বিমা ব্যবসায়ের মূলনীতি
- প্রকাশ: ০৫:২৫:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১
- / ৩৮০৮ বার পড়া হয়েছে
বিমা ব্যবসা কতিপয় নীতিমালার উপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয়। এগুলোকে বিমার মৌলিক নীতিমালা বলে (Principles of Insurance)। এসব নীতির বাইরে গিয়ে বিমা ব্যবসা পরিচালনা করা যায় না।
বীমার মূলনীতিসমূহ
বীমার ৬ টি মূলনীতি রয়েছে। নিচে বীমা ব্যবসায়ের নীতিমালাগুলো উল্লেখ করা হলো-
১. বিমাযোগ্য স্বার্থের নীতি
সাধারণভাবে, বিমাযোগ্য স্বার্থ হলো বিমার বিষয়বস্তুর সাথে জড়িত বিমাগ্রহীতার আর্থিক স্বার্থ। অর্থাৎ বিমার বিষয়বস্তু নিরাপদে থাকলে বিমাগ্রহীতা আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। আর বিষয়বস্তু ক্ষতিগ্রস্ত হলে বিমাগ্রহীতা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। বাস্তবে অস্তিত্ব না থাকলে সে বিষয়ের উপর বিমাযোগ্য স্বার্থ থাকে না ও তার উপর বিমাও করা যায় না। তবে বিমার বিষয়বস্তুটি বৈধ হতে হবে। যেমন, অন্যের সম্পত্তির উপর কোন ব্যক্তির বিমাযোগ্য স্বার্থ থাকে না। ফলে সে এরূপ সম্পত্তির উপর বিমা করতে পারবে না।
২. চূড়ান্ত বিশ্বাসের নীতি
এ নীতি অনুযায়ী বিমাকারী এবং বিমাগ্রহীতা সরল বিশ্বাসে বিমা সংক্রান্ত সকল বিষয় একে
অপরের কাছে অকপটে উপস্থাপন করবে। কোনো অবস্থাতেই গুরুত্বপুর্ণ কোন তথ্য ইচ্ছাকৃতভাবে গোপন করা যাবে না। তথ্য গোপন করলে বিমা চুক্তি বাতিল হয়ে যাবে। সুতরাং বিমাচুক্তিতে সব প্রয়োজনীয় বিষয় প্রকাশ করতে হবে।
৩. ক্ষতিপূরণের নীতি
এ নীতি অনুসারে বিষয়বস্তুর ক্ষতি হলে বিমা কোম্পানি বিমাগ্রহীতাকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিবে। যতটুকু ক্ষতির জন্য বিমা করা হবে, ঠিক ততটুকুই ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেয়া হবে। বিষয়বস্তুর ক্ষতির পরিমাণ বিমামূল্যের বেশি হলে বিমা কোম্পানি বিমামূল্যের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ দিবে। আর কম হলে, প্রকৃত ক্ষতির সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ দিবে।
৪. প্রতিস্থাপনের নীতি
বিমা ব্যবসার নিজস্ব একটি আইন রয়েছে। বিমার মূল উদ্দেশ্য হলো, কোন বিমা গ্রহীতা ক্ষতিগ্রস্ত হলে তাকে ক্ষতি পুষিয়ে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা। অর্থাৎ বিমার মাধ্যমে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যায় না। আইনগতভাবে তাই কোন ক্ষতি হওয়ার পর তা পূরণ করার পর অন্য কোন উৎস থেকে বিমা গ্রহীতা আর কোন অর্থ পাবে না। যেমন, একজন বিমাগ্রহীতার বিমাকৃত গাড়ীটি দুর্ঘটনায় সম্পূর্ণ বাতিল হয়ে গেল। সেক্ষেত্রে বিমা কোম্পানি তাকে একটি নতুন গাড়ী দিল। কিন্তু ধ্বংসকৃত গাড়ীটি বিক্রয় করে যে অর্থ পাওয়া যাবে তা বিমাকারী প্রতিষ্ঠান পাবে; বিমা গ্রহীতা পাবে না।
৫. নিকটতম কারণ নীতি
ক্ষতির নানা কারণ থাকতে পারে। এ নীতি অনুযায়ী বিমা দাবী পূরণের সময় নিকটতম কারণটি বিবেচনা করা হবে, দূরের কারণটি নয়। কোন ক্ষতির সাথে একাধিক কারণ জড়িত থাকলে যে কারণটি নিকটতম সেটাকেই ক্ষতির কারণ বলে বিবেচনা করা হয়। তবে সেটা বিমাকৃত হতে হবে। ধরুন, একটি জাহাজের সামুদ্রিক বিমা করা আছে। জাহাজটি যান্ত্রিক কারণে ডুবে গেল। এ জন্য বিমাকারি কোন ক্ষতিপূরণ পাবে না। কারণ যান্ত্রিক কারণটি বিমা করা নেই।
৬. অবদানের নীতি
বিমার ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের নীতিকে কার্যকর করার জন্য অবদানের নীতি প্রয়োগ করা হয়। বিষয়বস্তুর উপর একাধিক বিমা করা থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে কোন ক্ষতি হলে সে ক্ষতিপূরণ সকলে আনুপাতিক হারে দিবে। ধরুন, মি. জামান তার একটি বাড়ি অগ্নিবিমার জন্য ৫,০০,০০০.০০ করে তিনটি বিমা কোম্পানির নিকট বিমা করল। অগ্নিকাণ্ডের ফলে ১,০০,০০০ টাকার ক্ষতি হলো। সেক্ষেত্রে সকলে মিলে আনুপাতিক হারে ১,০০,০০০ টাকা ক্ষতিপূরণ দিবে। তবে এটি জীবন বিমা ও ব্যক্তিগত দুর্ঘটনা বিমার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
আমি একটি ব্যবসায়িক বিমা করতে চাই আমার ব্যবসা হলো,ওয়াই ফাই এর ব্যবসা
অসংখ্য ধন্যবাদ আপু