০১:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
                       

বৃষ্টিপাত এবং বৃষ্টিপাতের প্রকাভেদ

বিশ্লেষণ সংকলন টিম
  • প্রকাশ: ০৪:২৬:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ জুলাই ২০২২
  • / ৪৯৭০ বার পড়া হয়েছে


Google News
বিশ্লেষণ-এর সর্বশেষ নিবন্ধ পড়তে গুগল নিউজে যোগ দিন

বিশেষ শর্তসাপেক্ষে এবং স্বল্পমূল্যে এই ওয়েবসাইটটি সামাজিক কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ কিংবা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নিকট বিক্রি করা হবে।

আমরা জানি, কোনো অঞ্চলের প্রাত্যহিক বায়ুর তাপ, চাপ, আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাত পাত, বায়ুপ্রবাহের গড় অবস্থাকে বলা হয় আবহাওয়া। বৃষ্টিপাত আবহাওয়ার খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। এখানে বৃষ্টিপাত কী অর্থাৎ বৃষ্টিপাতের সংজ্ঞা এবং বৃষ্টিপারের প্রকারভেদ উল্লেখ করা হলো।

বৃষ্টিপাত কী?

বৃষ্টিপাত হলো কোনো অঞ্চলের আবহাওয়ার একটি অবস্থা যা নানা ধরনের আবহাওয়ার উপাদানসমূহের উপর নির্ভরশীল। জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু উর্ধ্ব আকাশে ঠান্ডা ও ঘনীভূত হয়ে মেঘে পরিণত হয়। এই সকল মেঘের মধ্যে থাকে অসংখ্য পানিকণা ও বরফকণা। এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পানি ও বরফকণা পরস্পরের সাথে মিলে বড় পানির কণায় পরিণত হয়। স্বাভাবিকভাবে মেঘ যখন আকাশে ভাসতে থাকে তখন তা ঘনীভূত হয়ে ফোঁটা ফোঁটা আকারে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে ভূ-পৃষ্ঠে পতিত হলে তাকে বলে বৃষ্টিপাত (Rainfall)।

বৃষ্টিপাত কীভাবে হয়?

সূর্যের তাপে যে জলীয়বাষ্প তৈরি হয় তা উপরের শীতল বায়ুর সংস্পর্শে আসলে তা সহজেই পরিপৃক্ত হয়। ঐ পরিপৃক্ত বায়ুই পরে ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র জলকণাতে পরিণত হয় এবং বায়ুমণ্ডলের ধূলিকণার সংস্পর্শে এসে জমাট বেঁধে মেঘের আকার ধারণ করে। এই মেঘ বাতাসে ভাসতে থাকে। বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা যদি হ্রাস পায় তবে ঐ ঘনীভূত মেঘ পানির কণা বা বরফকুচিরূপে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে পৃথিবীতে পতিত হয়। এই পদ্ধতিতেই বৃষ্টিপাত হয়।

বৃষ্টিপাতের প্রকারভেদ

মোট ৪টি উপায়ে জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু উর্ধ্বাকাশে উত্থিত হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায় বলে বৃষ্টিপাত প্রধানত ৪ প্রকার। বৃষ্টিপাতের এই ৪টি প্রকারভেদ হলো—

  1. পরিচলন বৃষ্টিপাত
  2. শৈলোৎক্ষপে বৃষ্টিপাত
  3. ঘূর্ণিবাত বৃষ্টিপাত
  4. সংঘর্ষ বৃষ্টিপাত।

নিম্নে এ সকল বৃষ্টিপাতের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হলো—

