কোল বিদ্রোহ কী এবং এই কোল বিদ্রোহের কারণ, ফলাফল এবং গুরুত্ব কী?
- প্রকাশ: ১২:৪০:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২১
- / ২১৭৭০ বার পড়া হয়েছে
বুদ্ধু ভগত, জোয়া ভগত, ঝিন্দরাই মানকি ও সুই মুন্ডা প্রমুখের নেতৃত্বে ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দে বর্তমান ভারতের রাঁচি জেলায় ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির খাজনা বৃদ্ধি এবং বহিরাগত হিন্দু, মুসলিম ও শিখ মহাজন এবং ইজারাদারদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে কোলরা যে বিদ্রোহ ঘােষণা করেছিল ইতিহাসে তা ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসে কোল বিদ্রোহ নামে পরিচিত। চার্লস মেটকাফের সেক্রেটারি মেজরসাদারল্যান্ড বলেছেন যে, কোল বিদ্রোহ ছিল দাস বিদ্রোহের মতাে। এখানে কোল বিদ্রোহ নিয়ে সংক্ষিপ্ত আকারে কিছু আলোচনা করা হলো।
এখানে যা আছে
কোল উপজাতি পরিচিতি
কোল (Kol) ভারতের একটি আদিবাসী বা উপজাতি গোষ্ঠী। বর্তমান ভারতের বিহারের অন্তর্গত ছোটনাগপুর, সিংভূম, রাঁচি, মানভূম প্রভৃতি অঞ্চলে বসবাসকারী কৃষিজীবী আদিবাসীগণ কোল নামে পরিচিত। তারা ছিল অরণ্যচারী ও বনজ সম্পদের ওপর নির্ভরশীল এক স্বাধীনচেতা কৃষিজীবী জাতি। কোল উপজাতিরা বেশ কিছু গোত্রে বিভক্ত ছিল।
ইতিহাস থেকে জানা যায় যে, দুর্গম পার্বত্য অঞ্চল ও অরন্য অধ্যুষিত অঞ্চলে আদিবাসীরা প্রাচীন কাল থেকেই স্বাধীন ভাবে বসবাস করত। তারা সাধারণত নিজেদের শাসনাধীন থাকত এবং প্রাচীন ও মধ্যযুগের কোনো শাসকই তাদের বিব্রত করত না বা তাদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করত না। কোল উপজাতির লোকেরাও অন্যান্য উপজাতি বা আদিবাসীদের মতোই স্বাধীনভাবে বসবাস করত।
কোল বিদ্রোহ
ব্রিটিশ শাসনকালে বিহারে বসবাসরত কোল উপজাতির ওপর ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কর্তৃপক্ষ বা ব্রিটিশ সরকার ও বহিরাগত জমিদারেরা চরম অত্যাচার, নির্যাতন ও শোষণ করে। ব্রিটিশ শাসক ও তাদের সহযোগীদের চরম অত্যাচার, নির্যাতন শোষণের বিরুদ্ধে কোল উপজাতি ১৮২০-১৮২১ এবং ১৮৩১-১৮৩২ সালে দুইটি পর্যায়ে বিদ্রোহ করে; এই বিদ্রোহকে বলা হয় কোল বিদ্রোহ।
কোল বিদ্রোহ ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির (East India Company) শাসনকালে ভারতে সংঘটিত বিভিন্ন কৃষক ও উপজাতি বিদ্রোহগুলির মধ্যে অন্যতম বিদ্রোহ। কোল উপজাতির মানুষদের ইংরেজরা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে এই কোল বিদ্রোহের সূচনা হয়।
কোল বিদ্রোহকে ‘কোল জাগরণ’ বলেছেন কেউ কেউ। ইংরেজিতে কোল বিদ্রোহ পরিচিত ‘Kol Uprising’ ও ‘Kol Rebellion’ উভয় নামেই।
কোল বিদ্রোহের কারণ
পলাশীর যুদ্ধে বাংলার নবাব অল্পবয়সী ও ইঁচড়েপাকা সিরাজ-উদ-দৌলাকে পরাজিত করার মাধ্যমে ইংরেজরা ভারতীয় উপমহাদেশে ঔপনিবেশিক শাসন প্রতিষ্ঠা করে। ভারতবর্ষে ইংরেজের ঔপনিবেশিক শাসন প্রতিষ্ঠিত হবার পর এর প্রতিটি অঞ্চল, জনপদ বা প্রতিটি জাতি ও শ্রেণি-পেশার মানুষকে অন্যায়ভাবে শোষণ করেছিল। কোল আদিবাসীদের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ছিল না ইংরেজরা।
