কাসিদ রিভিউ: পলাশী যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এক দুর্দান্ত ঐতিহাসিক উপন্যাস
- প্রকাশ: ০৩:৪৯:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ মার্চ ২০২১
- / ১১৯৩ বার পড়া হয়েছে
‘কাসিদ’ হলো জয়দীপ দে রচিত পলাশী যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে লেখা ঐতিহাসিক উপন্যাস। বইটি প্রথম প্রকাশ করেছিল ঢাকার দেশ পাবলিকেশন।
১. কাসিদ পরিচিতি
কাসিদ, ২০২০ সালে প্রকাশিত একটি ঐতিহাসিক উপন্যাস। পলাশীর যুদ্ধ নিয়ে সৃষ্ট ঐতিহাসিক উপন্যাস ‘কাসিদ’এর স্রষ্টা জয়দীপ দে। তিনি আমার শিক্ষক। পূর্বে তাঁর সাথে আমার সম্পর্ক শুধু শিক্ষক-শিক্ষার্থী হলেও, এখন থেকে নতুন একটি সম্পর্ক হলো লেখক-পাঠক। উপন্যাসটি প্রকাশের আগ থেকেই একটু একটু আগ্রহ ছিল যেহেতু তাঁর এ কর্মটি নিয়ে মাঝে মাঝেই কথা বলতেন। তবে বইমেলায় যখন বইটি নিয়ে বিভিন্ন জনের এক বিশেষ আগ্রহ নজরে আসে তখনই স্থির করে ফেলি, কাসিদ আমার পড়তে হবে। অবশেষে পড়লাম। অসাধারণ এই বইটির প্রচ্ছদশিল্পি হলেন তৌফিকুর রহমান।
২. কাসিদের নাম করণের সার্থকতা
নাম করণের সার্থকতা নিয়ে আমি কিছু বলার প্রয়োজন মনে করছিনা কারণ লেখক নিজেই ইঙ্গিত দিয়েছেন উপন্যাসে। আমি যা জানি, তাতে কাসিদ একটি আরবি শব্দ আবার কেউ বলেন পারসি শব্দ। আরবি হোক আর পারসি হোক, এর বাংলা অর্থ হলো বার্তাবাহক। এই উপন্যাসেও কাসিদ বার্তাবাহক হিসেবে ধরা দিলেও নামকরণের সার্থকতা হলো এই কাসিদ একটি ইতিহাসকে তার ঘাড়ে করে যুগ যুগ ধরে বইবে আর মানুষকে তা জানিয়ে যাবে। এ সত্যিই কাসিদ।
৩. কাসিদের গর্ভ, আলোচনা ও প্রশংসা
জনাব জয়দীপ দের লেখা কাসিদ নামের এই বড়ো গল্পটি লেখক পলাশীর যুদ্ধ মাথায় নিয়ে লিখলেও এর শুরুটা করেন ১৭৩৯ সালে পারস্যের বাদশাহ নাদির শাহ্র দিল্লি দখল করে চালানো নৃশংসতা, পৈশাচিক আচরণ ও লুণ্ঠনের কাছে দিল্লির বাদশাহ মুহাম্মদ শাহ্র অসহায় অশ্রুসজল চোখে ভিখেরির বেশ উপাস্থাপনের দ্বারা। পাশাপাশি আওরঙ্গজেবের মৃত্যুর পর মুহাম্মদ শাহ্ সিংহাসনে কিভাবে বসলেন এবং সে সময় নিজেদের অবস্থা কেমন ছিল, নাদিরের লুন্ঠনের পর সাম্রাজ্যের ভগ্নদশা ও ময়ূর সিংহাসন খোয়া যাওয়ায় সম্মানহানি, মারাঠাদের অনমনীয়তা এবং লেখকের মূল বক্তব্যের স্থান বাংলা-ওড়িশা-বিহার নিয়ে ছোট্ট করে বলে নিয়েছেন যাতে করে খুব সহজেই পাঠকমনে উপন্যাসটির একটি শক্ত ভিত্তি গড়ে দিয়েছে। ভিত্তি গড়া যখনই হলো, লেখক সরাসরি চলে গেলেন ভাগীরথীর পাড়ে এবং সুজলা, সুফলা এই বাংলার পরিচয়টি খুব সুন্দর করে এক বিশেষ প্লট সৃষ্টির মাধ্যমে বলে গেছেন।
