কম্বোডিয়া নির্বাচন ও যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
- প্রকাশ: ১০:৫৯:২৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অগাস্ট ২০২৩
- / ৩৯৩ বার পড়া হয়েছে
পৃথিবীর হাজার বছরের ইতিহাসের পথ পাড়ি দিয়ে বর্তমানে আমরা বাস করছি আধুনিক এক যুগে, যেখানে একদিকে বিজ্ঞানের চরম উৎকর্ষতা আমাদের সার্বিক জীবনকে করেছে অনেক সহজতর, পাশাপাশি আধুনিকতার কারণে সৃষ্টি হয়েছে বিভিন্ন জটিলতার। মানবজাতির এই দীর্ঘ পথচলায় অসংখ্য ঘটনা ঘটেছে বিভিন্ন সময়ে, যেগুলো সংরক্ষণ করা হয়েছে ইতিহাস নাম দিয়ে। ইতিহাস আমাদেরকে টাইম মেশিনে চড়িয়ে নিয়ে যায় হাজার বছর পূর্বে। ইতিহাস আমাদের জানায়, মানবজাতির পথচলা কখনোই সহজ ছিল না।
গত দুই হাজার বছরের ইতিহাস যদি পর্যালোচনা করা যায়, তাহলে দেখা যাবে—অসংখ্যবার মানুষের রক্তে রঞ্জিত হয়েছে পৃথিবীর মাটি। স্রেফ কিছু বিভেদ কিংবা বৈরিতাকে মস্তিষ্কে গেঁথে সূচনা হয়েছে অসংখ্য ভ্রাতৃঘাতী সংঘর্ষের, যেগুলোতে অন্যকোনো প্রাণী নয়, মানুষের দ্বারাই মানবতা ভূলুণ্ঠিত হয়েছে। আরও গভীরভাবে লক্ষ্য করলে আমরা দেখতে পাই, রাজনৈতিক কারণে বিভিন্ন সংঘর্ষে যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের সবচেয়ে বড়ো অংশ ছিল রাজনীতি থেকে দূরে থাকা নিরপরাধ সাধারণ মানুষ এই তো কিছুদিন আগেই হয়ে গেল কম্বোডিয়ার নির্বাচন, যা পৃথিবীর মানুষের নজর কেড়েছে বৈকি! কম্বোডিয়ার ক্ষমতাসীন দল সিপিপি। দলটির নেতা হুন সেন ৩৮ বছর ধরে দেশটির নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি নির্বাচিত শাসকও তিনি।
সম্প্রতি সমর্থকদের উদ্দেশে হুন সেনের ৪৫ বছর বয়সি ছেলে এবং কম্বোডিয়ার সেনাপ্রধান হুন মানেট বলেন, শুধু সিপিপির দেশ পরিচালনার সক্ষমতা রয়েছে দীর্ঘ ৩৮ বছরের শাসনামলে হুন সেন নিজেই এই পরিস্থিতি তৈরি করেছেন। হুন সেনের বয়স এখন ৭০ বছর ছুঁয়েছে। শাসনামলের শুরুর দিকে তিনি ভিয়েতনাম পন্থী কমিউনিস্ট শাসক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এর পর কম্বোডিয়ায় জাতিসংঘ-সমর্থিত বহুদলীয় ব্যবস্থা চালু হয়। তখনো প্রধানমন্ত্রী ছিলেন হুন সেন। বর্তমানে হুন সেন দেশটিতে একনায়কতান্ত্রিক শাসন চালু রেখেছেন।
সিপিপি ও হুন সেনের শাসন চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে, এমন একটি রাজনৈতিক দল রয়েছে কম্বোডিয়ায়। দলটির নাম ক্যান্ডেললাইট পার্টি। তবে এবারের নির্বাচনে দলটি অংশ নিতে পারেনি। নিবন্ধনসংক্রান্ত ত্রুটির অজুহাত দেখিয়ে চলতি বছরের মে মাসে এই দলকে জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। এই সিদ্ধান্ত কম্বোডিয়ায় ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। সমালোচকদের মতে, কম্বোডিয়ায় গণতান্ত্রিক অংশ গ্রহণের পরিসর সংকুচিত করার ক্ষেত্রে হুন সেনের আরেকটি পদক্ষেপের উদাহরণ এটি। কেননা, এবারের নির্বাচনে অংশ নেওয়া বাকি ১৭টি দলের মধ্যে কোনোটিরই সিপিপির বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলার সক্ষমতা নেই। এই কারণে এবারের নির্বাচনকে কম্বোডিয়ায় কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক বলছেন সমালোচকরা। ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে নিরঙ্কুশ বিজয় দাবি করেছে সিপিপি। বলা হয়েছে, ৮০ শতাংশের বেশি ভোট তাদের ঝুলিতে পড়বে। এদিকে আশা করা হচ্ছে, নির্বাচনে জয়ের পর বাবা হুন সেনের স্থলাভিষিক্ত হতে পারেন ছেলে হুন মানেট। তাই এটাকে সাধারণ নির্বাচন না বলে বরং ছেলের রাজ্যাভিষেক বলা ভালো, এমনটাই মত বিশ্লেষকদের।
