০৬:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
                       

জীবনবিমায় প্রিমিয়াম, বোনাস এবং বার্ষিকবৃত্তি

প্রফেসর এম এ মাননান
  • প্রকাশ: ০৯:৫৯:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • / ৯৫৭ বার পড়া হয়েছে

জীবনবিমা মানুষের জীবনে বিদ্যমান অনিশ্চয়তার একটি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা


Google News
বিশ্লেষণ-এর সর্বশেষ নিবন্ধ পড়তে গুগল নিউজে যোগ দিন

বিশেষ শর্তসাপেক্ষে এবং স্বল্পমূল্যে এই ওয়েবসাইটটি সামাজিক কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ কিংবা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নিকট বিক্রি করা হবে।

প্রিমিয়াম (Premium) 

বিমার মূল উপাদান হলো প্রিমিয়াম। বিমা গ্রহীতা বিমাকারীকে ঝুঁকি গ্রহণের প্রতিদান হিসেবে কিস্তিভিত্তিক প্রিমিয়াম প্রদান করে। প্রিমিয়াম হলো বিমা চুক্তির এমন একটি অপরিহার্য উপাদান যা বিমাকারীর প্রতিশ্রুতির প্রতিদানস্বরূপ। এ প্রিমিয়ামের পরিমাণ নির্ধারণ করার সময় নানা বিষয় বিচার বিবেচনা করতে হয়।

জীবনবিমার প্রিমিয়াম নির্ধারণকারী উপাদানসমূহ (Determining Factors of Premium)

জীবন বিমার প্রিমিয়াম নির্ধারণের সময় বিবেচ্যবিষয়গুলো নিচে আলোচনা করা হলো: 

১. বিমাপত্রের মূল্য: পলিসি বা বিমাপত্রের পরিমাণ বেশি হলে প্রিমিয়াম বেশি হবে, আর দাবীর পরিমাণ কম হলে প্রিমিয়াম কম হবে। এ কারণে পলিসি প্রিমিয়াম নির্ধারণের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। 

২. পলিসির মেয়াদ: পলিসির একটি মেয়াদ থাকে। পলিসি মেয়াদের উপর প্রিমিয়ামের হার নির্ভর করে। মেয়াদ বেশি হলে প্রিমিয়াম কম হবে, আবার মেয়াদ কম হলে প্রিমিয়াম বেশি হবে। 

৩. চুক্তির প্রকৃতি: বিমাতে যে যত বেশি সুবিধা গ্রহণ করবে তাকে তত বেশি প্রিমিয়াম দিতে হবে। 

৪. বিমায় ঝুঁকির প্রকৃতি: বিমার মাধ্যম ঝুঁকি প্রতিরোধ করা হয়। তাই বিমাকারী যত বেশি ঝুঁকি গ্রহণ করবে, প্রিমিয়ামের পরিমাণও তত বেশি হবে। অন্যদিকে কম ঝুঁকি সম্পন্ন পলিসি গ্রহণ করলে কম প্রিমিয়াম হবে।

বোনাস (Bonus)

বিমা কোম্পানি প্রিমিয়াম থেকে প্রাপ্ত অর্থ অন্যত্র লগ্নি করে মুনাফা অর্জন করে। তাই কোন কোন পলিসিতে বিমা গ্রহীতা বিমা কোম্পানির কাছ থেকে লাভের অংশ পেয়ে থাকে। যখন কোন বিমা কোম্পানি কোন বিমাগ্রহীতাকে তার লাভের অংশ দেয় তাকে বোনাস বলে। সাধারণত, বিমা গ্রহীতাদের কাছ থেকে অধিক অর্থ পাওয়ার জন্য বোনাস প্রদান করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন প্রকার বোনাসের বর্ণনা দেওয়া হলো:

১. তাৎক্ষণিক বোনাস: যখন বিমাকারী কোম্পানি মুনাফা ঘোষণা দেওয়ার সাথে সাথে মুনাফাযুক্ত পলিসির বিপরীতে বোনাস প্রদান করে, তখন তাকে তাৎক্ষণিক বোনাস বলে। 

২. বিলম্বিত বোনাস: যেক্ষেত্রে বিমা কোম্পানি কোন একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বিমাগ্রহীতাকে বোনাস প্রদান বন্ধ রেখে ভবিষ্যৎ কোন নির্ধারিত সময়ে বোনাস প্রদান করে, তাকে বিলম্বিত বোনাস বলে।

৩. অন্তবর্তীকালীন বোনাস: অনেক সময় বোনাস ঘোষণা ছাড়াও দু’টি বোনাসের মধ্যবর্তী সময় বিমাকারী যে বোনাস প্রদান করে, তাকে অন্তবর্তীকালীন বোনাস বলে। 

৪. টাইম বোনাস: এরূপ পলিসিতে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বোনাস প্রদান বন্ধ রাখা হয় এবং উক্ত সময়শেষে বিমাগ্রহীতা বেঁচে থাকলে তাকে বোনাস প্রদান করা হয়। কিন্তু বিমাগ্রহীতার মৃত্যু হলে নোমিনি বা উত্তরাধিকারীদের আর বোনাস প্রদান করা হয় না। এ ধরনের বোনাসকে টাইম বোনাস বলে। 

৫. অবদানভিত্তিক বোনাস: বিমাগ্রহীতা প্রিমিয়াম প্রদানের মাধ্যমে বিমা কোম্পানিতে কি পরিমাণ অবদান রাখে তার ভিত্তিতে বোনাস প্রদান করা হয়। সাধারণত, বিমাগ্রহীতাকে সহায়তা করার জন্য এ ধরনের বোনাস দেওয়া হয়। যার অবদান যত বেশি সে ততবেশী বোনাস পাবে, আর অবদান যত কম সে তত কম বোনাস পাবে। 

বার্ষিকবৃত্তি (Annuity)

বার্ষিকবৃত্তি হলো বৃত্তিধারীর অবশিষ্ট জীবনের জন্য বা কোন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্দিষ্ট সময় পরপর সমপরিমাণের অর্থ পরিশোধের ব্যবস্থা। এ ধরনের ব্যবস্থায় বিমাগ্রহীতা একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রিমিয়াম আকারে বিমা কোম্পানির কাছে জমা করে। এ জমাকৃত অর্থ মেয়াদশেষে একটি বড় আকারের মূলধনে পরিণত হয়। 

বিমাগ্রহীতার মৃত্যু হলে বা তার বৃদ্ধ বয়সে প্রতিমাসে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বিমা কোম্পানি অব্যাহতভাবে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করতে থাকে। এটাই মূলত: বার্ষিকবৃত্তি বা Annuity। সাধারণত, বার্ষিকবৃত্তি বছরে একবার প্রদান করা হয়, তবে বৃত্তিধারীর সুবিধার্থে ষান্মাসিক, ত্রৈমাসিক, এমনকি মাসিক হারেও বৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। বছরে সমস্থিতিতে দেওয়া হলে তাকে অধিবৃত্তি বলে।

সারকথা

বিমার মূল উপাদান হলো প্রিমিয়াম। বিমমা গ্রহীতা বিমাকারীকে ঝুঁকি গ্রহণের প্রতিদান হিসেবে প্রিমিয়াম প্রদান করে। কোনো বিমার প্রতিদান হিসেবে নিয়মমাফিক যে অর্থ পরিশোধ করা হয় তাকেপ্রিমিয়াম বলে। বিমার প্রিমিয়াম নির্ভর করে পলিসিগ্রহীতা কত টাকার বিমাপত্র গ্রহণ করছে তার উপর। পলিসির পরিমাণ বেশি হলে প্রিমিয়াম বেশি হবে, আর পলিসির পরিমাণ কম হলে প্রিমিয়াম কম হবে। পলিসির মেয়াদের উপর প্রিমিয়ামের হার নির্ভর করে। চুক্তির প্রকৃতির উপরও বিমার হার নির্ভর করে। কোম্পানি যদি বিমাগ্রহীতাকে বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ প্রদান করার শর্ত যুক্ত বিমাপত্র প্রদান করে, তবে প্রিমিয়ামের হার অপেক্ষাকৃত বেশি হবে। কোনো কোনো পলিসিতে বিমাগ্রহীতা বিমা কোম্পানির কাছে থেকে লাভের অংশ পেয়ে থাকে। যখন কোন বিমা কোম্পানি কোন বিমাগ্রহীতাকে তার লাভের অংশ দেয়, তাকে বোনাস বলে।