উনিশ শতকের প্রথমার্ধে বিশেষত, ১৮২০ সালের পরপরই কোল আদিবাসীদের স্বাভাবিক জীবনধারা ও স্বাধীন সত্ত্বা ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসকদের কর্তৃক চরমভাবে বিঘ্নিত হয়, যার কারণে কোলরা বিদ্রোহী হয়ে ওঠে।
কোল বিদ্রোহের কিছু উল্লেখযোগ্য কারণ নিচে উল্লেখ করা হলো:
জমির ব্যক্তি মালিকানা ব্যবস্থার প্রবর্তন
কোল উপজাতি অধ্যুষিত এলাকায়, বিশেষ করে ছোটনাগপুরের বহিরাগত (হিন্দু, মুসলিম, শিখ) ইজারাদাররা রাজস্ব আদায়ের সুবিধার জন্য জমির মালিকানার ক্ষেত্রে যৌথ মালিকানার বদলে ব্যক্তি মালিকানা ব্যবস্থার প্রবর্তন করে। ইজারাদাররা এই ব্যবস্থা চালু করলে কোল সমাজে ব্যপক অস্থিরতা ও বিক্ষোভ দেখা যায়। জমিতে ব্যক্তি মালিকানার ব্যবস্থা চালু করার ফলে ইজারাদাররা সহজেই অবাধ্য কৃষককে নিজজমি থেকে উচ্ছেদ করে অন্যদের অপেক্ষাকৃত বেশি ভূমি রাজস্বের দরে জমি বন্দোবস্ত দেওয়া যেত।
আদিবাসীরা সম্প্রদায়গত ভাবে একসঙ্গে থাকেন এবং নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করে কাজ করেন। আদিবাসী সমাজে ব্যক্তি মালিকানার কোনো প্রকারের ধারণা নেই। কিন্তু জমির ক্ষেত্রে ইজারাদাররা ব্যক্তি মালিকানা ব্যবস্থা প্রবর্তন করলে কোলদের পারিবারিক জীবনে অশান্তি দেখা যায় এবং ব্যক্তি মালিকানার বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে প্রচন্ড ক্ষোভের সঞ্চার হয়।
জমি থেকে উচ্ছেদ ও নির্যাতন
ইজারাদাররা জমিতে যৌথ মালিকানার ব্যবস্থা পরিবর্তন করে ব্যক্তি মালিকানার ব্যবস্থা প্রবর্তন করে উচ্চ ভূমিরাজস্ব আদায়ের জন। উচ্চ ভূমিরাজস্ব কোলরা পরিশোধ করতে না পারলে তাদেরকে নিজ নিজ জমি থেকে উচ্ছেদ করা হতো; রাজস্ব প্রদানে ব্যর্থদের পরিবারকে বন্দী করে নানারকম সামাজিক নির্যাতনও চালানো হতো। কোল বিদ্রোহের এটিও বড়ো একটি কারণ।
ইজারাদারি ব্যবস্থা প্রবর্তন
ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কোল উপজাতি অধ্যুষিত অঞ্চলকে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করে ইজারা দিয়েছিল। এর আগে তারা কোল জনগণের জমি হাতিয়ে দখল করে তারা। যাদেরকে ইজারা প্রদান করে ব্রিটিশরা তারা অযৌক্তিকভাবে উচ্চহারে কোলদের ওপর ভূমিরাজস্ব আরোপ করে। উচ্চহারে ভূমিরাজস্ব বৃদ্ধির পাশাপাশি এর পরিমাণ তারা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি করা শুরু করেছিল যা কোল সম্প্রদায় ভালো ভাবে নেয়নি বরং কোলদের মধ্যে প্রচন্ড ক্ষোভের সঞ্চার করে। এ ছাড়াও ভূমি রাজস্বের পাশাপাশি ইজারাদার ও ব্রিটিশ সরকার কোলদের ওপর আরও নানা ধরনের অবৈধ কর আরোপ করে; পাশাপাশি রাস্তা, বাড়ি নির্মান, ইত্যাদি নানা ধরনের কাজে কোলদের বিনাপারিশ্রমিকে খাটানো হতো।
রাজস্ব বৃদ্ধি
ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তাদের শাসন প্রক্রিয়ার অঙ্গ হিসেবে ছোটনাগপুরে বহিরাগত হিন্দু, মুসলমান ও শিখ মহাজনদের ওপর রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব দেয়। এই মহাজনরা কোলদের কাছ থেকে অতিরিক্ত রাজস্ব আদায়ের চেষ্টা করলে কোলরা বিদ্রোহী হয়ে ওঠে।শুধু তাই নয়, রাজস্ব আদায়ের জন্য কোলদের ওপর নানাভাবে অত্যাচার-নির্যাতন করা হতো।
অত্যাচার-নির্যাতন
ঠিক মতো ভূমিরাজস্ব দিতে না পারলে কিংবা কোনোন্না কোনল বাহানা সৃষ্টি করে কোল পরিবারগুলোর পুরুষদের বন্দি করে রাখা হতো এবং মহিলাদের সাথে নানা ভাবে মানহানিকর আচরণ করত। অভিযোগ ছিল যে, সরকারি রাস্তা তৈরির কাজে কোল সদস্যদেরকে বিনা পারিশ্রমিকে খাটানো হতো।
নগদ খাজনা প্রদান
ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কোল আদিবাসীদের কাছ থেকে নগদ অর্থে খাজনা আদায় করার জন্য আইন প্রণয়ন করলে কোলরা তা ভালোভাবে নেয়নি। কারণ নগদ অর্থে খাজনা দেওয়ার রীতি ও সামর্থ্য কোল সদস্যদের ছিল না।
জাতিগত ঐতিহ্যে আঘাত
অন্য সকল উপজাতি কিংবা আদিবাসীদের মতো কোল উপজাতিরাও স্বাধীনভাবে বংশপরম্পরায় নিজস্ব সামাজিক রীতিনীতি মেনে জীবন যাপন করত। কিন্তু ইংরেজরা কোল অধ্যুষিত অঞ্চলে নিজেদের কর্তৃত্ব ও শাসন ক্ষমতা দিয়ে নতুন কিছু নিয়ম-রীতির প্রচলন করেছিল যা কোলদের জাতিগত ঐতিহ্যে আঘাত লাগে।
বাধ্যতামূলক আফিম চাষ
বনে-জঙ্গলে বা পাহাড় উপজাতিরা পতিশ্রম করেই জীবনযাপন করে। তাদের মূল ও চিরাচরিত কাজ হলো কৃষিকাজ। কোল মানুষজনেরও প্রথম ওধান কাজ ছিল কৃষিকাজ। কিন্তু কোলদের এই চিরাচরিত কৃষিকাজ বন্ধ করে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তাদের আফিম চাষ করতে বাধ্য করে। ফলে তাদের জীবিকাগত ঐতিহ্যেও আঘাত লাগে।
মোট কথা হলো যে, ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কর্তৃক জমি দখল, উচ্চ হারে রাজস্ব আদায়, বিনাপারিশ্রমিকে কাজ করিয়ে নেওয়া, শোষণমূলক আচরণ ও অত্যাচার এবং জাতিগত ও পেশাগত ঐতিহ্যে আঘাত ইত্যাদি কারণে কোল উপজাতির জনগণ রুষ্ঠ হয় এবং বাধ্য হয়ে ইংরেজ, বহিরাগত হিন্দু, মুসলিম, শিখ ইজারাদারদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের পথ বেছে নেয়।
কোল বিদ্রোহের নেতৃবৃন্দ
কোল বিদ্রোহের উল্লেখযোগ্য কয়েকজন নেতার নাম হলো- বুদ্ধু ভগত, জোয়া ভগত, ঝিন্দরাই মানকি ও সুই মুন্ডা, সিংরাই মানকি প্রমুখ।
কোল বিদ্রোহের প্রসার
উনিশ শতকের শুরু থেকেই ১৮০১, ১৮১৭, ১৮২০ ও ১৮২৩ সালে কোল উপজাতির মানুষরা ছোট ছোট বিদ্রোহ সংঘটিত করে অন্যায়ের প্রতিবাদ জানায়। কিন্তু ওই সব ছোটো ছোটো আন্দোলন খুব একটা কাজে আসেনি। একটা সময় কোল জাতির মানুষের পিঠ যখন দেয়ালে ঠেকে গেল তখন তাদের মধ্যে এক ধরনের জাগরণের সৃষ্টি হলো। তারা এমনিতেই একতাবদ্ধ জনগণ, তার ওপর বহিরাগতদের অত্যাচার-নির্যাতন তাদেরকে আরও সংগঠিত করেছিল। এতে করে ১৮৩১-১৮৩২ সালে কোল বিদ্রোহ ব্যপক আকার ধারণ করে। ছোটনাগপুর, রাঁচি, সিংভূম, মানভূম, হাজারীবাগ, পালামৌ প্রভৃতি অঞ্চলে বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে।
