বিপণন কার্যক্রম, ক্রেতা সম্পর্ক ও ভ্যালু অর্জন
- প্রকাশ: ১১:৫৯:২৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ নভেম্বর ২০২১
- / ৫১২৩ বার পড়া হয়েছে
বিপণন প্রক্রিয়ায় (Marketing Process) প্রথমেই বাজার ও ক্রেতার প্রয়োজন সম্পর্কে জানার পর বিপণনকারী ক্রেতা ভ্যালু সৃষ্টি করার জন্য বিপণন কৌশল কেমন হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। পরবর্তীতে, বিপণনকারী বিপণন কার্যক্রম নির্ধারণ করে এবং ক্রেতা সম্পর্ক তৈরির জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করে। সর্বশেষে বিপণনকারী ক্রেতা ভ্যালু সৃষ্টির বিনিময়ে মুনাফা ও ক্রেতা ইক্যুইটি অর্জন করে।
এখানে যা আছে
সমন্বিত বিপণন কার্যক্রম প্রস্তুতকরণ (Functions of Marketing Management)
কোনো প্রতিষ্ঠানের বিপণন কৌশলের মাধ্যমে ক্রেতার জন্য ভ্যালু সৃষ্টি করা হবে এবং কীভাবে এই ভ্যালু প্রদান করা হবে তার রূপরেখা নকশা করা হয়। এরপর বিপণনকারী লক্ষ্য ক্রেতার জন্য সমন্বিত বিপণন কার্যক্রম প্রস্তুত করে।
কার্যকরভাবে বিপণন কৌশলকে বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিপণন কার্যক্রম সুদৃঢ় ক্রেতা সম্পর্ক তৈরি করতে পারে। বিপণন কার্যক্রমের প্রধান চারটি উপাদান হলো— পণ্য (products), মূল্য (price), প্রসার (promotion), ও স্থান বা বণ্টন (place), যা বিপণন মিশ্রণ নামেও পরিচিত। এই উপাদানগুলোকে 4P (ফোর পি) বলা হয়। এ বিষয়ে পরবর্তী ইউনিটে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
ক্রেতা সম্পর্ক তৈরি (Building Customer Relationship)
বিপণন প্রক্রিয়ায় প্রথম তিনটি ধাপ: বাজার ও ক্রেতার প্রয়োজন সম্পর্কে জানা, ক্রেতা ভ্যালু সৃষ্টি করার জন্য বিপণন কৌশল ও বিপণন কার্যক্রম নির্ধারণ সম্পন্ন করার মূল উদ্দেশ্যই হলো চতুর্থ ধাপ ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি অর্জন করা; তা হলো— ক্রেতা সম্পর্ক তৈরি ও লাভজনক ক্রেতা সম্পর্ক বজায় রাখা। বিপণনে ক্রেতা সম্পর্ক ব্যবস্থাপনা (Customer relationship management হলো এমন একটি সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে উচ্চতর ক্রেতা ভ্যালু ও সন্তুষ্টি সরবরাহের বিনিময়ে লাভজনক ক্রেতা সম্পর্ক তৈরি ও বজায় রাখা হয়।
১. ক্রেতা ভ্যালু ও ক্রেতা সন্তুষ্টি (Customer Value and Customer Satisfaction)
ক্রেতা সম্পর্ক তৈরির ক্ষেত্রে ক্রেতা ভ্যালু ও ক্রেতা সন্তুষ্টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভ্যালু হলো কোনো পণ্য ভোগ বা ব্যবহারের মাধ্যমে অর্জিত সুবিধা।