প্রিমিয়াম (Premium) 

বিমার মূল উপাদান হলো প্রিমিয়াম। বিমা গ্রহীতা বিমাকারীকে ঝুঁকি গ্রহণের প্রতিদান হিসেবে কিস্তিভিত্তিক প্রিমিয়াম প্রদান করে। প্রিমিয়াম হলো বিমা চুক্তির এমন একটি অপরিহার্য উপাদান যা বিমাকারীর প্রতিশ্রুতির প্রতিদানস্বরূপ। এ প্রিমিয়ামের পরিমাণ নির্ধারণ করার সময় নানা বিষয় বিচার বিবেচনা করতে হয়।

জীবনবিমার প্রিমিয়াম নির্ধারণকারী উপাদানসমূহ (Determining Factors of Premium)

জীবন বিমার প্রিমিয়াম নির্ধারণের সময় বিবেচ্যবিষয়গুলো নিচে আলোচনা করা হলো: 

১. বিমাপত্রের মূল্য: পলিসি বা বিমাপত্রের পরিমাণ বেশি হলে প্রিমিয়াম বেশি হবে, আর দাবীর পরিমাণ কম হলে প্রিমিয়াম কম হবে। এ কারণে পলিসি প্রিমিয়াম নির্ধারণের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। 

২. পলিসির মেয়াদ: পলিসির একটি মেয়াদ থাকে। পলিসি মেয়াদের উপর প্রিমিয়ামের হার নির্ভর করে। মেয়াদ বেশি হলে প্রিমিয়াম কম হবে, আবার মেয়াদ কম হলে প্রিমিয়াম বেশি হবে। 

৩. চুক্তির প্রকৃতি: বিমাতে যে যত বেশি সুবিধা গ্রহণ করবে তাকে তত বেশি প্রিমিয়াম দিতে হবে। 

৪. বিমায় ঝুঁকির প্রকৃতি: বিমার মাধ্যম ঝুঁকি প্রতিরোধ করা হয়। তাই বিমাকারী যত বেশি ঝুঁকি গ্রহণ করবে, প্রিমিয়ামের পরিমাণও তত বেশি হবে। অন্যদিকে কম ঝুঁকি সম্পন্ন পলিসি গ্রহণ করলে কম প্রিমিয়াম হবে।

বোনাস (Bonus)

বিমা কোম্পানি প্রিমিয়াম থেকে প্রাপ্ত অর্থ অন্যত্র লগ্নি করে মুনাফা অর্জন করে। তাই কোন কোন পলিসিতে বিমা গ্রহীতা বিমা কোম্পানির কাছ থেকে লাভের অংশ পেয়ে থাকে। যখন কোন বিমা কোম্পানি কোন বিমাগ্রহীতাকে তার লাভের অংশ দেয় তাকে বোনাস বলে। সাধারণত, বিমা গ্রহীতাদের কাছ থেকে অধিক অর্থ পাওয়ার জন্য বোনাস প্রদান করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন প্রকার বোনাসের বর্ণনা দেওয়া হলো:

১. তাৎক্ষণিক বোনাস: যখন বিমাকারী কোম্পানি মুনাফা ঘোষণা দেওয়ার সাথে সাথে মুনাফাযুক্ত পলিসির বিপরীতে বোনাস প্রদান করে, তখন তাকে তাৎক্ষণিক বোনাস বলে। 

২. বিলম্বিত বোনাস: যেক্ষেত্রে বিমা কোম্পানি কোন একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বিমাগ্রহীতাকে বোনাস প্রদান বন্ধ রেখে ভবিষ্যৎ কোন নির্ধারিত সময়ে বোনাস প্রদান করে, তাকে বিলম্বিত বোনাস বলে।