ধরে ধরে কথা বলতে গেলে অনেক কিছুই বলা সম্ভব, সেক্ষেত্রে নিজ দায়িত্বে কিছু তথ্যপুঞ্জির জোগান দিতে হবে এবং নিজেকে প্রচুর গবেষণা করতে হবে যেহেতু এটি মহাগুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস বহন করছে। যে ইতিহাস শুধু ভারতবর্ষ বা ভারতীয় উপমহাদেশই নয় শুধু, বিশ্বের ইতিহাসেই এক গুরুত্বপুর্ণ অধ্যায়।
লেখক যে এই উপন্যাসটি অনেক খেটে লিখেছেন সেটি অস্বীকার করা সম্ভব নয়। বাংলা না জানা বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব বলে পরিচিত সিরাজউদ্দৌলার পতন কিংবা ষড়যন্ত্র করে তাকে গদিছাড়া করে পরে অনাথ মুহাম্মদি বেগের শিকার বানানোর কথা আমরা জানি, কিন্তু সেখানেরও বেশ কিছ ফাঁকফোকর উঠে এসেছে যা বেশিরভাগ মানুষের জানা নাও থাকতে পারে। অবশ্য এতা ঠিক, একটি ঐতিহাসিক উপন্যাস দিয়ে ইতিহাসকে বিচার করা যায় না তবে আমি ধরে নিচ্ছি লেখক তথ্য জোগাড়ে সৎ ছিলেন।
লোকমুখে শুনে, শুধু আঞ্চলিক ও ধর্মিয় আবেগ থেকে আমাদের আশেপাশের অনেক মানুষই পলাশীর কাহিনী বর্ণনা করতে পছন্দ করেন। এর সাথে মীর জাফর, ঘসেটি বেগম, উমিচাঁদ, জগতশেঠসহ বেশ কয়েকজন বিশ্বাস ঘাতক ও ষড়যন্ত্রকারীদের নাম শুধু উল্লেখ করার জন্যই উল্লেখ করা হয়, এর ভেতরের কথা আমাদের সামনে আসে না। কিন্তু কেউ যদি পলাশীর যুদ্ধের প্রেক্ষাপট নিয়ে জানতে চান তাহলে সে যদি কাসিদ উপন্যাসটি পড়ে তাহলে তাঁর উপকার হবে, অনেক প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজে পাওয়া যাবে।
আমরা যেমন খালি চোখে অনেক কিছুই দেখিনা, তেমনি সাদা মনে অনেক কিছুই ধরা দেয় না। উপন্যাসটি আমাদের কাছে কতগুলো স্তরভিত্তিক শঠতা বা ধোঁকার বার্তা বয়ে নিয়ে এসেছে, আজকে আমরা যারা এই ভূমিতে বিচরণ করছি তাদের কাছে। এক সময়ের অসহায় মির্জা মুহাম্মদ আলি, যার আশ্রয়ে বিহারের নায়েব হয়েছিলেন সেই মানুষটির পুত্রকেই যেভাবে হত্যা করে একজন বিশ্বাস ঘাতকের পরিচয় দিয়ে যাদের হাত ধরে ক্ষমতায় এসে আলিবর্দি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন কালের ব্যবধানে সেই একইরকম চিত্র দেখার অভিজ্ঞতা হয়েছিলো বাংলার আলো-বাতাস-মাটির। সরফরাজকে হত্যা করে আলিবর্দির ক্ষমতা লাভ এবং সিরাজউদ্দৌলার যুদ্ধের ময়দান থেকে পলায়ন করা ও পরে জায়নামাজেই তাকে মূহাম্মদি বেগের অস্ত্রের নিচে পড়ে জীবন দেয়ার ব্যাপারে সবাই জানে। কিন্তু আমি নিশ্চিত কাসিদ’এ যা কিছু উঠে এসেছে তাঁর সিংহভাগ মানুষেরই জানা নেই।
