কার্যকর নির্দেশনা ও নেতৃত্বে যোগাযোগের ভূমিকা
- প্রকাশ: ১১:৪৪:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ নভেম্বর ২০২১
- / ১২৪৮ বার পড়া হয়েছে
কোনো গোষ্ঠী বা প্রতিষ্ঠানের উন্নতির জন্য যোগ্য নেতৃত্ব বা লিডারশিও খুবই গুরুত্বপূর্ণ | August de Richelieu/Pexels
কার্যকর নির্দেশনা ও নেতৃত্বে যোগাযোগের ভূমিকা (Role of Communication in Effective Direction & Leadership)
একটি প্রতিষ্ঠানকে সুচারুরূপে পরিচালনার জন্য এতে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ, বিভিন্ন বিভাগ, উপ-বিভাগের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে হয়। এ যোগাযোগের মাধ্যমেই ব্যবস্থাপক কর্মীদের কার্য সম্পাদনের পথ নির্দেশ করেন, দক্ষ নেতৃত্ব সৃষ্টি করেন। ফলে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনের পথ প্রশস্ত হয়। একটি প্রতিষ্ঠানের কার্যকর নির্দেশনা ও নেতৃত্বদানের ক্ষেত্রে যোগাযোগের ভূমিকা যে কত বেশি তা নিম্নোক্ত আলোচনায় স্পষ্ট হয়ে উঠবে:
- পরিকল্পনা বাস্তবায়ন (Implementation of plan): প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনাকে বাস্তবে রূপদানের লক্ষ্যে কর্মীদের প্রতিনিয়তই আদেশ, নির্দেশ, উপদেশ ও পরামর্শ প্রদান করতে হয। এসব কার্মকান্ড সম্ভব হয় কেবল উর্ধ্বতনের সাথে অধস্তনের কার্যকরী যোগাযোগের মাধ্যমেই।
- দক্ষ যোগাযোগ (Efficient communication): ব্যবস্থাপক কর্তৃক কর্মীদেরকে পরিচালনা করার প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে যোগাযোগ। কোন কাজ কিভাবে সম্পাদন করা হবে সেসব বিষয়ে পরিচালক কর্মীদেরকে সঠিক পথ দেখান। আর এসব সম্ভব হয় সুষ্ঠু যোগাযোগের মাধ্যমেই।
- কার্যকর সংগঠিতকরণ (Effective organising): প্রতিষ্ঠানের কার্যাবলি সম্পাদনের উদ্দেশ্যে কাঁচামাল সন্নিবেশকরতে হয়, লোকবল নিয়োগ করতে হয়, যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করতে হয় এবং মূলধনের যোগাড় করতে হয়। সঠিক সময়ে, সঠিক উপায়ে এগুলোর সংগ্রহ করা ও প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে বিতরণ করার জন্য সঠিক যোগাযোগের উপরই সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করতে হয়।
- সিদ্ধান্তের দ্রুত বাস্তবায়ন (Rapid implementation of decision): উর্ধ্বতন ব্যবস্থাপক কর্তৃক গৃহীত সকল সিদ্ধান্ত দ্রুত ও সঠিক বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যোগাযোগ এক বিশেষ ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। কেননা যোগাযোগের মাধ্যমেই যথানিয়মে ও যথাসময়ে সিদ্ধান্ত সকল পক্ষের নিকট পৌঁছে।
- শ্রমিক-ব্যবস্থাপনা সম্পর্ক (Labour-management relationship): কার্যকর যোগাযোগ শ্রমিক ব্যবস্থাপনার মধ্যে সব ধরনের ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটায়। ফলে নির্দেশনা ও নেতৃত্ব সঠিকভাবে কার্যকরী হতে পারে।
- পরামর্শমূলক নির্দেশনায় যোগাযোগ (Communication in consultative direction): গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব ও পরামর্শমূলক নির্দেশনায় কর্মীদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে কর্মীদের মতামত নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এ জাতীয় দ্বি-মুখী যোগাযোগ নির্দেশনা ও নেতৃত্ব কার্যকর করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- সম্প্রীতি ও আনুগত্য (Cordiality and Loyalty): উর্ধ্বতন ও অধস্তনদের মধ্যে সুষ্ঠু যোগাযোগ পারস্পরিক সম্প্রীতি সৃষ্টি করে এবং উর্ধ্বতন ব্যক্তিদের প্রতি শ্রমিক-কর্মীদের আনুগত্য বাড়ায়; এতে নেতৃত্ব অর্থপূর্ণ হয়।
উপরের আলোচনা থেকে এটা অত্যন্ত স্পষ্ট যে, যে-কোনো সংগঠনের নির্দেশনা ও নেতৃত্বকে সফলতার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যেতে হলে যোগাযোগের কোনো বিকল্প নেই। যোগাযোগ সকল কাজ, সকল মত ও পথের মধ্যে সুষ্ঠু সমন্বয়সাধনের মাধ্যমে নির্দেশনা বাস্তবায়নে ও নেতৃত্বের সুষ্ঠু বিকাশে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। সুতরাং কার্যকর নির্দেশনা ও নেতৃত্বে যোগাযোগের ভূমিকা অপরিহার্য।