কোনো পণ্য গ্রহণ ও ব্যবহারের বিনিময়ে ক্রেতা কার্যভিত্তিক ও আবেগময়ী সুবিধা পেয়ে থাকে। আবার সেই পণ্য গ্রহণের জন্য ক্রেতা অর্থ, সময়, শক্তি ইত্যাদি ব্যয় করে। যেমন: ক্রেতা কোনো কলম ক্রয় করে ব্যবহার বা ভোগ করার কার্যভিত্তিক মূল সুবিধা হলো মসৃণভাবে লিখতে পারা। এ সুবিধা অর্জন করার জন্য ক্রেতাকে যেসব কিছু ব্যয় করতে হয়েছে তা হলো ক্রেতাকে শক্তি ব্যয় করে দোকানে যেতে হয়েছে, সময় ব্যয় করে কলম পছন্দ করেছে এবং নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে কলমটি ক্রয় করতে হয়েছে।
সুতরাং, ক্রেতা ভ্যালু = ক্রেতার সুবিধাসমূহ − ক্রেতার ব্যয়সমূহ।
পণ্য বা সেবার মান, মূল্য, ব্র্যান্ড ইত্যাদির সমন্বয়ে ক্রেতার মধ্যে সেই পণ্য বা সেবা সম্পর্কে একটি মনোভাব তৈরি হয়, যার ভিত্তিতে ক্রেতার ভ্যালু নির্ধারিত হয়।
আবার, ক্রেতা কোনো পণ্য বা সেবা ক্রয়ের সময় যেসব সুবিধা প্রত্যশা করে, তার সাথে ব্যবহারের পর প্রাপ্ত সুবিধার তুলনা করে ক্রেতার মধ্যে যে আনন্দ বা নৈরাশ্যের অনুভূতি সৃষ্টি হয় তাকে সন্তুষ্টি বা অসন্তুষ্টি বলে। ভোক্তা তার প্রত্যাশা অনুসারে পণ্য বা সেবা হতে সুবিধা পেলে সন্তুষ্ট হবে এবং না পেলে অসন্তুষ্ট হবে। যেমন: পাঁচ টাকা দিয়ে কোনো কলম ক্রয় করার পর, প্রথমবার ব্যবহার করার পরপরই নষ্ট হয়ে গেলে ক্রেতার মধ্যে অসন্তুষ্টির সৃষ্টি হবে; কারণ ক্রেতার মধ্যে প্রত্যাশা ছিল যে সে কলমটি বেশ কয়েক দিন ব্যবহার করতে পারবে।
আবার ক্রেতা পাঁচ টাকা দিয়ে কলমটি ক্রয় করার পর তার প্রত্যাশামতো ব্যবহার করতে পারলে তার মাঝে সন্তুষ্টির মনোভাব তৈরি হবে। আর কলমটি যদি ক্রেতার প্রত্যাশার চেয়ে বেশি দিন নির্বিঘ্নে ব্যবহার করতে পারে, শুধু তাই নয় এই কলম দিয়ে লেখার জন্য যদি প্রশংসা পায়, তাহলে ক্রেতা বেশি সন্তুষ্ট হবে, যা সে প্রত্যাশাও করেনি। সন্তুষ্টির একেকটি পর্যায়ের জন্য ক্রেতা ভিন্ন আচরণ করে থাকে।
অসন্তুষ্ট ক্রেতা (Dissatisfied Customer) কখনো পণ্যটি দ্বিতীয়বার ক্রয় করবে না এবং অন্য ক্রেতাকে ক্রয় করতে নিরুৎসাহী করবে। সন্তুষ্ট ক্রেতা (Satisfied Customer) পণ্যটি দ্বিতীয়বার ক্রয় করতেও পারে আবার নাও করতে পারে। আর বেশি সন্তুষ্ট ক্রেতা/আনন্দিত ক্রেতা (Over-Satisfied Customer/Delighted Customer) বারবার পণ্যটি ক্রয় করবে, যাকে বিশ্বস্ত ক্রেতা (Loyal Customer) বলা হয়। শুধু তাই নয়, বিশ্বস্ত ক্রেতা তার পরিচিত সবাইকে ক্রয় করতে উৎসাহ দেবে। এ কারণে ক্রেতা সন্তুষ্টি অর্জন করা একজন বিপণনকারীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
২. ক্রেতার সম্পৃক্ততা (Customer Engagement)