পরিচলন বৃষ্টিপাত

ভূ-পৃষ্ঠের বায়ু উষ্ণ হলে প্রচুর জলীয়বাষ্প সম্পন্ন হালকা বায়ু উপরে উঠে যায়। এ সময়ে শীতল বায়ুর সংস্পর্শে এসে ঐ জলীয়বাষ্প প্রথমে মেঘ ও পরে বৃষ্টিতে পরিণত হয়ে সোজা নিচে নেমে আসে। এই বৃষ্টিপাতকে বলা হয় পরিচলন বৃষ্টি। পরিচলন বৃষ্টিতে বায়ুর তাপ হ্রাস পেয়ে যখন অতিরিক্ত জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয় তখন এই ধরনের বৃষ্টিপাত ঘটায়। নিরক্ষীয় নিম্নচাপ এলাকায় পরিচলন বৃষ্টিপাত বেশি হয় কারণ এই সব এলাকার উর্ধ্বগামী বায়ুতে প্রচুর জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু থাকে। নিরক্ষীয় এলাকায় স্থলভাগের থেকে জলভাগের বিস্তৃতি বেশি এবং এখানে লম্বভাবে সূর্যকিরণ পতিত হয়। এই অঞ্চলে হালকা জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু থাকে। হালকা জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু যখন শীতল বায়ুর সংস্পর্শে আসে 

তখন এই রকম পরিচলন বৃষ্টিপাত ঘটায়। নিরক্ষীয় অঞ্চলে প্রায় সারাবছরই সন্ধ্যা ও বিকালে এইরূপ বৃষ্টি হয়। নাতিশীতোষ্ণমণ্ডলে গ্রীষ্মকালের শুরূতে পরিচলন বৃষ্টিপাত হয়।

পরিচলন বৃষ্টিপাত তাই নিম্নলিখিত পর্যায় অনুসারে ঘটে থাকে—

  • প্রচুর সূর্যের তাপে ভূ-পৃষ্ঠ দ্রূত উত্তপ্ত হয়ে উঠে। 
  • ভূ-পৃষ্ঠের উপরে অবস্থিত উষ্ণ ও হালকা বায়ু উপরে উঠে গিয়ে পরিচলনের সৃষ্টি করে। 
  • উর্ধ্বমুখী বায়ু যখন শীতল হতে থাকে তখন বায়ুতে যথেষ্ট পরিমাণ জলীয়বাষ্পের উপস্থিতিতে ঘনীভবন হয়।
  • ঘণীভবনের ফলে মেঘ উপরের দিকে বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে ঝড়োপুঞ্জ মেঘের সৃষ্টি করে। এ ধরনের মেঘ থেকে ঝড়সহ মুষলধারে বৃষ্টি এবং কখনো কখনো শিলাবৃষ্টি ও বজ্রপাত হয়।

শৈলোৎক্ষপে বৃষ্টিপাত

জলীয়বাষ্পপূর্ণ উষ্ণ ও আর্দ্র বায়ু ভূ-পৃষ্ঠের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় সময় পর্বতে বাধাপ্রাপ্ত হলে তা পর্বতের ঢাল বেয়ে উপরের দিকে উঠে যায়। এই বায়ু শীতল হয়ে পর্বতের প্রতিবাত ঢালে যে বৃষ্টিপাত ঘটায় তাকে শৈলোৎক্ষপে বৃষ্টি বলে। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু মেঘালয় পাহাড়ে বাধা পাওয়ায় সিলেট এলাকায় প্রচুর শৈলোৎক্ষপে বৃষ্টি হয়। তবে পর্বত অতিক্রমকারী বায়ু যদি পর্বতের অপর পাশে অর্থাৎ অনুবাত ঢালে পৌঁছায় তখন ঐ বায়ুতে জলীয়বাষ্প কমে থাকে। ঐ বায়ু নিচে নামার ফলে আরও উষ্ণ এবং শুষ্ক হয়ে উঠে বলেই ঐ স্থানে বৃষ্টিপাত হয় না। এই বৃষ্টিহীন স্থানকে বলা হয় বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল (Rain-Shadow region)।

ঘূর্ণিবাত বৃষ্টিপাত

ঘূর্ণিবাত কেন্দ্রের বায়ু যখন উপরে উঠে যায় তখন তাপমাত্রা হ্রাস পায় ও শীতল হয়। এ সময় বায়ুতে থাকা জলীয়বাষ্প অতিরিক্ত ঘণীভূত হয়ে ঘূর্ণিবাত বৃষ্টপাত ঘটায়।