৩. অন্তবর্তীকালীন বোনাস: অনেক সময় বোনাস ঘোষণা ছাড়াও দু’টি বোনাসের মধ্যবর্তী সময় বিমাকারী যে বোনাস প্রদান করে, তাকে অন্তবর্তীকালীন বোনাস বলে। 

৪. টাইম বোনাস: এরূপ পলিসিতে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বোনাস প্রদান বন্ধ রাখা হয় এবং উক্ত সময়শেষে বিমাগ্রহীতা বেঁচে থাকলে তাকে বোনাস প্রদান করা হয়। কিন্তু বিমাগ্রহীতার মৃত্যু হলে নোমিনি বা উত্তরাধিকারীদের আর বোনাস প্রদান করা হয় না। এ ধরনের বোনাসকে টাইম বোনাস বলে। 

৫. অবদানভিত্তিক বোনাস: বিমাগ্রহীতা প্রিমিয়াম প্রদানের মাধ্যমে বিমা কোম্পানিতে কি পরিমাণ অবদান রাখে তার ভিত্তিতে বোনাস প্রদান করা হয়। সাধারণত, বিমাগ্রহীতাকে সহায়তা করার জন্য এ ধরনের বোনাস দেওয়া হয়। যার অবদান যত বেশি সে ততবেশী বোনাস পাবে, আর অবদান যত কম সে তত কম বোনাস পাবে। 

বার্ষিকবৃত্তি (Annuity)

বার্ষিকবৃত্তি হলো বৃত্তিধারীর অবশিষ্ট জীবনের জন্য বা কোন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্দিষ্ট সময় পরপর সমপরিমাণের অর্থ পরিশোধের ব্যবস্থা। এ ধরনের ব্যবস্থায় বিমাগ্রহীতা একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রিমিয়াম আকারে বিমা কোম্পানির কাছে জমা করে। এ জমাকৃত অর্থ মেয়াদশেষে একটি বড় আকারের মূলধনে পরিণত হয়। 

বিমাগ্রহীতার মৃত্যু হলে বা তার বৃদ্ধ বয়সে প্রতিমাসে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বিমা কোম্পানি অব্যাহতভাবে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করতে থাকে। এটাই মূলত: বার্ষিকবৃত্তি বা Annuity। সাধারণত, বার্ষিকবৃত্তি বছরে একবার প্রদান করা হয়, তবে বৃত্তিধারীর সুবিধার্থে ষান্মাসিক, ত্রৈমাসিক, এমনকি মাসিক হারেও বৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। বছরে সমস্থিতিতে দেওয়া হলে তাকে অধিবৃত্তি বলে।

সারকথা

বিমার মূল উপাদান হলো প্রিমিয়াম। বিমমা গ্রহীতা বিমাকারীকে ঝুঁকি গ্রহণের প্রতিদান হিসেবে প্রিমিয়াম প্রদান করে। কোনো বিমার প্রতিদান হিসেবে নিয়মমাফিক যে অর্থ পরিশোধ করা হয় তাকেপ্রিমিয়াম বলে। বিমার প্রিমিয়াম নির্ভর করে পলিসিগ্রহীতা কত টাকার বিমাপত্র গ্রহণ করছে তার উপর। পলিসির পরিমাণ বেশি হলে প্রিমিয়াম বেশি হবে, আর পলিসির পরিমাণ কম হলে প্রিমিয়াম কম হবে। পলিসির মেয়াদের উপর প্রিমিয়ামের হার নির্ভর করে। চুক্তির প্রকৃতির উপরও বিমার হার নির্ভর করে। কোম্পানি যদি বিমাগ্রহীতাকে বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ প্রদান করার শর্ত যুক্ত বিমাপত্র প্রদান করে, তবে প্রিমিয়ামের হার অপেক্ষাকৃত বেশি হবে। কোনো কোনো পলিসিতে বিমাগ্রহীতা বিমা কোম্পানির কাছে থেকে লাভের অংশ পেয়ে থাকে। যখন কোন বিমা কোম্পানি কোন বিমাগ্রহীতাকে তার লাভের অংশ দেয়, তাকে বোনাস বলে।