বর্তমান সময়ে ডিজিটাল টেকনোলজি (Digital technology) ইন্টারনেট, মোবাইল, সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যাপক ব্যবহারের কারণে বিপণন কার্যক্রমে পরিবর্তন এসেছে। বিপণনকারী এখন এইসব ডিজিটাল টেকনোলজি ব্যবহার করে বিভিন্নভাবে ক্রেতাদের সাথে সংযোগ স্থাপন করার চেষ্টা করছে। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে ক্রেতা তার পরিচিতজন বা কমিউনিটিতে (community) সাধারণ কথোপথনের মাধ্যমে তার পছন্দ বা অপচ্ছন্দের পণ্য সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য, অভিজ্ঞতা বা অনুভূতি প্রকাশ করে।
তাই ক্রেতারা যেসব ডিজিটাল টেকনোলজি ব্যবহার করে সেখানে কোম্পানির নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডের উপস্থিতি ও অনুকূল অবস্থান নিশ্চিত করার জন্য বিপণনকারী নানারকম কার্যক্রম গ্রহণ করে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কোনো নতুন পণ্য বাজারে আনার সময় বিপণনকারী বর্তমান সময়ে ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউবসহ বিভিন্ন ডিজিটাল মিডিয়াতেও বিজ্ঞাপন বা সংবাদ প্রচার করে। এর ফলে সোশ্যাল মিডিয়াতে কোনো ক্রেতার কাছে এই নতুন পণ্য ভালো লাগলে সেটি সে খুব সহজেই আরেকজনকে জানাতে বা ঝযধৎব করতে পারে। অনেক বিপণনকারী এখন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে এমন বর্তমান ও ভবিষ্যৎ ক্রেতার সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য বিশেষভাবে কাজ করে।
৩. অংশীদার সম্পর্ক ব্যবস্থাপনা (Partner Relationship Management)
একজন বিপণনকারীর পক্ষে সম্পূর্ণ এককভাবে ক্রেতা ভ্যালু সৃষ্টি করা সম্ভব নয়, বরং বিভিন্ন অংশীদারসহ সম্মিলিত প্রচেষ্টাতে ক্রেতা ভ্যালু সৃষ্টি সম্ভব।
বিভিন্ন পক্ষ বা অংশীদারদের সমান অবদানের মাধ্যমেই বিপণনকারী তার কার্যক্রম যথাযথভাবে সম্পাদন করতে পারে। যে-কোনো ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক অনেক অংশীদার থাকে যারা প্রতিষ্ঠানের খুব কাছাকাছি অবস্থান করে এবং সম্মিলিত অবদান রাখার কারণে বৃহত্তর ক্রেতা ভ্যালু সৃষ্টি ও সরবরাহ করা সম্ভব হয়। যেমন: কাঁচামাল সরবরাহকারী, পাইকারি, খুচরা ব্যবসায়ী, মধ্যস্থ ব্যবসায়ী।
আবার, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন বিভাগ— হিসাব, মানবসম্পদ, উৎপাদন, বিক্রয়, গবেষণা ইত্যাদি। এই অংশীদারদের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের মাধ্যমেই ক্রেতা ভ্যালু সৃষ্টি ও সরবরাহ করা সম্ভব হয়। এ জন্য বিপণনকারীকে অংশীদারদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে ভ্যালু চেইন একটি অত্যাবশ্যকীয় বিষয়।
