০৮:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫, ২৬ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
                       

খুঁৎকাঠি প্রথা ও মুন্ডা বিদ্রোহ

জারিন তাসনিম
  • প্রকাশ: ১১:৪২:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২২
  • / ৭২৯৩ বার পড়া হয়েছে

খুঁৎকাঠি প্রথা বাতিল করায় মুন্ডা বিদ্রোহ সংঘটিত হয়।

খুঁৎকাঠি বা খুৎকাঠি প্রথা হলো এক ধরনের ভূমি ব্যবস্থা যা পূর্বে ভারতীয় উপমহাদেশের মুন্ডা সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রচলিত ছিল। খুঁৎকাঠি ব্যবস্থায় জমিতে ব্যক্তি মালিকানার পরিবর্তে যৌথ মালিকানা স্বীকৃত ছিল। খুঁৎকাঠি প্রথার অপর নাম কুন্তকট্টি প্রথা। বাংলাদেশে একে উচ্চারণ করা হয় ‘খুন্তকাট্টি’।

ভারতে ব্রিটিশ সরকার খুঁৎকাঠি প্রথা বাতিল করে, এর ফলে মুন্ডা সম্প্রদায়ের মধ্যেও জমির ব্যক্তি মালিকানা চালু হয়। তবে মুন্ডা সমাজে জমির এক মালিকানা বা ব্যক্তিমালিকানা চালু হলে মুন্ডাদের জমি গুলি বহিরাগত জমিদার, ঠিকাদার ও মহাজনদের হাতে চলে যায়। নিজেদের জমি অন্যের হাতে চলে যাওয়ায় তা মুন্ডারা ভালো ভাবে নিতে পারেনি, আর এতে তারা বিদ্রোহ ঘোষণা করে।

মুন্ডা বিদ্রোহ  উনিশ শতকে সংঘটিত উপমহাদেশের অন্যতম উপজাতীয় বিদ্রোহ। বিরসা মুন্ডা ১৮৯৯-১৯০০ সালে বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অন্তর্ভুক্ত রাঁচির দক্ষিণাঞ্চলে এই মুন্ডা বিদ্রোহ পরিচালনা করেন। মুন্ডাদের ভাষায় এই বিদ্রোহ ‘উলগুলান’-ল নামে পরিভিত, যার অর্থ ‘প্রবল বিক্ষোভ’। মুন্ডা বিদ্রোহ ছিল ব্রিটিশ বিরোধী অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কৃষক বিদ্রোহ ও স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন।

১৯০২-১০ সালের ভূমি-জরিপ কার্যক্রমের মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার মুন্ডাদের অভাব-অভিযোগ নিরসনের চেষ্টা করে। ১৯০৮ সালে ছোটনাগপুর প্রজাস্বত্ব আইনের (টেন্যান্সি অ্যাক্ট) মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার মুন্ডাদের খুঁৎকাঠি প্রথা নামের ভূমি ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনে।

শেয়ার করুন

মন্তব্য

লেখকতথ্য

জারিন তাসনিম

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং স্বাধীন লেখক।

বিশেষ শর্তসাপেক্ষে এই ওয়েবসাইটটি সামাজিক কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ কিংবা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নিকট বিক্রি করা হবে।

খুঁৎকাঠি প্রথা ও মুন্ডা বিদ্রোহ

প্রকাশ: ১১:৪২:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২২

খুঁৎকাঠি বা খুৎকাঠি প্রথা হলো এক ধরনের ভূমি ব্যবস্থা যা পূর্বে ভারতীয় উপমহাদেশের মুন্ডা সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রচলিত ছিল। খুঁৎকাঠি ব্যবস্থায় জমিতে ব্যক্তি মালিকানার পরিবর্তে যৌথ মালিকানা স্বীকৃত ছিল। খুঁৎকাঠি প্রথার অপর নাম কুন্তকট্টি প্রথা। বাংলাদেশে একে উচ্চারণ করা হয় ‘খুন্তকাট্টি’।

ভারতে ব্রিটিশ সরকার খুঁৎকাঠি প্রথা বাতিল করে, এর ফলে মুন্ডা সম্প্রদায়ের মধ্যেও জমির ব্যক্তি মালিকানা চালু হয়। তবে মুন্ডা সমাজে জমির এক মালিকানা বা ব্যক্তিমালিকানা চালু হলে মুন্ডাদের জমি গুলি বহিরাগত জমিদার, ঠিকাদার ও মহাজনদের হাতে চলে যায়। নিজেদের জমি অন্যের হাতে চলে যাওয়ায় তা মুন্ডারা ভালো ভাবে নিতে পারেনি, আর এতে তারা বিদ্রোহ ঘোষণা করে।

মুন্ডা বিদ্রোহ  উনিশ শতকে সংঘটিত উপমহাদেশের অন্যতম উপজাতীয় বিদ্রোহ। বিরসা মুন্ডা ১৮৯৯-১৯০০ সালে বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অন্তর্ভুক্ত রাঁচির দক্ষিণাঞ্চলে এই মুন্ডা বিদ্রোহ পরিচালনা করেন। মুন্ডাদের ভাষায় এই বিদ্রোহ ‘উলগুলান’-ল নামে পরিভিত, যার অর্থ ‘প্রবল বিক্ষোভ’। মুন্ডা বিদ্রোহ ছিল ব্রিটিশ বিরোধী অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কৃষক বিদ্রোহ ও স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন।

১৯০২-১০ সালের ভূমি-জরিপ কার্যক্রমের মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার মুন্ডাদের অভাব-অভিযোগ নিরসনের চেষ্টা করে। ১৯০৮ সালে ছোটনাগপুর প্রজাস্বত্ব আইনের (টেন্যান্সি অ্যাক্ট) মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার মুন্ডাদের খুঁৎকাঠি প্রথা নামের ভূমি ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনে।