০৭:৪৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
                       

বায়ুমণ্ডল কাকে বলে? বায়ুমণ্ডলের উপাদান কী কী এবং কোন উপাদানের পরিমাণ কত?

বিশ্লেষণ সংকলন টিম
  • প্রকাশ: ০৪:২৭:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ জুলাই ২০২২
  • / ১৬৯১৩ বার পড়া হয়েছে

ভূ-পৃষ্ঠের চারপাশ যে বায়বীয় আবরণ দ্বারা বেষ্টিত রয়েছে তাকেই সহজ ভাষায় বলা হয় বায়ুমণ্ডল।


Google News
বিশ্লেষণ-এর সর্বশেষ নিবন্ধ পড়তে গুগল নিউজে যোগ দিন

বিশেষ শর্তসাপেক্ষে এবং স্বল্পমূল্যে এই ওয়েবসাইটটি সামাজিক কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ কিংবা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নিকট বিক্রি করা হবে।

পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল বলতে পৃথিবীর চারপাশে ঘিরে থাকা বিভিন্ন গ্যাস মিশ্রিত স্তরকে বোঝায়, যা পৃথিবী তার মধ্যাকর্ষণ শক্তি দ্বারা ধরে রাখে। একে আবহমণ্ডল-ও বলা হয়। এটি সূর্য থেকে আগত অতিবেগুনি রশ্মি শোষণ করে পৃথিবীতে জীবের অস্তিত্ব রক্ষা করে। এখানে বায়ুমণ্ডল ও বায়ুমণ্ডলের উপাদান নিয়ে আলোচনা করা হলো। বায়ুমণ্ডলের স্তর সম্পর্কে পড়তে ক্লিক করুন

বায়ুমণ্ডল কাকে বলে?

ভূ-পৃষ্ঠের চারপাশ যে বায়বীয় আবরণ দ্বারা বেষ্টিত রয়েছে তাকেই সহজ ভাষায় বলা হয় বায়ুমণ্ডল। আমরা জানি যে, সৌরজগতের একমাত্র বাসযোগ্য গ্রহ পৃথিবী এবং মানুষ, প্রাণি অর্থাৎ জীবজগতের স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার জন্য এই বায়ুমণ্ডল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মূলত ভূ-পৃষ্ঠ থেকে উর্ধ্ব দিকে যে বায়বীয় আস্তরণ তাই বায়ুমণ্ডল নামে পরিচিত এবং এই মণ্ডলটি নানা প্রকার গ্যাসীয় উপাদান দ্বারা গঠিত। পৃথিবীর আকর্ষণে আকৃষ্ট হয়ে এ বায়ুমণ্ডল পৃথিবীর সঙ্গে আবর্তিত হচ্ছে। তবে বায়ুমণ্ডল কঠিন ভূমির সাথে সমানভাবে চলতে পারে না বরং কিছুটা পশ্চাতে পড়ে থাকে।

বায়ুমণ্ডলের গভীরতা

নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বিজ্ঞানীরা অনুমান করেন যে বায়ুমণ্ডলের বয়স প্রায় ৩৫ কোটি বছর। এর গভীরতা প্রায় ১০,০০০ কিলোমিটার। বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণায় এটাও উলেস্নখ করেন যে এই বায়ুমণ্ডলের প্রায় ৯৭ শতাংশই ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ৩০ কিলোমিটার এর মধ্যে সীমাবদ্ধ। বায়ুমণ্ডলের একটির উপর আরেকটি পর্যায়ক্রমে অবস্থিত। সাধারণত উপরের স্তরের বায়ু নিচের বায়ুস্তরে ক্রমাগত চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। বায়ুর এই চাপের জন্যই পৃথিবীপৃষ্ঠ হতে যত উপরে উঠা যায়, বায়ুর ঘনত্ব ততই কমতে থাকে। তবে সমুদ্রপৃষ্ঠে এই বায়ুচাপের ঘনত্ব সব থেকে বেশি দেখা যায়।