অধিক সন্তোষজনক ক্রেতা ভ্যালু সৃষ্টি করার জন্য ভ্যালু শিকল (Value Chain) প্রয়োজনীয়। এ ভ্যালু চেইনে পণ্য নকশাকরণ থেকে, উৎপাদন, সরবরাহ এবং সমর্থনমূলক কার্যাবলি অন্তর্ভুক্ত। ভ্যালু চেইন সংশ্লিষ্ট কার্যাবলি সম্পাদন করার জন্য প্রতিষ্ঠান অর্থ ব্যয় করে। এর মধ্যে প্রাথমিক (Primary) কাজগুলো হলো ইনবাউন্ড লজিস্টিকস (Inbound Logistics)-এর মাধ্যমে কাঁচামাল সংগ্রহ করে পণ্য উৎপাদনের কার্য (Operations) করা, এরপর আউটবাউন্ড লজিস্টিকস (Outbound Logistics) ব্যবহার করে পণ্য ক্রেতার কাছে পৌঁছে দেওয়া; এর সাথে সাথে বিপণন ও বিক্রয় (Marketing and Sales) কার্যক্রমের মাধ্যমে ক্রেতাকে পণ্য ক্রয় করতে আগ্রহী করা এবং পণ্যের মালিকানা হস্তান্তর করা। সর্বশেষে যথোপযুক্তভাবে সেবা প্রদান (Service) করে ক্রেতাকে সন্তুষ্ট করা। ভ্যালু চেইনে যেসব উপাদান সহযোগী কার্যক্রম সম্পাদন করে— ফার্মের অবকাঠামো (Firm’s Infrastructures), মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা (Human Resources Management), প্রযুক্তির উন্নয়ন (Technology Development) ও প্রকিউরমেন্ট (Procurement) বা কাঁচামাল সংগ্রহ। প্রতিষ্ঠান প্রত্যেকটি ভ্যালু সৃষ্টিকারী কাজের খরচ ও কার্যকারিতা পরীক্ষা করে ও তা উন্নয়নের উপায় খুঁজে বের করে। প্রতিটি বিভাগ কতটা ভালোভাবে কাজটি সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে সম্পাদন করেছে তার ওপর প্রতিষ্ঠানের সাফল্য নির্ভর করে।
ক্রেতার ভ্যালু অর্জন (Capturing Value from Customers)
বিপণন প্রক্রিয়ায় প্রথম চারটি ধাপে কীভাবে ক্রেতার ভ্যালু সৃষ্টি করে দীর্ঘ মেয়াদে লাভজনক সম্পর্ক তৈরি করা যায় ও তা ধরে রাখা যায় তা আলোচনা করা হয়েছে। এরফলে বিপণনকারী দীর্ঘ মেয়াদে ক্রেতার বিশ্বস্ততা, ক্রেতার অংশ ও ক্রেতা ইক্যুইটি অর্জন করে।
বর্তমানে তীব্র প্রতিযোগিতা ও তথ্য-প্রযুক্তির কারণে ক্রেতা অনেক সচেতন ও মূল্য সংবেদনশীল; তাই ক্রেতাকে হয়তো সন্তুষ্ট করা সহজ কিন্তু আনন্দিত বা বিশ্বস্ত ক্রেতা তৈরি করা অনেক বেশি কঠিন। কিন্তু বিশ্বস্ত ক্রেতাকে ধরে রাখা (Retention) বিপণনকারীর জন্য আর্থিকভাবে লাভজনক। কারণ বিশ্বস্ত ক্রেতাকে ধরে রাখার জন্য যে ব্যয় বিপণনকারীকে করতে হয় তার থেকে অনেক বেশি খরচ করতে হয় নতুন ক্রেতাকে অর্জন করতে।
অন্যদিকে, একজন বিশ্বস্ত ক্রেতা হারানোর অর্থ সেই ক্রেতার আজীবন ভ্যালু (Customer lifetime value) হারানো। ক্রেতার আজীবন ভ্যালু হলো আজীবন পৃষ্ঠপোষকতায় একজন ক্রেতা যতগুলো ক্রয় করতে পারে তার সম্পূর্ণ মূল্য। ক্রেতাকে ধরে রাখা ছাড়াও বিপণনকারীকে গুরুত্ব দিতে হয় যে সে কতটুকু ক্রেতা অংশ (Share of Customer) দখল করতে পেরেছে।