গল্পেগল্পে জানা যাবে এ ভূমিতে ইংরেজদের আগমন কীভাবে, তারা কীভাবে বাণিজ্য শুরু করে, বাণিজ্য করতে গিয়ে কি কি প্রতিকুলতার সম্মুখীন হয়েছে, তারা কীভাবে বাংলায় নিজেদের প্রভাব বিস্তার করে, প্রভাব বিস্তারে স্থানীয়দের কিভাবে ব্যবহার করে, বাংলা নিয়ে ইংরেজদের সুদূরপ্রসারী চিন্তাভাবনা ইত্যাদি। পাশাপাশি একজন পাঠক অনুধাবন করতে পারবে বাংলা নিয়ে বাংলার শাসনকর্তাদের সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাব, মাথা উঁচু করা লোকদের ক্ষমতার লোভ, প্রতিহিংসা পরায়নতা, বহু নারীর প্রতি আসক্তি, ততকালীন সমাজব্যবস্থা, উঁচু ও নিচু শ্রেণির মানুষের মধ্যে দুরত্ব ও সম্পর্ক, এক ধরনের বিত্তবানদের উপস্থিতি যারা যেকোনো সময় শাসকদের ওঠানামা করাতে পারে কিন্ত ক্ষমতায় বসেনা বরং অন্যের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খায় ইত্যাদি।
একটি বিষয় কারোই অজানা নয়, মানুষ দাঁড়ানোর সুযোগ পেলে ধীরেধীরে বসার ব্যবস্থা করে ফেলে, আর বসার সুযোগ পেলে কোনো রকমে শুতে পারলেই হলো, এরপর দিব্যি ঘুম। এ বিষয়টি কাসিদ একজন পাঠককে পাটপাট করে বুঝিয়ে দিতে সক্ষম।
লেখকের স্বাভাবিক গতি বজায় রেখে বয়ে চলা উপন্যাসটিতে লেখক উঠিয়ে এনেছেন শুধু যে কোম্পানির লোকেরা বাংলাকে ঠকিয়েছে তেমন নয়, কোম্পানির লোকেরাও কোম্পানিকে নানাভাবে ঠকিয়েছে। কিন্তু একটি বিশেষ জায়গায় তাঁরা সবাই এক ছিল যেটি ছিল না বাংলার উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিদের মধ্যে। বাংলা ভাষা না জানা লোকদের বাংলা শাসন করার সময় একেকজন শাসকের যেমন নানান যুদ্ধক্ষেত্রে বীরত্ব প্রদর্শন, কৌশলী শাসন ইত্যাদি যেমন লেখক দেখিয়েছেন, ঠিক তেমনি একজন রবার্ট ক্লাইভের মতো একজন ইংরেজকে সমান গুরুত্ব দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন।
সিরাজ পরবর্তি মীর জাফরের সময়কাল কেমন ছিলো সেটি বোঝাতে গিয় লেখক একটি বিশেষ একটি সংলাপ এনেছেন মীর জাফরের জবানে, ‘কর্নেল যে গাধার পিঠে চড়েন, আমি তাকেই রোজ তিন-তিন বার কুর্নিশ করি। আমি কোন সাহসে গাধার মালিকের সঙ্গে ঝগড়া করতে যাব বলুন?’ অবশ্য আমরা এমনিতেও জানি মীর জাফরকে রবার্ট ক্লাইভের গাধা বলা হয়। এছাড়া তখনকার পরিণতি ও পরিস্থিতি সম্পর্কে একটু ধারণা দিয়েছেন লেখক।