শেয়ার করুন

মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার তথ্য সংরক্ষিত রাখুন

বিশেষ শর্তসাপেক্ষে এই ওয়েবসাইটটি সামাজিক কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ কিংবা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নিকট বিক্রি করা হবে।

জীবনবিমায় প্রিমিয়াম, বোনাস এবং বার্ষিকবৃত্তি

প্রকাশ: ০৯:৫৯:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১

প্রিমিয়াম (Premium) 

বিমার মূল উপাদান হলো প্রিমিয়াম। বিমা গ্রহীতা বিমাকারীকে ঝুঁকি গ্রহণের প্রতিদান হিসেবে কিস্তিভিত্তিক প্রিমিয়াম প্রদান করে। প্রিমিয়াম হলো বিমা চুক্তির এমন একটি অপরিহার্য উপাদান যা বিমাকারীর প্রতিশ্রুতির প্রতিদানস্বরূপ। এ প্রিমিয়ামের পরিমাণ নির্ধারণ করার সময় নানা বিষয় বিচার বিবেচনা করতে হয়।

জীবনবিমার প্রিমিয়াম নির্ধারণকারী উপাদানসমূহ (Determining Factors of Premium)

জীবন বিমার প্রিমিয়াম নির্ধারণের সময় বিবেচ্যবিষয়গুলো নিচে আলোচনা করা হলো: 

১. বিমাপত্রের মূল্য: পলিসি বা বিমাপত্রের পরিমাণ বেশি হলে প্রিমিয়াম বেশি হবে, আর দাবীর পরিমাণ কম হলে প্রিমিয়াম কম হবে। এ কারণে পলিসি প্রিমিয়াম নির্ধারণের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। 

২. পলিসির মেয়াদ: পলিসির একটি মেয়াদ থাকে। পলিসি মেয়াদের উপর প্রিমিয়ামের হার নির্ভর করে। মেয়াদ বেশি হলে প্রিমিয়াম কম হবে, আবার মেয়াদ কম হলে প্রিমিয়াম বেশি হবে। 

৩. চুক্তির প্রকৃতি: বিমাতে যে যত বেশি সুবিধা গ্রহণ করবে তাকে তত বেশি প্রিমিয়াম দিতে হবে। 

৪. বিমায় ঝুঁকির প্রকৃতি: বিমার মাধ্যম ঝুঁকি প্রতিরোধ করা হয়। তাই বিমাকারী যত বেশি ঝুঁকি গ্রহণ করবে, প্রিমিয়ামের পরিমাণও তত বেশি হবে। অন্যদিকে কম ঝুঁকি সম্পন্ন পলিসি গ্রহণ করলে কম প্রিমিয়াম হবে।

বোনাস (Bonus)

বিমা কোম্পানি প্রিমিয়াম থেকে প্রাপ্ত অর্থ অন্যত্র লগ্নি করে মুনাফা অর্জন করে। তাই কোন কোন পলিসিতে বিমা গ্রহীতা বিমা কোম্পানির কাছ থেকে লাভের অংশ পেয়ে থাকে। যখন কোন বিমা কোম্পানি কোন বিমাগ্রহীতাকে তার লাভের অংশ দেয় তাকে বোনাস বলে। সাধারণত, বিমা গ্রহীতাদের কাছ থেকে অধিক অর্থ পাওয়ার জন্য বোনাস প্রদান করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন প্রকার বোনাসের বর্ণনা দেওয়া হলো:

১. তাৎক্ষণিক বোনাস: যখন বিমাকারী কোম্পানি মুনাফা ঘোষণা দেওয়ার সাথে সাথে মুনাফাযুক্ত পলিসির বিপরীতে বোনাস প্রদান করে, তখন তাকে তাৎক্ষণিক বোনাস বলে। 