ক্রেতা অংশ হলো ক্রেতা কোনো নির্দিষ্ট পণ্য বিভাগের মধ্যে যত ক্রয় করে তার মধ্যে নির্দিষ্ট ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান কতটুকু অংশ নিতে পেরেছে। বিপণনকারী ক্রেতা অংশ বাড়ানোর জন্য বর্তমান ক্রেতাদের জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করে। যেকোনো বিপণনকারীর জন্য ক্রেতা সম্পর্ক তৈরির উদ্দেশ্যই হলো যেনো উচ্চ ক্রেতা ইক্যুইটি সৃষ্টি করতে পারে।
ক্রেতা ইক্যুইটি (Customer equity) হলো সকল ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সমস্ত বর্তমান ও ভবিষ্যৎ ক্রেতাদের সম্মিলিত আজীবন ক্রেতা ভ্যালু। এটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যতের ক্রেতাভিত্তি পরিমাপ করতে সাহায্য করে। একটি প্রতিষ্ঠানের বেশি সংখ্যক লাভজনক বিশ্বস্ত ক্রেতা থাকা মানেই হলো তার ক্রেতা ইক্যুইটি বেশি।
সারসংক্ষেপ |
কোনো প্রতিষ্ঠানের বিপণন কৌশলের মাধ্যমে কোনো ক্রেতার জন্য ভ্যালু সৃষ্টি করা হয় এবং কীভাবে এই ভ্যালু প্রদান করা হবে তার রূপরেখা নকশা করা হয়। এরপর বিপণনকারী লক্ষ্য ক্রেতার জন্য সমন্বিত বিপণন কার্যক্রম প্রস্তুত করে। বিপণন কার্যক্রমের প্রধান চারটি উপাদান হলো— পণ্য (Products), মূল্য (Value), প্রসার (Promotion), ও স্থান বা বণ্টন (Place); এগুলোকে একত্রে ‘বিপণন মিশ্রণ’ বা 4P (ফোর পি) বলা হয়। বিপণনে ক্রেতা সম্পর্ক ব্যবস্থাপনা হলো এমন একটি সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে উচ্চতর ক্রেতা ভ্যালু ও সন্তুষ্টি সরবরাহের বিনিময়ে লাভজনক ক্রেতা সম্পর্ক তৈরি ও বজায় রাখা হয়। ভ্যালু হলো কোনো পণ্য ভোগ বা ব্যবহারের মাধ্যমে অর্জিত সুবিধা। ক্রেতা কোনো পণ্য বা সেবা ক্রয়ের সময় যেসব সুবিধা প্রত্যশা করে, তার সাথে ব্যবহারের পর প্রাপ্ত সুবিধার তুলনা করে ক্রেতার মধ্যে যে আনন্দ বা নৈরাশ্যের অনুভূতি সৃষ্টি হয় তাকে সন্তুষ্টি বা অসন্তুষ্টি বলে। বিপণনকারী এখন এইসব ডিজিটাল টেকনোলজি ব্যবহার করে বিভিন্নভাবে ক্রেতাদের সাথে সংযোগ স্থাপন করার চেষ্টা করছে। যেকোনো ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক অনেক অংশীদার থাকে যারা প্রতিষ্ঠানের খুব কাছাকাছি অবস্থান করে এবং সম্মিলিত অবদান রাখার কারণে বৃহত্তর ক্রেতা ভ্যালু সৃষ্টি ও সরবরাহ করা সম্ভব হয়। বিপণন প্রক্রিয়ায় প্রথম চারটি ধাপে কীভাবে ক্রেতার ভ্যালু সৃষ্টি করে দীর্ঘ মেয়াদে লাভজনক সম্পর্ক তৈরি করা যায় ও তা ধরে রাখা যায় তা আলোচনা করা হয়েছে। এর ফলস্বরূপ বিপণনকারী দীর্ঘ মেয়াদে ক্রেতার বিশ্বস্ততা, ক্রেতার অংশ ও ক্রেতা ইক্যুইটি অর্জন করে। |