সংঘর্ষ বৃষ্টিপাত

শীতল ও উষ্ণ বায়ুপুঞ্জ যখন মুখোমুখি হয় তখন শীতল বায়ুর সংস্পর্শে উষ্ণ বায়ুর তাপমাত্রা হ্রাস পায় এবং শিশিরাঙ্কে পোঁছায়। আরও ঘনীভূত হয়ে বায়ুপুঞ্জের সংযোগস্থলে বৃষ্টিপাত ঘটায়। এই প্রকার বৃষ্টি নাতিশীতোষ্ণ বৃষ্টিপাত নামে পরিচিত। এই ধরনের বৃষ্টি নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে দেখা যায়।

সারাংশ

জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু উর্ধ্বাকাশে ঘনীভূত হয়ে মেঘে পরিণত হয় যাতে অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পানির কণা থাকে। মাধ্যাকর্ষণের টানে এই ঘনীভূত মেঘ পানির আকারে ভূ-পৃষ্টে পতিত হলে তাকে বৃষ্টিপাত বলে। বৃষ্টিপাত মূলত চার প্রকার। যথা- পরিচলন বৃষ্টিপাত, শৈলোৎক্ষপে বৃষ্টিপাত, ঘূর্ণিবাত বৃষ্টিপাত ও সংঘর্ষ বৃষ্টিপাত। জলীয়বাষ্প সম্পন্ন হালকা বায়ু উপরে উঠে শীতল বায়ুর সংস্পর্শে প্রথমে মেঘ ও পরে পরিচলন বৃষ্টিপাত হয়। জলীয়বাষ্প সম্পন্ন বায়ু ভূ-পৃষ্ঠের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় তা পর্বতে বাধাপ্রাপ্ত হয়। এই বায়ু পর্বতের প্রতিবাত ঢাল বেয়ে উপরে উঠে যায় এবং শীতল হয়ে শৈলোৎক্ষপে বৃষ্টিপাত ঘটায়।

শেয়ার করুন

মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার তথ্য সংরক্ষিত রাখুন

বিশেষ শর্তসাপেক্ষে এই ওয়েবসাইটটি সামাজিক কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ কিংবা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নিকট বিক্রি করা হবে।

বৃষ্টিপাত এবং বৃষ্টিপাতের প্রকাভেদ

প্রকাশ: ০৪:২৬:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ জুলাই ২০২২

আমরা জানি, কোনো অঞ্চলের প্রাত্যহিক বায়ুর তাপ, চাপ, আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাত পাত, বায়ুপ্রবাহের গড় অবস্থাকে বলা হয় আবহাওয়া। বৃষ্টিপাত আবহাওয়ার খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। এখানে বৃষ্টিপাত কী অর্থাৎ বৃষ্টিপাতের সংজ্ঞা এবং বৃষ্টিপারের প্রকারভেদ উল্লেখ করা হলো।

বৃষ্টিপাত কী?

বৃষ্টিপাত হলো কোনো অঞ্চলের আবহাওয়ার একটি অবস্থা যা নানা ধরনের আবহাওয়ার উপাদানসমূহের উপর নির্ভরশীল। জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু উর্ধ্ব আকাশে ঠান্ডা ও ঘনীভূত হয়ে মেঘে পরিণত হয়। এই সকল মেঘের মধ্যে থাকে অসংখ্য পানিকণা ও বরফকণা। এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পানি ও বরফকণা পরস্পরের সাথে মিলে বড় পানির কণায় পরিণত হয়। স্বাভাবিকভাবে মেঘ যখন আকাশে ভাসতে থাকে তখন তা ঘনীভূত হয়ে ফোঁটা ফোঁটা আকারে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে ভূ-পৃষ্ঠে পতিত হলে তাকে বলে বৃষ্টিপাত (Rainfall)।

বৃষ্টিপাত কীভাবে হয়?

