০১:০৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ৫ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
                       

জীবনী: মহাকবি কায়কোবাদ

বিশ্লেষণ সংকলন টিম
  • প্রকাশ: ১২:৪৬:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২২
  • / ৩৬৬৮ বার পড়া হয়েছে

মহাকবি কায়কোবাদ


Google News
বিশ্লেষণ-এর সর্বশেষ নিবন্ধ পড়তে গুগল নিউজে যোগ দিন

বিশেষ শর্তসাপেক্ষে এবং স্বল্পমূল্যে এই ওয়েবসাইটটি সামাজিক কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ কিংবা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নিকট বিক্রি করা হবে।

কায়কোবাদ একজন বাঙালি কবি ও মহাকবি। মহাকবি কায়কোবাদের প্রকৃত নাম কাজেম আল কোরায়শী তবে তিনি বা ‘মুন্সী কায়কোবাদ’ নামেও পরিচিত ছিলেন। বাংলা ভাষার উল্লেখযোগ্য কবিদের মধ্যে কায়কোবাদ একজন।

মীর মশাররফ, কায়কোবাদ, মোজাম্মেল হকের মধ্যে কায়কোবাদই হচ্ছেন সর্বতোভাবে একজন কবি। কাব্যের আদর্শ ও প্রেরণা তাঁর মধ্যেই লীলাময় হয়ে ওঠে। সেজন্য একথা বেশ জোরের সঙ্গে বলা যায় যে, কবি কায়কোবাদই হচ্ছেন আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রথম মুসলিম কবি। কায়কোবাদ ছিলেন বাঙালি মুসলিম কবিদের মধ্যে প্রথম সনেট রচয়িতা।

কায়কোবাদের মহাকাব্যের নাম মহাশ্মশান, এটি ১৯০৪ সালে প্রকাশিত হয়।

কায়কোবাদ ১৮৫৭ সালের ২৫ শে ফেব্রুয়ারি বর্তমানে বাংলাদেশের ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ থানার অধীনে আগলা-পূর্বপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পেশায় কায়কোবাদ ছিলেন ঢাকা জেলা জজ কোর্টের একজন আইনজীবী শাহামাতুল্লাহ আল কোরেশীর পুত্র।

মহাকবি কায়কোবাদ
মহাকবি কায়কোবাদ

কায়কোবাদ সেন্ট গ্রেগরি স্কুলে অধ্যয়ন করেন। পিতার অকালমৃত্যুর পর তিনি ঢাকা মাদ্রাসাতে (বর্তমান কবি নজরুল সরকারি কলেজ) ভর্তি হন যেখানে তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষা পর্যন্ত অধ্যয়ন করেছিলেন। উপরন্তু, তিনি পরীক্ষা দেননি, বদলে তিনি পোস্টমাস্টারের চাকরি নিয়ে তার স্থানীয় গ্রামে ফিরে আসেন, যেখানে তিনি অবসর গ্রহণের আগ পর্যন্ত কাজ করেছেন। ১৯৩২ সালে, তিনি কলকাতাতে অনুষ্ঠিত বঙ্গীয় মুসলিম সাহিত্য সম্মেলন-এর প্রধান অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

কায়কোবাদের কাব্যগ্রন্থ

  • বিরহ বিলাপ (১৮৭০)— কায়কোবাদের প্রথম কাব্যগ্রন্থ
  • কুসুম কানন (১৮৭৩)
  • অশ্রুমালা (১৮৯৬)
  • মহাশ্মশান (১৯০৪)— কায়কোবাদ রচিত মহাকাব্য
  • শিব-মন্দির বা জীবন্ত সমাধি (১৯২১)
  • অমিয় ধারা (১৯২৩)
  • শ্মশানভষ্ম (১৯২৪)
  • মহররম শরীফ (১৯৩৩)— ‘মহররম শরীফ’ কবির মহাকাব্যোচিত বিপুল আয়তনের একটি কাহিনী কাব্য।
  • শ্মশান ভসন (১৯৩৮)
  • প্রেমের বাণী (১৯৭০)
  • প্রেম পারিজাত (১৯৭০)

কায়কোবাদের পুরস্কার ও সম্মাননা

বাংলা মহাকাব্যের অস্তোন্মুখ এবং গীতিকবিতার স্বর্ণযুগে মহাকবি কায়কোবাদ মুসলিমদের গৌরবময় ইতিহাস থেকে কাহিনী নিয়ে মহাশ্মশান মহাকাব্য রচনা করে যে দুঃসাহসিকতা দেখিয়েছেন তা তাকে বাংলা সাহিত্যের গৌরবময় আসনে স্থান করে দিয়েছে। সেই গৌরবের প্রকাশে ১৯৩২ সালে বঙ্গীয় মুসলিম সাহিত্য সম্মেলনের মূল অধিবেশনে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন কবি কায়কোবাদ। তিনি আধুনিক বাংলাসাহিত্যের প্রথম মুসলিম কবি।

বাংলা কাব্য সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯২৫ সালে নিখিল ভারত সাহিত্য সংঘ মহাকবি কায়কোবাদকে ‘কাব্যভূষণ’, ‘বিদ্যাভূষণ’ ও ‘সাহিত্যরত্ন’ উপাধিতে ভূষিত করেন।

কায়কোবাদের মৃত্যু

১৯৫১ সালের ২১শে জুলাই ৯৪ বছর বয়সে কায়কোবাদ ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। ঢাকার আজিমপুর কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।

