থর্নডাইক, প্যাভলভ ও স্কিনারের শিখন পদ্ধতি
- প্রকাশ: ০২:৪১:৩৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২১
- / ১৬২৫২ বার পড়া হয়েছে
শিখন কীভাবে হয় সে সম্পর্কে যে সকল মনোবিজ্ঞানী বিভিন্ন তত্ত্ব দিয়েছেন বা মতবাদ ব্যক্ত করেছেন তাঁদের মধ্যে সেরা তিনজন হলেন এডওয়ার্ড এল. থর্নডাইক (Edward L. Thorndike), আইভান প্যাভলভ (Ivan Pavlov) এবং বি. এফ. স্কিনার (Burrhus Frederic Skinner)।
এই তিন মনোবিজ্ঞানীর মধ্যে এডওয়ার্ড থর্নডাইক সংযোজনবাদী মনোবিজ্ঞানী হিসাবে পরিচিত। তাঁর মতে উদ্দীপক ও প্রতিক্রিয়ার মধ্যে সংযোগ স্থাপনের ফলে শিখন কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। রাশিয়ার শরীরতত্ত্ববিদ আইভান প্যাভলভ প্রতিবর্তক্রিয়া সম্পর্কে মতামত দিয়েছেন। এবং বি. এফ স্কিনারের মতে শিখন মতবাদের মূল কথাই হচ্ছে প্রাণীর সন্তুষ্টি বা তৃপ্তি লাভ।
এখানে তিন জনের শিখন পদ্ধতি উল্লেখ করা হলো-
এডওয়ার্ড থর্নডাইকের শিখন পদ্ধতি
এডওয়ার্ড এল. থর্নডাইক একজন সংযোজনবাদী। থর্নডাইক যে পদ্ধতির শিখন মতবাদের ব্যক্ত করেছেন সে পদ্ধতির মূল কথা হলো- ‘উদ্দীপক ও প্রতিক্রিয়ার মধ্যে নির্ভূল সংযোগ স্থাপন’।
সংযোজনবাদের অপর নাম প্রচেষ্টা ও ভুল সংশোধন মতবাদ। এই সংযোজনবাদের উদ্ভাবক এডওয়ার্ড এল. থর্নডাইক।
থর্নডাইক বলেছেন, “উদ্দীপক আর প্রতিক্রিয়ার মধ্যে সঠিক সংযোগ স্থাপনই হলো শিখন”।
থর্নডাইকের মতে, সঠিক সংযোগ স্থাপনের জন্য প্রাণী বার বার চেষ্টা করে ভুলগুলোকে শুধরে নেয় এবং এক সময় সঠিক সংযোগ স্থাপনে সমর্থ হয়; আর তখনই বলা হয় শিখন সম্পূর্ণ হয়েছে।
আই প্যাভলভের শিখন পদ্ধতি
আইভান প্যাভলভ ছিলেন রাশিয়ার একজন শরীরতত্ত্ববিদ। প্যাভলভ বলেছেন, “নিরপেক্ষ উদ্দীপককে স্বাভাবিক উদ্দীপকের সঙ্গে বার বার সংযুক্ত করলে এক সময় নিরপেক্ষ উদ্দীপকই সাপেক্ষ উদ্দীপকে রূপান্তরিত হয় এবং সেই সাপেক্ষ উদ্দীপক দিয়ে সাপেক্ষ প্রতিক্রিয়া ঘটানো সম্ভব; এই শিখনকে প্রতিবর্ত ক্রিয়া বলা হয়”। সাপেক্ষ-প্রতিবর্ত ক্রিয়ার প্রবক্তা প্যাভলভ।
সাপেক্ষীকরণ নিয়ে প্যাভলভ সর্বপ্রথম পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়েছিলেন বলেই এই মতবাদকে ‘চিরায়ত সাপেক্ষীকরণ’ বলা হয়। আসল উদ্দীপকের সাথে একটি কৃত্রিম উদ্দীপক বার বার উপস্থাপিত হলে যে প্রতিক্রিয়া হয় পরবর্তীতে শুধু কৃত্রিম উদ্দীপকের উপস্থিতিতেই অনুরূপ প্রতিক্রিয়া হওয়াকে সাপেক্ষীকরণ বলে।
স্কিনারের শিখন পদ্ধতি
মনোবিজ্ঞানী বি. এফ. স্কিনার এর মতে, ‘যে সব আচরণ বা প্রতিক্রিয়া ব্যক্তির বা প্রাণীর জীবনে কোন প্রয়োজন সাধন করে বা কোন প্রেষণা নিবৃত্তি করতে সাহায্য করে সে আচরণ শিখনকে করণ শিখন বলে।’
কারণ শিখনে মূল কথা হলো প্রাণীর সন্তুষ্টি বা তৃপ্তি লাভ।
কোন আচরণের পরিবর্তন বা শিখন তখনই সম্ভব হবে যখন তা করার সঙ্গে সঙ্গে ব্যক্তি পুরস্কৃত হয় (তৃপ্তি লাভ করে বা সন্তুষ্ট হয়)। শিক্ষক শিক্ষাদানের সময় খেয়াল রাখবেন শিখন হবে আগের কোন কিছুর উপর ভিত্তি করে। শিক্ষার্থীকে মাঝে মাঝে পুরস্কৃত (reinforcement) করতে হবে।