বায়ুমণ্ডলের উপাদান

পৃথিবীপৃষ্ঠ ও তার চারদিক জুড়ে বায়ুমণ্ডল বেষ্টিত। এই মণ্ডল নানা রকমের গ্যাসের মিশ্রণে গঠিত হয়েছে। এই গ্যাসীয় মিশ্রণ ভূ-পৃষ্ঠ থেকে আনুমানিক ৮০ কিলোমিটার উচ্চতা পর্যন্ত প্রায় সমান। বায়ুমণ্ডলে আরও রয়েছে অসংখ্য ধূলিকণার সংমিশ্রণ। এই সব কঠিন ও তরল কণিকাকে একত্রে বলা হয় রঞ্জক পদার্থ (Aerosols)। বায়ুমণ্ডলের বর্ণ, গন্ধ, আকার কিছুই নেই। তাই বায়ুমণ্ডলের এই সব উপাদান স্বাভাবিক অবস্থায় অনুভব করা যায় না। সুতরাং বায়ুমণ্ডলের উপাদান বলতে বিভিন্ন প্রকার গ্যাস, জলীয়বাষ্প, ধূলিকণা ও কণিকার সংমিশ্রণকে বুঝায়।

ভূ-পৃষ্ঠের চারপাশ যে বায়বীয় আবরণ দ্বারা বেষ্টিত রয়েছে তাকেই সহজ ভাষায় বলা হয় বায়ুমণ্ডল।

বায়ুমণ্ডলের গঠনকারী উপাদানসমূহ

বায়ুমণ্ডল বিভিন্ন প্রকারের গ্যাসীয় উপাদান দ্বারা গঠিত। বিশুদ্ধ ও শুষ্ক বায়ুর প্রধান দুইটি উপাদানের নাম নাইট্রোজেন ও অক্সিজেন। এই দুটি গ্যাস একত্রে মিলে বায়ুমণ্ডলের ৯৮.৭৩ শতাংশ জায়গা জুড়ে আছে এবং বাকি ১.২৭ শতাংশ জায়গা জুড়ে আছে অন্যান্য গ্যাসীয় উপাদান। এই ১.২৭ শতাংশ জায়গা জুড়ে থাকা গ্যাসীয় উপাদানগুলো হলো নিষ্ক্রিয় গ্যাস যেমন- ওজোন, জেনন, মিথেন, নাইট্রাস অক্সাইড, ক্রিপটন, হিলিয়াম, নিয়ন ইত্যাদি।

বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন উপাদানের নাম, পরিমাণ ও শতকরা হার

আয়তন হিসেবে বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন উপাদানসমূহের একটি তালিকা দেয়া হলো—