শেয়ার করুন

One thought on “জীবনী: মহাকবি কায়কোবাদ

  1. মহাশ্মশান এর অডিওবুক শুনেছিলাম audiobook এ । সাধারণত আমরা কবিতা পিডিএফ এ পড়ে থাকি কিন্তু অডিও ফর্মে শুনে আমি কবিতাটি visualize করতে পারি।

মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার তথ্য সংরক্ষিত রাখুন

বিশেষ শর্তসাপেক্ষে এই ওয়েবসাইটটি সামাজিক কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ কিংবা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নিকট বিক্রি করা হবে।

জীবনী: মহাকবি কায়কোবাদ

প্রকাশ: ১২:৪৬:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২২

কায়কোবাদ একজন বাঙালি কবি ও মহাকবি। মহাকবি কায়কোবাদের প্রকৃত নাম কাজেম আল কোরায়শী তবে তিনি বা ‘মুন্সী কায়কোবাদ’ নামেও পরিচিত ছিলেন। বাংলা ভাষার উল্লেখযোগ্য কবিদের মধ্যে কায়কোবাদ একজন।

মীর মশাররফ, কায়কোবাদ, মোজাম্মেল হকের মধ্যে কায়কোবাদই হচ্ছেন সর্বতোভাবে একজন কবি। কাব্যের আদর্শ ও প্রেরণা তাঁর মধ্যেই লীলাময় হয়ে ওঠে। সেজন্য একথা বেশ জোরের সঙ্গে বলা যায় যে, কবি কায়কোবাদই হচ্ছেন আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রথম মুসলিম কবি। কায়কোবাদ ছিলেন বাঙালি মুসলিম কবিদের মধ্যে প্রথম সনেট রচয়িতা।

কায়কোবাদের মহাকাব্যের নাম মহাশ্মশান, এটি ১৯০৪ সালে প্রকাশিত হয়।

কায়কোবাদ ১৮৫৭ সালের ২৫ শে ফেব্রুয়ারি বর্তমানে বাংলাদেশের ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ থানার অধীনে আগলা-পূর্বপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পেশায় কায়কোবাদ ছিলেন ঢাকা জেলা জজ কোর্টের একজন আইনজীবী শাহামাতুল্লাহ আল কোরেশীর পুত্র।

মহাকবি কায়কোবাদ
মহাকবি কায়কোবাদ

কায়কোবাদ সেন্ট গ্রেগরি স্কুলে অধ্যয়ন করেন। পিতার অকালমৃত্যুর পর তিনি ঢাকা মাদ্রাসাতে (বর্তমান কবি নজরুল সরকারি কলেজ) ভর্তি হন যেখানে তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষা পর্যন্ত অধ্যয়ন করেছিলেন। উপরন্তু, তিনি পরীক্ষা দেননি, বদলে তিনি পোস্টমাস্টারের চাকরি নিয়ে তার স্থানীয় গ্রামে ফিরে আসেন, যেখানে তিনি অবসর গ্রহণের আগ পর্যন্ত কাজ করেছেন। ১৯৩২ সালে, তিনি কলকাতাতে অনুষ্ঠিত বঙ্গীয় মুসলিম সাহিত্য সম্মেলন-এর প্রধান অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

কায়কোবাদের কাব্যগ্রন্থ

  • বিরহ বিলাপ (১৮৭০)— কায়কোবাদের প্রথম কাব্যগ্রন্থ
  • কুসুম কানন (১৮৭৩)
  • অশ্রুমালা (১৮৯৬)
  • মহাশ্মশান (১৯০৪)— কায়কোবাদ রচিত মহাকাব্য
  • শিব-মন্দির বা জীবন্ত সমাধি (১৯২১)
  • অমিয় ধারা (১৯২৩)
  • শ্মশানভষ্ম (১৯২৪)
  • মহররম শরীফ (১৯৩৩)— ‘মহররম শরীফ’ কবির মহাকাব্যোচিত বিপুল আয়তনের একটি কাহিনী কাব্য।
  • শ্মশান ভসন (১৯৩৮)
  • প্রেমের বাণী (১৯৭০)
  • প্রেম পারিজাত (১৯৭০)

কায়কোবাদের পুরস্কার ও সম্মাননা

বাংলা মহাকাব্যের অস্তোন্মুখ এবং গীতিকবিতার স্বর্ণযুগে মহাকবি কায়কোবাদ মুসলিমদের গৌরবময় ইতিহাস থেকে কাহিনী নিয়ে মহাশ্মশান মহাকাব্য রচনা করে যে দুঃসাহসিকতা দেখিয়েছেন তা তাকে বাংলা সাহিত্যের গৌরবময় আসনে স্থান করে দিয়েছে। সেই গৌরবের প্রকাশে ১৯৩২ সালে বঙ্গীয় মুসলিম সাহিত্য সম্মেলনের মূল অধিবেশনে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন কবি কায়কোবাদ। তিনি আধুনিক বাংলাসাহিত্যের প্রথম মুসলিম কবি।

বাংলা কাব্য সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯২৫ সালে নিখিল ভারত সাহিত্য সংঘ মহাকবি কায়কোবাদকে ‘কাব্যভূষণ’, ‘বিদ্যাভূষণ’ ও ‘সাহিত্যরত্ন’ উপাধিতে ভূষিত করেন।

কায়কোবাদের মৃত্যু

১৯৫১ সালের ২১শে জুলাই ৯৪ বছর বয়সে কায়কোবাদ ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। ঢাকার আজিমপুর কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।