৪. আমি ছিলাম দূর আকাশের চিল
অসামান্য এই উপন্যাসটির শুরু থেকে শেষ পর্যন্তই মনে হয়েছে আমি বোধহয় সেই নবাবি আমলেরই একজন হয়ে পর্যবেক্ষণ করছি। কাসিদের বিভিন্ন চরিত্র যেমন, লুমিংটন, বিষ্ণু বা রহিমদের মধ্যেও যেন আমি একটি চরিত্র হয়ে তৎকালীন বাংলায় কিছু সময়ের জন্য ঢুকে পড়েছিলাম কিংবা মনে হয়েছে নবাব বা জমিদারদের প্রাসাদে আমিও একজন সদস্য। লেখক যখনই কোনো যুদ্ধের বর্ণনা নিয়ে এসেছেন, মনে হয়েছে চিল হয়ে দূর আকাশ থেকে উপভোগ করেছি যুদ্ধশিল্প, অনুভব করেছি সাহসিকতা এবং দেখেছি রক্তের স্রোত।
৫. যা ভালো লাগেনি
এত সুন্দর একটি সাহিত্যকর্ম নিয়ে অনেক কথা বলা যায়, চরিত্র ধরে ধরে বিস্তর কথা বলার সুযোগ রয়েছে কিংবা আমি জানি প্রশংসা করে শেষ করা যাবে না। কিন্তু একজন ক্ষুদ্র পাঠক হিসেবে বেশ কিছু জায়গায় আমার ভালো লাগেনি বা আমার মনে হয়েছে লেখক অন্যভাবে ওগুলো প্রকাশ করতে পারতেন। তবে স্বীকার করে নিচ্ছি প্রত্যেক লেখকেরই নিজস্ব বৈশিষ্ট রয়েছে, রয়েছে নিজস্ব ধরন। কাসিদ লেখকের ক্ষেত্রেও এর বিকল্প হতে পারে না। তবে পাঠক হিসেবে আমারও একটি নিজস্ব জায়গা রয়েছে। লেখক বলি আর পাঠক বলি, প্রত্যেকেই নিজের রুচি বা পছন্দের ব্যাপারে রক্ষণশীল, অন্তত আমার এটিই মনে হয়।
৫.১ কিছু সংলাপে আপত্তি
সেই নবাবি আমলের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরতে গিয়ে তৎকালীন সময়ে কিছু সংখ্যকের মধ্যে এক বিকৃত আকর্ষন ছিলো সেটিও তুলে এনেছেন যেমন পুরুষের প্রতি নারীর, নারীর প্রতি পুরুষের কিংবা পুরুষের প্রতি পুরুষের। একটি বাস্তবচিত্রকে তিনি যেভাবে তুলে ধরেছেন সাহসিকতার সাথে তাতে তাঁর ধন্যবাদ প্রাপ্য। কিন্তু তা উপস্থাপনের ধরন ও ব্যবহৃত সংলাপের কিছু অংশে আপত্তি আছে এবং ওইসব সংলাপে আমি বিব্রতবোধ করছিলাম। ওসব বাদ দিলে ইতিহাস থেকে একটি বড় অংশ বাদ পড়তো সে আমি মানছি, কিন্তু উপস্থাপন অন্যরকম হতে পারতো।
৫.২ ফ্ল্যাশব্যাক এবং ফ্ল্যাশফরওয়ার্ড