বিভিন্ন গ্যাস বা বায়ুমণ্ডলের উপাদানের নামপরিমাণ শতকরা হার
নাইট্রোজেন (N2)৭৮০,৮৪০ পিপিএমভি (৭৮.০৮৪%)
অক্সিজেন (O2)২০৯,৪৬০ পিপিএমভি (২০.৯৪৬%)
আর্গন (Ar)৯,৩৪০ পিপিএমভি (০.৯৩৪০%)
কার্বনডাইঅক্সাইড (CO2)৩৯৭ পিপিএমভি (০.০৩৯৭%)
নিয়ন (Ne)১৮.১৮ পিপিএমভি (০.০০১৮১৮%)
হিলিয়াম (He)৫.২৪ পিপিএমভি (০.০০০৫২৪%)
মিথেন (CH4)১.৭৯ পিপিএমভি (০.০০০১৭৯%)
ক্রিপ্টন (Kr)১.১৪ পিপিএমভি (০.০০০১১৪%)
হাইড্রোজেন (H2)০.৫৫ পিপিএমভি (০.০০০০৫৫%)
নাইট্রাস অক্সাইড (N2O)০.৩২৫ পিপিএমভি (০.০০০০৩২৫%)
কার্বন মনোক্সাইড (CO)০.১ পিপিএমভি (০.০০০০১%)
জেনন (Xe)০.০৯ পিপিএমভি (৯×১০−৬%) (০.০০০০০৯%)
ওজন (O3)০.০ থেকে ০.০৭ পিপিএমভি (০ থেকে ৭×১০−৬%)
নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড (NO2)০.০২ পিপিএমভি (২×১০−৬%) (০.০০০০০২%)
আয়োডিন (I2)০.০১ পিপিএমভি (১×১০−৬%) (০.০০০০০১%)
অ্যামোনিয়া (NH3)ট্রেস গ্যাস
উপর্যুক্ত শুষ্ক বায়ুমণ্ডলে বিদ্যমান না:
জলীয় বাষ্প (H2O)~০.২৫% সম্পূর্ণ বায়ুমণ্ডলের ভর দ্বারা, স্থানীয়ভাবে ০.০০১%–৫%
পিপিএমভি: প্রতি মিলিয়নে কণা পরিমাণ অনুসারে (note: volume fraction is equal to mole fraction for ideal gas only, see volume (thermodynamics))

বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা খুব সামান্য (০.০৩ শতাংশ) হলেও এই গ্যাসীয় উপাদান বায়ুমণ্ডলীয় প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কার্বন ডাই-অক্সাইড সূর্য থেকে আগত ক্ষুদ্র তরঙ্গের আলোক রশ্মিকে পৃথিবীতে আসতে সাহায্য করে। পৃথিবীপৃষ্ঠে প্রতিফলিত এ জলবায়ু বিকিরিত আলোক রশ্মি ক্ষুদ্র তরঙ্গ থেকে দীর্ঘ তরঙ্গে পরিণত হয়। কার্বন ডাই-অক্সাইড এই দীর্ঘ তরঙ্গ রশ্মিকে শুষে নেয় বলেই বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হয়ে উঠে। মূলত নাইট্রোজেন ও অক্সিজেন ছাড়া অন্যান্য গ্যাসীয় উপাদানসমূহকে বায়ুর কৃত্রিম বা অশুদ্ধ উপাদান বলা হয়। এই সকল কৃত্রিম বা অশুদ্ধ উপাদান সূর্যতাপ, বৃষ্টিপাত ও অন্যান্য প্রাকৃতিক ঘটনায় প্রভাব বিস্তার করে থাকে। বায়ুমণ্ডলের এই কৃত্রিম বা অশুদ্ধ উপাদানসমূহ মেঘ, কুয়াশা সৃষ্টি, সৌরতাপ বন্টনে ভূমিকা রাখে ও অতিবেগুনী রশ্মি শোষণ করে পৃথিবীর জীবজগতের প্রাণ রক্ষায় গুরূত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সারসংক্ষেপ

ভূ-পৃষ্ঠের চারপাশ যে বায়বীয় আবরণ দ্বারা বেষ্টিত আছে তাকে বায়ুমন্ডল বলে। বায়ুমণ্ডলের বয়স প্রায় ৩৫ কোটি বছর এবং গভীরতা প্রায় ১০,০০০ কিলোমিটার। বায়ু

একটির উপর আরেকটি স্তর আছে। ভূ-পৃষ্ঠের কাছাকাছি বা সমুদ্রপৃষ্ঠে এই বায়ুচাপের ঘনত্ব বেশি ও উর্ধ্বদিকে এই ঘনত্ব কমতে থাকে। বায়ুমণ্ডলের উপাদান মূলত বিভিন্ন প্রকার গ্যাস, জলীয়বাষ্প, ধূলিকণা ও কণিকার সংমিশ্রণ। বায়ুমণ্ডলের এই সব গ্যাসীয় উপাদানের মধ্যে শুদ্ধ উপাদান হলো অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন, বাকী উপাদান হলো কৃত্রিম বা অশুদ্ধ উপাদান। এই সব গ্যাসীয় উপাদান, জলীয়বাষ্প, ধূলিকণা ও কণিকাসমূহ বায়ুমণ্ডলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

শেয়ার করুন

মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার তথ্য সংরক্ষিত রাখুন

বিশেষ শর্তসাপেক্ষে এই ওয়েবসাইটটি সামাজিক কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ কিংবা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নিকট বিক্রি করা হবে।

বায়ুমণ্ডল কাকে বলে? বায়ুমণ্ডলের উপাদান কী কী এবং কোন উপাদানের পরিমাণ কত?

প্রকাশ: ০৪:২৭:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ জুলাই ২০২২

পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল বলতে পৃথিবীর চারপাশে ঘিরে থাকা বিভিন্ন গ্যাস মিশ্রিত স্তরকে বোঝায়, যা পৃথিবী তার মধ্যাকর্ষণ শক্তি দ্বারা ধরে রাখে। একে আবহমণ্ডল-ও বলা হয়। এটি সূর্য থেকে আগত অতিবেগুনি রশ্মি শোষণ করে পৃথিবীতে জীবের অস্তিত্ব রক্ষা করে। এখানে বায়ুমণ্ডল ও বায়ুমণ্ডলের উপাদান নিয়ে আলোচনা করা হলো। বায়ুমণ্ডলের স্তর সম্পর্কে পড়তে ক্লিক করুন

বায়ুমণ্ডল কাকে বলে?

ভূ-পৃষ্ঠের চারপাশ যে বায়বীয় আবরণ দ্বারা বেষ্টিত রয়েছে তাকেই সহজ ভাষায় বলা হয় বায়ুমণ্ডল। আমরা জানি যে, সৌরজগতের একমাত্র বাসযোগ্য গ্রহ পৃথিবী এবং মানুষ, প্রাণি অর্থাৎ জীবজগতের স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার জন্য এই বায়ুমণ্ডল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মূলত ভূ-পৃষ্ঠ থেকে উর্ধ্ব দিকে যে বায়বীয় আস্তরণ তাই বায়ুমণ্ডল নামে পরিচিত এবং এই মণ্ডলটি নানা প্রকার গ্যাসীয় উপাদান দ্বারা গঠিত। পৃথিবীর আকর্ষণে আকৃষ্ট হয়ে এ বায়ুমণ্ডল পৃথিবীর সঙ্গে আবর্তিত হচ্ছে। তবে বায়ুমণ্ডল কঠিন ভূমির সাথে সমানভাবে চলতে পারে না বরং কিছুটা পশ্চাতে পড়ে থাকে।

বায়ুমণ্ডলের গভীরতা

নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বিজ্ঞানীরা অনুমান করেন যে বায়ুমণ্ডলের বয়স প্রায় ৩৫ কোটি বছর। এর গভীরতা প্রায় ১০,০০০ কিলোমিটার। বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণায় এটাও উলেস্নখ করেন যে এই বায়ুমণ্ডলের প্রায় ৯৭ শতাংশই ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ৩০ কিলোমিটার এর মধ্যে সীমাবদ্ধ। বায়ুমণ্ডলের একটির উপর আরেকটি পর্যায়ক্রমে অবস্থিত। সাধারণত উপরের স্তরের বায়ু নিচের বায়ুস্তরে ক্রমাগত চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। বায়ুর এই চাপের জন্যই পৃথিবীপৃষ্ঠ হতে যত উপরে উঠা যায়, বায়ুর ঘনত্ব ততই কমতে থাকে। তবে সমুদ্রপৃষ্ঠে এই বায়ুচাপের ঘনত্ব সব থেকে বেশি দেখা যায়।