এই বিদ্রোহে কোলদের পাশাপাশি হো, মুন্ডা, ওঁরাও প্রভৃতি উপজাতি এবং সাধারণ কৃষক, কামার, কুমোর, গোয়ালা প্রভৃতি নিম্নবর্গীয় শোষিত মানুষরাও এই বিদ্রোহে যোগ দেয়। বিদ্রোহের প্রথম দিকে কোল বিদ্রোহীরা দিকুদের ওই অঞ্চল ছেড়ে চলে যেতে বলে এবং তা না করলেই মৃত্যু অনিবার্য বলে ঘোষণা করে কোল বিদ্রোহীরা। বিদ্রোহ চলাকালে কোলরা বহু দিকুকে তাদের দেবতা সামনেই হত্যা করে।
বিদ্রোহের অবসান
কোল বিদ্রোহীদের আক্রমণের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ছিল বহিরাগত মহাজন বা দিকু, জমিদার, জোতদার ও ইংরেজ কর্মচারীদের নিজভূমি থেকে বিতাড়িত করা। কোল মানুষদের আক্রমণে কয়েক হাজার বহিরাগত মহাজন, জমিদার ও ইংরেজ কর্মচারী নিহত হয়। স্বাভাবিকভাবেই, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি চাইল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে কারণ ক্রমে ক্রমে পরিস্থিতি আয়ত্বের বাইরে চলে যাচ্ছিল। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্তারা বিদ্রোহ দমনে তৎপর হয়ে ওঠে। এক বিশাল সেনাবাহিনীর সাহায্যে কোম্পানি সরকার নিষ্ঠুরভাবে ও বলপূর্বক এই বিদ্রোহ দমন করে। ১৮৩৩ সালে কোল বিদ্রোহের অবসান ঘটে। আর কোল বিদ্রোহ ঘটাতে ব্রিটিশ বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন উইলকিনসন।
ফলাফল ও গুরুত্ব
কোল বিদ্রোহ ১৮০১ সাল থেকে ছোটো ছোটো আকারে শুরু হলেও এর চূড়ান্ত রুপ নেয় ১৮৩১-১৮৩২ সালে। ১৮৩৩ সালে ক্যাপ্টেন উইলকিনসনের নেতৃত্বে কোল বিদ্রোহের অবসান ঘটে। এতে কোল বিদ্রোহ ব্যর্থ হয়। তবে ফলাফলের দিক থেকে কোল বিদ্রোহ ব্যর্থ হয়েছিল ঠিকই কিন্তু এ বিদ্রোহের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম।
কোল বিদ্রোহের ফলাফল ও গুরুত্ব নিচে উল্লেখ করা হলো:
- কোল বিদ্রোহের পর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কর্তৃক পরিচালিত সরকার কোল উপজাতিদের জন্য দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্ত এজেন্সি নামে একটি নতুন ভূখন্ড নির্দিষ্ট করে দেয়।
- বিদ্রোহ অবসানের পরপরই ছোটনাগপুরে নতুন এক প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়।
- ছোটনাগপুর অঞ্চলের জন্য বাসিন্দাদের সংস্কৃতির সাথে মিলিয়ে স্বতন্ত্র নিয়ম-কানুন প্রবর্তন করে ব্রিটিশ সরকার।
- জমিদারদের কাছ থেকে জমি কেড়ে নিয়ে গ্রামপ্রধানদের জমি ফেরত দেওয়া হয় এবং জমিদাররা যাতে আবার জমি দখল করতে না পারে তার ব্যবস্থা করা হয়।
- জমি জরিপ করার ব্যবস্থা করা হয় এবং সেই মতো ভূমি বণ্টন ও রাজস্ব ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়।
বিদ্রোহের এরকম ফলাফল দেখে যে কেউ ভাবতে পারেন যে, আদতে বিদ্রোহ সফল হয়েছিল। তবে পরবর্তীতে দেখা গিয়েছিল যে, উপর্যুক্ত ব্যবস্থাগুলি গ্রহণ করা সত্ত্বেও প্রকৃতপক্ষে কোলদের সমস্যার সমাধান হয়নি। তাদের উপর জমিদার ও মহাজনদের অত্যাচার-নির্যাতন-শোষণ অব্যাহত থাকে। আর এ কারণে প্রায় সমগ্র উনিশ শতক ধরে মাঝে মধ্যেই কোলরা বিদ্রোহ সংঘটিত করে, তবে ১৮৩১-১৮৩২ সালের মতো অতটা ভয়াবহ হয়ে ওঠেনি কোল আদিবাসীদের আর কোনো বিদ্রোহ।