২. বিলম্বিত বোনাস: যেক্ষেত্রে বিমা কোম্পানি কোন একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বিমাগ্রহীতাকে বোনাস প্রদান বন্ধ রেখে ভবিষ্যৎ কোন নির্ধারিত সময়ে বোনাস প্রদান করে, তাকে বিলম্বিত বোনাস বলে।

৩. অন্তবর্তীকালীন বোনাস: অনেক সময় বোনাস ঘোষণা ছাড়াও দু’টি বোনাসের মধ্যবর্তী সময় বিমাকারী যে বোনাস প্রদান করে, তাকে অন্তবর্তীকালীন বোনাস বলে। 

৪. টাইম বোনাস: এরূপ পলিসিতে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বোনাস প্রদান বন্ধ রাখা হয় এবং উক্ত সময়শেষে বিমাগ্রহীতা বেঁচে থাকলে তাকে বোনাস প্রদান করা হয়। কিন্তু বিমাগ্রহীতার মৃত্যু হলে নোমিনি বা উত্তরাধিকারীদের আর বোনাস প্রদান করা হয় না। এ ধরনের বোনাসকে টাইম বোনাস বলে। 

৫. অবদানভিত্তিক বোনাস: বিমাগ্রহীতা প্রিমিয়াম প্রদানের মাধ্যমে বিমা কোম্পানিতে কি পরিমাণ অবদান রাখে তার ভিত্তিতে বোনাস প্রদান করা হয়। সাধারণত, বিমাগ্রহীতাকে সহায়তা করার জন্য এ ধরনের বোনাস দেওয়া হয়। যার অবদান যত বেশি সে ততবেশী বোনাস পাবে, আর অবদান যত কম সে তত কম বোনাস পাবে। 

বার্ষিকবৃত্তি (Annuity)

বার্ষিকবৃত্তি হলো বৃত্তিধারীর অবশিষ্ট জীবনের জন্য বা কোন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্দিষ্ট সময় পরপর সমপরিমাণের অর্থ পরিশোধের ব্যবস্থা। এ ধরনের ব্যবস্থায় বিমাগ্রহীতা একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রিমিয়াম আকারে বিমা কোম্পানির কাছে জমা করে। এ জমাকৃত অর্থ মেয়াদশেষে একটি বড় আকারের মূলধনে পরিণত হয়। 

বিমাগ্রহীতার মৃত্যু হলে বা তার বৃদ্ধ বয়সে প্রতিমাসে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বিমা কোম্পানি অব্যাহতভাবে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করতে থাকে। এটাই মূলত: বার্ষিকবৃত্তি বা Annuity। সাধারণত, বার্ষিকবৃত্তি বছরে একবার প্রদান করা হয়, তবে বৃত্তিধারীর সুবিধার্থে ষান্মাসিক, ত্রৈমাসিক, এমনকি মাসিক হারেও বৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। বছরে সমস্থিতিতে দেওয়া হলে তাকে অধিবৃত্তি বলে।

সারকথা

বিমার মূল উপাদান হলো প্রিমিয়াম। বিমমা গ্রহীতা বিমাকারীকে ঝুঁকি গ্রহণের প্রতিদান হিসেবে প্রিমিয়াম প্রদান করে। কোনো বিমার প্রতিদান হিসেবে নিয়মমাফিক যে অর্থ পরিশোধ করা হয় তাকেপ্রিমিয়াম বলে। বিমার প্রিমিয়াম নির্ভর করে পলিসিগ্রহীতা কত টাকার বিমাপত্র গ্রহণ করছে তার উপর। পলিসির পরিমাণ বেশি হলে প্রিমিয়াম বেশি হবে, আর পলিসির পরিমাণ কম হলে প্রিমিয়াম কম হবে। পলিসির মেয়াদের উপর প্রিমিয়ামের হার নির্ভর করে। চুক্তির প্রকৃতির উপরও বিমার হার নির্ভর করে। কোম্পানি যদি বিমাগ্রহীতাকে বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ প্রদান করার শর্ত যুক্ত বিমাপত্র প্রদান করে, তবে প্রিমিয়ামের হার অপেক্ষাকৃত বেশি হবে। কোনো কোনো পলিসিতে বিমাগ্রহীতা বিমা কোম্পানির কাছে থেকে লাভের অংশ পেয়ে থাকে। যখন কোন বিমা কোম্পানি কোন বিমাগ্রহীতাকে তার লাভের অংশ দেয়, তাকে বোনাস বলে।