সূর্যের তাপে যে জলীয়বাষ্প তৈরি হয় তা উপরের শীতল বায়ুর সংস্পর্শে আসলে তা সহজেই পরিপৃক্ত হয়। ঐ পরিপৃক্ত বায়ুই পরে ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র জলকণাতে পরিণত হয় এবং বায়ুমণ্ডলের ধূলিকণার সংস্পর্শে এসে জমাট বেঁধে মেঘের আকার ধারণ করে। এই মেঘ বাতাসে ভাসতে থাকে। বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা যদি হ্রাস পায় তবে ঐ ঘনীভূত মেঘ পানির কণা বা বরফকুচিরূপে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে পৃথিবীতে পতিত হয়। এই পদ্ধতিতেই বৃষ্টিপাত হয়।

বৃষ্টিপাতের প্রকারভেদ

মোট ৪টি উপায়ে জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু উর্ধ্বাকাশে উত্থিত হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায় বলে বৃষ্টিপাত প্রধানত ৪ প্রকার। বৃষ্টিপাতের এই ৪টি প্রকারভেদ হলো—

  1. পরিচলন বৃষ্টিপাত
  2. শৈলোৎক্ষপে বৃষ্টিপাত
  3. ঘূর্ণিবাত বৃষ্টিপাত
  4. সংঘর্ষ বৃষ্টিপাত।

নিম্নে এ সকল বৃষ্টিপাতের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হলো—

পরিচলন বৃষ্টিপাত

ভূ-পৃষ্ঠের বায়ু উষ্ণ হলে প্রচুর জলীয়বাষ্প সম্পন্ন হালকা বায়ু উপরে উঠে যায়। এ সময়ে শীতল বায়ুর সংস্পর্শে এসে ঐ জলীয়বাষ্প প্রথমে মেঘ ও পরে বৃষ্টিতে পরিণত হয়ে সোজা নিচে নেমে আসে। এই বৃষ্টিপাতকে বলা হয় পরিচলন বৃষ্টি। পরিচলন বৃষ্টিতে বায়ুর তাপ হ্রাস পেয়ে যখন অতিরিক্ত জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয় তখন এই ধরনের বৃষ্টিপাত ঘটায়। নিরক্ষীয় নিম্নচাপ এলাকায় পরিচলন বৃষ্টিপাত বেশি হয় কারণ এই সব এলাকার উর্ধ্বগামী বায়ুতে প্রচুর জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু থাকে। নিরক্ষীয় এলাকায় স্থলভাগের থেকে জলভাগের বিস্তৃতি বেশি এবং এখানে লম্বভাবে সূর্যকিরণ পতিত হয়। এই অঞ্চলে হালকা জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু থাকে। হালকা জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু যখন শীতল বায়ুর সংস্পর্শে আসে 

তখন এই রকম পরিচলন বৃষ্টিপাত ঘটায়। নিরক্ষীয় অঞ্চলে প্রায় সারাবছরই সন্ধ্যা ও বিকালে এইরূপ বৃষ্টি হয়। নাতিশীতোষ্ণমণ্ডলে গ্রীষ্মকালের শুরূতে পরিচলন বৃষ্টিপাত হয়।

পরিচলন বৃষ্টিপাত তাই নিম্নলিখিত পর্যায় অনুসারে ঘটে থাকে—

  • প্রচুর সূর্যের তাপে ভূ-পৃষ্ঠ দ্রূত উত্তপ্ত হয়ে উঠে। 
  • ভূ-পৃষ্ঠের উপরে অবস্থিত উষ্ণ ও হালকা বায়ু উপরে উঠে গিয়ে পরিচলনের সৃষ্টি করে। 
  • উর্ধ্বমুখী বায়ু যখন শীতল হতে থাকে তখন বায়ুতে যথেষ্ট পরিমাণ জলীয়বাষ্পের উপস্থিতিতে ঘনীভবন হয়।
  • ঘণীভবনের ফলে মেঘ উপরের দিকে বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে ঝড়োপুঞ্জ মেঘের সৃষ্টি করে। এ ধরনের মেঘ থেকে ঝড়সহ মুষলধারে বৃষ্টি এবং কখনো কখনো শিলাবৃষ্টি ও বজ্রপাত হয়।