লেখক বারেবারে গল্পের প্রয়োজন দেখিয়ে বিভিন্ন চরিত্রের মাধ্যমে ফ্ল্যাশব্যাকে নিয়ে গেছেন পাঠককে। একটি সময়ে গিয়ে মনে হয়েছে এতবার ফ্ল্যাশব্যাকে না গিয়ে বরং প্রবাহ ধারা ঠিক রাখতে পারতেন চাইলেই। দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে বারবার ফ্ল্যাশব্যাকে ছোটা পাঠক হিসেবে আমার খুব একটা ভালো লাগেনি। শুধু ফ্ল্যাশব্যাকই নয়, লেখককে কিছু জায়গায় পাঠক জ্যোতিষ হিসেবেই পাবেন। যেমন, মেহেরুন্নেসার ঘসেটি বেগম হয়ে ওঠার খবর আগেই ব্রাকেটের মধ্যে জানিয়ে দেয়া কিংবা ২৬০ বছর পরে কোনো একজন অর্থনীতিবিদ কি বলবেন তা বলে দেয়ার মধ্য দিয়েই এটিই প্রমান হয়। তিনি চাইলেই একটু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে লিখতে পারতেন।
৬. স্পয়লার প্রসঙ্গে
যখন কোনো পাঠক কোনো সাহিত্য কর্ম নিয়ে পর্যালোচনা করেন তখন তাঁর বিশেষ একটি নজর থাকে যেন তিনি স্পয়লার না দিয়ে ফেলেন। আমি হয়তো বেশ কিছু কথা বলে দিয়েছি যা স্পয়লারের মতো মনে হতে পারে, কিন্তু না। এখানে আমি একটু হেসে দিয়ে বলতে পারি- ইতিহাসের আবার স্পয়লার হয় নাকি! আমি যদি ঘটনা প্রবাহের ধারা এখানে উল্লেখ করি তবেও স্পয়লার হবে না যেহেতু এই উপন্যাসটির প্রতি পৃষ্ঠাই গুরুত্বপূর্ণ। এ কাহিনীর ঘটনাপ্রবাহ মানুষ জানে কিন্তু ভালো করে জানে না ঘটনাওগুলো কীভাবে প্রবাহিত।
৭. কাসিদে লেখকের কল্পনা
ইতিহাসকে আশ্রয় করে যেসব নাটক বা উপন্যাস লেখা হয় তাতে লেখকের কল্পনাই বেশি থাকে কিন্তু আমার মনে হয়েছে কাসিদ’র ক্ষেত্রে লেখক তাঁর নিজস্ব কল্পনার ব্যবহার খুব কমই করেছেন বা করলেও তা একটা সীমার মধ্যে রেখেছেন যাতে করে ইতিহাসের অমর্যাদা না হয়। মনে হয়েছে গল্প নয় বরং আসল ইতিহাসই বর্ণনা করেছেন আমি বিশ্বাস করি। লেখার ফাঁকে ফাঁকে বেশ কিছু মানচিত্রের ব্যবহার করা হয়েছে এখানে যার মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গা চিহ্নিত করতে পারবে পাঠক এই ভেবে, এটি একটি ভালো দিক ছিলো।
৮. শেষকথা
এই পুরো উপন্যাসটি আমাকে সব সময়ই পুনরায় পড়ার আগ্রহ থেকে যাবে। নতুন করে যখন আবার পড়ব তখন হয়ত পর্যালোচনা অন্যরকম হবে বা কিছুটা হলেও পরিপক্ক হবে। আপাতত আমার এই অপরিপক্ক পর্যালোচনাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। শেষের আগে লিখে যেতে চাই জয়দীপ দে রচিত এই উপন্যাসটিতে বুকে কম্পন ধরিয়ে দেওয়ার মতো একটি অংশ হলো- ‘বস্তার মধ্যে কর্তিত মস্তক আর দেহের খণ্ডাংশ। চোখ খোলা। যেন কাটা মুণ্ডুটা করুণ চোখে চেয়ে আছে মায়ের দিকে। “মাগো, ঘরে তোলো”’। সিরাজঊদ্দৌলার পরিণতি বোঝাতে ব্যবহৃত এই বাক্য চারটি খুবই ছোটো অথচ খুবই ভয়ানক।