প্রিমিয়াম (Premium) 

বিমার মূল উপাদান হলো প্রিমিয়াম। বিমা গ্রহীতা বিমাকারীকে ঝুঁকি গ্রহণের প্রতিদান হিসেবে কিস্তিভিত্তিক প্রিমিয়াম প্রদান করে। প্রিমিয়াম হলো বিমা চুক্তির এমন একটি অপরিহার্য উপাদান যা বিমাকারীর প্রতিশ্রুতির প্রতিদানস্বরূপ। এ প্রিমিয়ামের পরিমাণ নির্ধারণ করার সময় নানা বিষয় বিচার বিবেচনা করতে হয়।

জীবনবিমার প্রিমিয়াম নির্ধারণকারী উপাদানসমূহ (Determining Factors of Premium)

জীবন বিমার প্রিমিয়াম নির্ধারণের সময় বিবেচ্যবিষয়গুলো নিচে আলোচনা করা হলো: 

১. বিমাপত্রের মূল্য: পলিসি বা বিমাপত্রের পরিমাণ বেশি হলে প্রিমিয়াম বেশি হবে, আর দাবীর পরিমাণ কম হলে প্রিমিয়াম কম হবে। এ কারণে পলিসি প্রিমিয়াম নির্ধারণের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। 

২. পলিসির মেয়াদ: পলিসির একটি মেয়াদ থাকে। পলিসি মেয়াদের উপর প্রিমিয়ামের হার নির্ভর করে। মেয়াদ বেশি হলে প্রিমিয়াম কম হবে, আবার মেয়াদ কম হলে প্রিমিয়াম বেশি হবে। 

৩. চুক্তির প্রকৃতি: বিমাতে যে যত বেশি সুবিধা গ্রহণ করবে তাকে তত বেশি প্রিমিয়াম দিতে হবে। 

৪. বিমায় ঝুঁকির প্রকৃতি: বিমার মাধ্যম ঝুঁকি প্রতিরোধ করা হয়। তাই বিমাকারী যত বেশি ঝুঁকি গ্রহণ করবে, প্রিমিয়ামের পরিমাণও তত বেশি হবে। অন্যদিকে কম ঝুঁকি সম্পন্ন পলিসি গ্রহণ করলে কম প্রিমিয়াম হবে।

বোনাস (Bonus)

বিমা কোম্পানি প্রিমিয়াম থেকে প্রাপ্ত অর্থ অন্যত্র লগ্নি করে মুনাফা অর্জন করে। তাই কোন কোন পলিসিতে বিমা গ্রহীতা বিমা কোম্পানির কাছ থেকে লাভের অংশ পেয়ে থাকে। যখন কোন বিমা কোম্পানি কোন বিমাগ্রহীতাকে তার লাভের অংশ দেয় তাকে বোনাস বলে। সাধারণত, বিমা গ্রহীতাদের কাছ থেকে অধিক অর্থ পাওয়ার জন্য বোনাস প্রদান করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন প্রকার বোনাসের বর্ণনা দেওয়া হলো:

১. তাৎক্ষণিক বোনাস: যখন বিমাকারী কোম্পানি মুনাফা ঘোষণা দেওয়ার সাথে সাথে মুনাফাযুক্ত পলিসির বিপরীতে বোনাস প্রদান করে, তখন তাকে তাৎক্ষণিক বোনাস বলে। 

২. বিলম্বিত বোনাস: যেক্ষেত্রে বিমা কোম্পানি কোন একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বিমাগ্রহীতাকে বোনাস প্রদান বন্ধ রেখে ভবিষ্যৎ কোন নির্ধারিত সময়ে বোনাস প্রদান করে, তাকে বিলম্বিত বোনাস বলে।