ওদিকে নির্বাচন শেষ হতে না হতেই কম্বোডিয়ায় ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সেই সঙ্গে বিদেশি কিছু সহায়তা কর্মসূচি স্থগিত করেছে। গত নির্বাচনে দেশটির ক্ষমতাসীন দল কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টি (সিপিপি) নিরঙ্কুশ বিজয় ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপ নিল। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, দেশটিতে গণতান্ত্রিক পরিস্থিতির অবনতির কারণে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। গণতন্ত্রের মর্যাদা নষ্ট করার মতো পরিস্থিতির সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক বিবৃতিতে বলেছেন, কম্বোডিয়ার নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। দেশটির প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের সিপিপি দলের কোনো শক্ত বিরোধী দল নির্বাচনে ছিল না। নির্বাচনের আগে কম্বোডিয়ার সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দল, গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজকে হুমকি দিয়েছে ও হয়রানি করেছে। দেশটির সংবিধানের মর্যাদা এতে ক্ষুণ্ণ হয়েছে। তাছাড়া কম্বোডিয়ার নির্বাচন আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হয়নি।
মিলার কম্বোডিয়ার সরকারকে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যদিকে ২০১৭ সালে নিষিদ্ধ আরেকটি বিরোধী রাজনৈতিক দল সিএনআরপির সদস্য এবং নির্বাসিত সাবেক মন্ত্রী মু শোচুয়া বলেন, আমরা এবারের নির্বাচনকে জালিয়াতির নির্বাচন বলতে পারব না। বরং আমরা এটাকে এমন একটি নির্বাচন বলতে পারি, যা হুন সেনের বিজয় নিশ্চিত করে। এর মধ্য দিয়ে হুন সেনের দল তাঁর ছেলেকে দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী বাছাই করবে এবং হুন পরিবারের সাম্রাজ্য অব্যাহত রাখবে।
সরকারপ্রধান হওয়ার জন্য হুন মানেট দীর্ঘদিন ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ধারণা করা হচ্ছে, নির্বাচনের পর কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তিনি বাবার স্থলাভিষিক্ত হতে পারেন। তাই এবারের নির্বাচনকে ‘রাজ্যাভিষেক’ বলছেন বিশ্লেষকদের অনেকেই।
এত কিছুর পরও সিপিপি নেতাদের নির্বাচনের আগে কিছুটা দ্বিধান্বিত দেখা গিয়েছিল। এ জন্য তারা ব্যালট নষ্ট করা বা নির্বাচন বয়কটে উৎসাহ দেওয়াকে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করে দ্রুত আইন পাস করে। এর আওতায় বিরোধী দল ক্যান্ডেললাইট পার্টির কয়েক জন সদস্যকে গ্রেপ্তারও করা হয়।
এ বিষয়ে কম্বোডিয়ার থিঙ্কট্যাংক ফিউচার ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ওউ ভিরাক বলেন, তারা জানতেন, তারা নির্বাচনে জিততে চলেছেন। এটা তাদের জন্য সহজ ফলাফল ছিল। কিন্তু নির্বাচনের বৈধতা অর্জন করা বেশ কঠিন ছিল। বিরোধী দলকে দুর্বল করে রাখতে হবে। একই সঙ্গে জনগণকেও খুশি রাখতে হবে। এ দুটি বিষয় অর্জন করতে গিয়ে রাজপথের বিক্ষোভের মতো প্রতিবন্ধকতাগুলো আগেভাগে ঠেকিয়ে রাখা হয়েছিল। কম্বোডিয়ার ভোটার প্রাক সোপহেপের একটি মন্তব্য বর্তমান পরিস্থিতি বুঝতে সহায়তা করবে। তিনি বলেন, হুন সেন সব সময় এমন নীতির কথা বলেন, যাতে জড়িত সব পক্ষের লাভ হয়। মানুষ কিন্তু তা বুঝতে পারে, আখেরে তিনি একাই লাভবান হন। মানুষ শান্তিতে থাকতে পারি না।
