার মতো বৈরী পন্থা কখনও কোনো জাতির মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না। যুদ্ধের ভয়াবহতা, হত্যা-ক্যু-সংঘাতে মানুষের যে দুঃখ-কষ্ট-দুর্দশা হয় তা অবর্ণনীয়। আগামী প্রজন্মের জন্য শান্তিময় বিশ্বের তাগিদ এবং যুদ্ধ ও অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধের যে আকুতি তাঁর কণ্ঠে ঝরেছে তা বিশ্ব সম্প্রদায় অনুধাবন করবে বলে আমাদের প্রত্যাশা। বলা চলে,  তিনি সরাসরি পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করেছেন। নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে একটি দেশকে শাস্তি দিতে গিয়ে যে নারী ও শিশুরাও সংকটে পড়ছে সেটিও তিনি উল্লেখ করতে ভোলেননি। প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব বিবেকের কাছে অস্ত্র প্রতিযোগিতা, যুদ্ধ ও নিষেধাজ্ঞা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।

বিশ্ব শান্তির জন্য যে  রোডম্যাপের প্রয়োজন এর একটি রূপরেখা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে ফুটে উঠেছে।  রুশ পারমাণবিক মহড়ায় বর্তমানে  যে সংকট ও সংশয় সৃষ্টি হয়েছে, বৈশ্বিক এ সংকটে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করতে পারেন না। বলার অপেক্ষা রাখে না বৈশ্বিক এ সংকটে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বের যুদ্ধে উস্কানি ও মদদ দেয়ার পরিবর্তে  এখনই  সংকট ও বিরোধ নিষ্পত্তিতে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনা শুরু করা দরকার। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে দরকার আন্তর্জাতিকভাবে মতানৈক্যের, কারণ রুশ পারমাণবিক অস্র ব্যবহারের পরিস্থিতির দায় কেউই  এড়াতে পারবে না।