৩. অন্তবর্তীকালীন বোনাস: অনেক সময় বোনাস ঘোষণা ছাড়াও দু’টি বোনাসের মধ্যবর্তী সময় বিমাকারী যে বোনাস প্রদান করে, তাকে অন্তবর্তীকালীন বোনাস বলে। 

৪. টাইম বোনাস: এরূপ পলিসিতে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বোনাস প্রদান বন্ধ রাখা হয় এবং উক্ত সময়শেষে বিমাগ্রহীতা বেঁচে থাকলে তাকে বোনাস প্রদান করা হয়। কিন্তু বিমাগ্রহীতার মৃত্যু হলে নোমিনি বা উত্তরাধিকারীদের আর বোনাস প্রদান করা হয় না। এ ধরনের বোনাসকে টাইম বোনাস বলে। 

৫. অবদানভিত্তিক বোনাস: বিমাগ্রহীতা প্রিমিয়াম প্রদানের মাধ্যমে বিমা কোম্পানিতে কি পরিমাণ অবদান রাখে তার ভিত্তিতে বোনাস প্রদান করা হয়। সাধারণত, বিমাগ্রহীতাকে সহায়তা করার জন্য এ ধরনের বোনাস দেওয়া হয়। যার অবদান যত বেশি সে ততবেশী বোনাস পাবে, আর অবদান যত কম সে তত কম বোনাস পাবে। 

বার্ষিকবৃত্তি (Annuity)

বার্ষিকবৃত্তি হলো বৃত্তিধারীর অবশিষ্ট জীবনের জন্য বা কোন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্দিষ্ট সময় পরপর সমপরিমাণের অর্থ পরিশোধের ব্যবস্থা। এ ধরনের ব্যবস্থায় বিমাগ্রহীতা একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রিমিয়াম আকারে বিমা কোম্পানির কাছে জমা করে। এ জমাকৃত অর্থ মেয়াদশেষে একটি বড় আকারের মূলধনে পরিণত হয়। 

বিমাগ্রহীতার মৃত্যু হলে বা তার বৃদ্ধ বয়সে প্রতিমাসে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বিমা কোম্পানি অব্যাহতভাবে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করতে থাকে। এটাই মূলত: বার্ষিকবৃত্তি বা Annuity। সাধারণত, বার্ষিকবৃত্তি বছরে একবার প্রদান করা হয়, তবে বৃত্তিধারীর সুবিধার্থে ষান্মাসিক, ত্রৈমাসিক, এমনকি মাসিক হারেও বৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। বছরে সমস্থিতিতে দেওয়া হলে তাকে অধিবৃত্তি বলে।

সারকথা

বিমার মূল উপাদান হলো প্রিমিয়াম। বিমমা গ্রহীতা বিমাকারীকে ঝুঁকি গ্রহণের প্রতিদান হিসেবে প্রিমিয়াম প্রদান করে। কোনো বিমার প্রতিদান হিসেবে নিয়মমাফিক যে অর্থ পরিশোধ করা হয় তাকেপ্রিমিয়াম বলে। বিমার প্রিমিয়াম নির্ভর করে পলিসিগ্রহীতা কত টাকার বিমাপত্র গ্রহণ করছে তার উপর। পলিসির পরিমাণ বেশি হলে প্রিমিয়াম বেশি হবে, আর পলিসির পরিমাণ কম হলে প্রিমিয়াম কম হবে। পলিসির মেয়াদের উপর প্রিমিয়ামের হার নির্ভর করে। চুক্তির প্রকৃতির উপরও বিমার হার নির্ভর করে। কোম্পানি যদি বিমাগ্রহীতাকে বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ প্রদান করার শর্ত যুক্ত বিমাপত্র প্রদান করে, তবে প্রিমিয়ামের হার অপেক্ষাকৃত বেশি হবে। কোনো কোনো পলিসিতে বিমাগ্রহীতা বিমা কোম্পানির কাছে থেকে লাভের অংশ পেয়ে থাকে। যখন কোন বিমা কোম্পানি কোন বিমাগ্রহীতাকে তার লাভের অংশ দেয়, তাকে বোনাস বলে।