বায়ুমণ্ডলের উপাদান

পৃথিবীপৃষ্ঠ ও তার চারদিক জুড়ে বায়ুমণ্ডল বেষ্টিত। এই মণ্ডল নানা রকমের গ্যাসের মিশ্রণে গঠিত হয়েছে। এই গ্যাসীয় মিশ্রণ ভূ-পৃষ্ঠ থেকে আনুমানিক ৮০ কিলোমিটার উচ্চতা পর্যন্ত প্রায় সমান। বায়ুমণ্ডলে আরও রয়েছে অসংখ্য ধূলিকণার সংমিশ্রণ। এই সব কঠিন ও তরল কণিকাকে একত্রে বলা হয় রঞ্জক পদার্থ (Aerosols)। বায়ুমণ্ডলের বর্ণ, গন্ধ, আকার কিছুই নেই। তাই বায়ুমণ্ডলের এই সব উপাদান স্বাভাবিক অবস্থায় অনুভব করা যায় না। সুতরাং বায়ুমণ্ডলের উপাদান বলতে বিভিন্ন প্রকার গ্যাস, জলীয়বাষ্প, ধূলিকণা ও কণিকার সংমিশ্রণকে বুঝায়।

ভূ-পৃষ্ঠের চারপাশ যে বায়বীয় আবরণ দ্বারা বেষ্টিত রয়েছে তাকেই সহজ ভাষায় বলা হয় বায়ুমণ্ডল।

বায়ুমণ্ডলের গঠনকারী উপাদানসমূহ

বায়ুমণ্ডল বিভিন্ন প্রকারের গ্যাসীয় উপাদান দ্বারা গঠিত। বিশুদ্ধ ও শুষ্ক বায়ুর প্রধান দুইটি উপাদানের নাম নাইট্রোজেন ও অক্সিজেন। এই দুটি গ্যাস একত্রে মিলে বায়ুমণ্ডলের ৯৮.৭৩ শতাংশ জায়গা জুড়ে আছে এবং বাকি ১.২৭ শতাংশ জায়গা জুড়ে আছে অন্যান্য গ্যাসীয় উপাদান। এই ১.২৭ শতাংশ জায়গা জুড়ে থাকা গ্যাসীয় উপাদানগুলো হলো নিষ্ক্রিয় গ্যাস যেমন- ওজোন, জেনন, মিথেন, নাইট্রাস অক্সাইড, ক্রিপটন, হিলিয়াম, নিয়ন ইত্যাদি।

বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন উপাদানের নাম, পরিমাণ ও শতকরা হার

আয়তন হিসেবে বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন উপাদানসমূহের একটি তালিকা দেয়া হলো—

বিভিন্ন গ্যাস বা বায়ুমণ্ডলের উপাদানের নামপরিমাণ শতকরা হার
নাইট্রোজেন (N2)৭৮০,৮৪০ পিপিএমভি (৭৮.০৮৪%)
অক্সিজেন (O2)২০৯,৪৬০ পিপিএমভি (২০.৯৪৬%)
আর্গন (Ar)৯,৩৪০ পিপিএমভি (০.৯৩৪০%)
কার্বনডাইঅক্সাইড (CO2)৩৯৭ পিপিএমভি (০.০৩৯৭%)
নিয়ন (Ne)১৮.১৮ পিপিএমভি (০.০০১৮১৮%)
হিলিয়াম (He)৫.২৪ পিপিএমভি (০.০০০৫২৪%)
মিথেন (CH4)১.৭৯ পিপিএমভি (০.০০০১৭৯%)
ক্রিপ্টন (Kr)১.১৪ পিপিএমভি (০.০০০১১৪%)
হাইড্রোজেন (H2)০.৫৫ পিপিএমভি (০.০০০০৫৫%)
নাইট্রাস অক্সাইড (N2O)০.৩২৫ পিপিএমভি (০.০০০০৩২৫%)
কার্বন মনোক্সাইড (CO)০.১ পিপিএমভি (০.০০০০১%)
জেনন (Xe)০.০৯ পিপিএমভি (৯×১০−৬%) (০.০০০০০৯%)
ওজন (O3)০.০ থেকে ০.০৭ পিপিএমভি (০ থেকে ৭×১০−৬%)
নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড (NO2)০.০২ পিপিএমভি (২×১০−৬%) (০.০০০০০২%)
আয়োডিন (I2)০.০১ পিপিএমভি (১×১০−৬%) (০.০০০০০১%)
অ্যামোনিয়া (NH3)ট্রেস গ্যাস
উপর্যুক্ত শুষ্ক বায়ুমণ্ডলে বিদ্যমান না:
জলীয় বাষ্প (H2O)~০.২৫% সম্পূর্ণ বায়ুমণ্ডলের ভর দ্বারা, স্থানীয়ভাবে ০.০০১%–৫%
পিপিএমভি: প্রতি মিলিয়নে কণা পরিমাণ অনুসারে (note: volume fraction is equal to mole fraction for ideal gas only, see volume (thermodynamics))

বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা খুব সামান্য (০.০৩ শতাংশ) হলেও এই গ্যাসীয় উপাদান বায়ুমণ্ডলীয় প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কার্বন ডাই-অক্সাইড সূর্য থেকে আগত ক্ষুদ্র তরঙ্গের আলোক রশ্মিকে পৃথিবীতে আসতে সাহায্য করে। পৃথিবীপৃষ্ঠে প্রতিফলিত এ জলবায়ু বিকিরিত আলোক রশ্মি ক্ষুদ্র তরঙ্গ থেকে দীর্ঘ তরঙ্গে পরিণত হয়। কার্বন ডাই-অক্সাইড এই দীর্ঘ তরঙ্গ রশ্মিকে শুষে নেয় বলেই বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হয়ে উঠে। মূলত নাইট্রোজেন ও অক্সিজেন ছাড়া অন্যান্য গ্যাসীয় উপাদানসমূহকে বায়ুর কৃত্রিম বা অশুদ্ধ উপাদান বলা হয়। এই সকল কৃত্রিম বা অশুদ্ধ উপাদান সূর্যতাপ, বৃষ্টিপাত ও অন্যান্য প্রাকৃতিক ঘটনায় প্রভাব বিস্তার করে থাকে। বায়ুমণ্ডলের এই কৃত্রিম বা অশুদ্ধ উপাদানসমূহ মেঘ, কুয়াশা সৃষ্টি, সৌরতাপ বন্টনে ভূমিকা রাখে ও অতিবেগুনী রশ্মি শোষণ করে পৃথিবীর জীবজগতের প্রাণ রক্ষায় গুরূত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সারসংক্ষেপ

ভূ-পৃষ্ঠের চারপাশ যে বায়বীয় আবরণ দ্বারা বেষ্টিত আছে তাকে বায়ুমন্ডল বলে। বায়ুমণ্ডলের বয়স প্রায় ৩৫ কোটি বছর এবং গভীরতা প্রায় ১০,০০০ কিলোমিটার। বায়ু

একটির উপর আরেকটি স্তর আছে। ভূ-পৃষ্ঠের কাছাকাছি বা সমুদ্রপৃষ্ঠে এই বায়ুচাপের ঘনত্ব বেশি ও উর্ধ্বদিকে এই ঘনত্ব কমতে থাকে। বায়ুমণ্ডলের উপাদান মূলত বিভিন্ন প্রকার গ্যাস, জলীয়বাষ্প, ধূলিকণা ও কণিকার সংমিশ্রণ। বায়ুমণ্ডলের এই সব গ্যাসীয় উপাদানের মধ্যে শুদ্ধ উপাদান হলো অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন, বাকী উপাদান হলো কৃত্রিম বা অশুদ্ধ উপাদান। এই সব গ্যাসীয় উপাদান, জলীয়বাষ্প, ধূলিকণা ও কণিকাসমূহ বায়ুমণ্ডলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।