গত বছরের পহেলা ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর, প্রথমবারের মতো কোনো রাষ্ট্রের সরকারপ্রধান হিসেবে গত বছরের জানুয়ারিতে দেশটি সফর করেন কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের চলতি বছরের চেয়ার পদে আসীন হয়েছে কম্বোডিয়া। আসিয়ানের আনুষ্ঠানিক কোনো অ্যাজেন্ডা না থাকলেও মিয়ানমারের চলমান অচলাবস্থা বিষয়েই তার এ সফর বলে মনে করা হচ্ছে। সফরকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন দেশ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর আপত্তি থাকা সত্ত্বেও হুন সেন মহা সমারোহে তার পাঁচ মন্ত্রী, সশস্ত্র বাহিনীর উপপ্রধান, দু’জন উপমন্ত্রী এবং একদল প্রতিনিধি নিয়ে মিয়ানমার সফর করেন।
এ সফরে মিয়ানমার জনগণের প্রাপ্তির চেয়ে দুই দেশের স্বৈরতান্ত্রিক সরকারপ্রধানের স্বার্থই হাসিল হয়েছে। মিয়ানমার সামরিক বাহিনী অনার গার্ড ও লালগালিচা দিয়ে হুন সেনকে অভ্যর্থনা জানালেও মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থিরা এ সফরের বিরোধিতা করে বিভিন্ন স্লোগান এবং বোমা ফাটিয়ে প্রতিবাদ জানান। অভ্যুত্থান বিরোধীদের বিক্ষোভ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল এ আশঙ্কায় যে, হুন সেনের সফর নিষ্ঠুর জান্তা শাসককে আরও বৈধতা দেবে। আর এ সফরের প্রকৃত উদ্দেশ্যও তাই বলে মনে করা হচ্ছে।
হুন সেন ও মিন অং হ্লাইংয়ের মধ্যে বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বিষয়, আসিয়ান-সমর্থিত পাঁচ প্রস্তাব, রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা লঙ্ঘনের অভিযোগে মিয়ানমারে কারাবন্দি অস্ট্রেলিয়ান অর্থনীতিবিদ শন টার্নেলের মামলা এবং করোনা মহামারি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চির সঙ্গে সাক্ষাৎ বা তার মুক্তির বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বা হবে না বলে আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিল কম্বোডিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ সফর থেকে মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি নিরসনে আশাব্যঞ্জক কোনো রূপরেখা পাওয়া যায়নি।
সফরের পর একপক্ষীয় ঘোষণায় মিয়ানমার সামরিক বাহিনী, বিভিন্ন সশস্ত্র জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে যুদ্ধবিরতি বছরের শেষ পর্যন্ত বাড়িয়েছে। যদিও এর কোনো বাস্তবিক ফলাফল পরিলক্ষিত হয়নি।
সাগাইং, শিন, কায়াহ, কা-ইন রাজ্যে মিয়ানমার সামরিক বাহিনী অযাচিত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, ফলে ইতিমধ্যে বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় অর্ধলাখ মানুষ। মিয়ানমারে মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে সামরিক বাহিনী সহযোগিতা করবে বললেও উল্টো তারা ফোর-কাট-এর মতো বীভৎস নীতি অবলম্বন করে সব ধরনের ত্রাণ কার্যক্রম বন্ধ করে রেখেছে। সেনাবাহিনীর এ নীতি ১৯৭০-এর দশকে বার্মিজ সোশ্যালিস্ট প্রোগ্রাম পার্টির সাবেক শাসনামলে তৈরি করা হয়েছিল। এর উদ্দেশ্য হলো খাদ্য, তহবিল, তথ্য এবং কর্মী নিয়োগের প্রবেশাধিকার বন্ধ করে জাতিগত মিলিশিয়াদের দুর্বল করা, যার পরিণতি প্রায়ই ধ্বংসাত্মক হয়ে থাকে। এখন সেনাবাহিনী সাধারণ জনগণকে বর্ম বা ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে গণতন্ত্রপন্থি গেরিলা দল পিডিএফ ও নৃতাত্ত্বিক সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর ওপর আক্রমণ করছে। হুন সেনের সফরের উল্লেখযোগ্য দিকটি হলো, মিয়ানমারের সীমান্ত অঞ্চলে সেনাবাহিনী ও বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সশস্ত্র বিদ্রোহীদের মধ্যে যুদ্ধবিরতি আলোচনায় আসিয়ানের বিশেষ দূতকে যোগ দেওয়ার অনুমতি দিতে সম্মত হয়েছে জান্তা বাহিনী। তবে আসিয়ানের পাঁচ দফা ঐকমত্যের কোনোটিই সুনির্দিষ্ট ভাবে বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হয়েছে কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সফর।
এখন অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, হুন সেন তাঁর নিজের প্রতিচ্ছবি কীভাবে বদলাবেন? হুন সেনের এ সফরের পেছনে আসিয়ানের বাকি আটটি দেশের সমর্থন না থাকায় মিয়ানমার সংকট নিরসনে আসিয়ানের আগেকার গৃহীত পদক্ষেপগুলো বিনষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। মিয়ানমার ইস্যুতে পাঁচ দফা পদক্ষেপ বাস্তবায়নে ব্যর্থতা আসিয়ানের বিশ্বাস যোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। হুন সেনের তৎপরতা সংস্থাটির বৈশ্বিক গ্রহণযোগ্যতাকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করবে। গত বছরের ১৮ থেকে ১৯ জানুয়ারি আসিয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্ভাব্য অনানুষ্ঠানিক সমাবেশে মিয়ানমারকে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করবে কম্বোডিয়া। এর মাধ্যমে আসিয়ানের বার্ষিক সম্মেলন এবং আসিয়ান রাষ্ট্রপ্রধান ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যে ওয়াশিংটনে সম্ভাব্য বৈঠকে মিয়ানমার জান্তা বাহিনীর উপস্থিতি নিশ্চিতের ব্যবস্থা করা হতে পারে।
হুন সেন এসব প্রচেষ্টার মাধ্যমে কম্বোডিয়ায় নিজের স্বৈরতান্ত্রিক উদ্যোগগুলোকেও আন্তর্জাতিক মহলে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করবে। কারণ, মিয়ানমার ও কম্বোডিয়া যে এখন মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ তা সবারই জানা। যাই হোক, এদিকে বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দেশে একটি রাজনৈতিক সংকট ঘনীভূত হয়েছে।
আবার এই রাজনৈতিক সংকট সমাধানে বিদেশি কূটনীতিকসহ বিভিন্ন পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর বেশ তোড়জোড় বেড়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি দেশের কূটনীতিকরা এরই মধ্যে বাংলাদেশ সফর করেছেন। তারা সরকারি দল, বিরোধীদলসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি সংস্থা ও সংগঠনের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন, মতামত নিয়েছেন। কিন্তু একটি দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সংকট বিদেশি রাষ্ট্রের কূটনীতিকরা সমাধান করতে পারবেন না বলেই মত দিয়েছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপিসহ সরকারবিরোধী সমমনা দলগুলো নির্বাচনে অংশ না নিলেও কম্বোডিয়ার মতো পরিস্থিতি যেন না হয়, সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।