শৈলোৎক্ষপে বৃষ্টিপাত

জলীয়বাষ্পপূর্ণ উষ্ণ ও আর্দ্র বায়ু ভূ-পৃষ্ঠের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় সময় পর্বতে বাধাপ্রাপ্ত হলে তা পর্বতের ঢাল বেয়ে উপরের দিকে উঠে যায়। এই বায়ু শীতল হয়ে পর্বতের প্রতিবাত ঢালে যে বৃষ্টিপাত ঘটায় তাকে শৈলোৎক্ষপে বৃষ্টি বলে। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু মেঘালয় পাহাড়ে বাধা পাওয়ায় সিলেট এলাকায় প্রচুর শৈলোৎক্ষপে বৃষ্টি হয়। তবে পর্বত অতিক্রমকারী বায়ু যদি পর্বতের অপর পাশে অর্থাৎ অনুবাত ঢালে পৌঁছায় তখন ঐ বায়ুতে জলীয়বাষ্প কমে থাকে। ঐ বায়ু নিচে নামার ফলে আরও উষ্ণ এবং শুষ্ক হয়ে উঠে বলেই ঐ স্থানে বৃষ্টিপাত হয় না। এই বৃষ্টিহীন স্থানকে বলা হয় বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল (Rain-Shadow region)।

ঘূর্ণিবাত বৃষ্টিপাত

ঘূর্ণিবাত কেন্দ্রের বায়ু যখন উপরে উঠে যায় তখন তাপমাত্রা হ্রাস পায় ও শীতল হয়। এ সময় বায়ুতে থাকা জলীয়বাষ্প অতিরিক্ত ঘণীভূত হয়ে ঘূর্ণিবাত বৃষ্টপাত ঘটায়।

সংঘর্ষ বৃষ্টিপাত

শীতল ও উষ্ণ বায়ুপুঞ্জ যখন মুখোমুখি হয় তখন শীতল বায়ুর সংস্পর্শে উষ্ণ বায়ুর তাপমাত্রা হ্রাস পায় এবং শিশিরাঙ্কে পোঁছায়। আরও ঘনীভূত হয়ে বায়ুপুঞ্জের সংযোগস্থলে বৃষ্টিপাত ঘটায়। এই প্রকার বৃষ্টি নাতিশীতোষ্ণ বৃষ্টিপাত নামে পরিচিত। এই ধরনের বৃষ্টি নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে দেখা যায়।

সারাংশ

জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু উর্ধ্বাকাশে ঘনীভূত হয়ে মেঘে পরিণত হয় যাতে অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পানির কণা থাকে। মাধ্যাকর্ষণের টানে এই ঘনীভূত মেঘ পানির আকারে ভূ-পৃষ্টে পতিত হলে তাকে বৃষ্টিপাত বলে। বৃষ্টিপাত মূলত চার প্রকার। যথা- পরিচলন বৃষ্টিপাত, শৈলোৎক্ষপে বৃষ্টিপাত, ঘূর্ণিবাত বৃষ্টিপাত ও সংঘর্ষ বৃষ্টিপাত। জলীয়বাষ্প সম্পন্ন হালকা বায়ু উপরে উঠে শীতল বায়ুর সংস্পর্শে প্রথমে মেঘ ও পরে পরিচলন বৃষ্টিপাত হয়। জলীয়বাষ্প সম্পন্ন বায়ু ভূ-পৃষ্ঠের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় তা পর্বতে বাধাপ্রাপ্ত হয়। এই বায়ু পর্বতের প্রতিবাত ঢাল বেয়ে উপরে উঠে যায় এবং শীতল হয়ে শৈলোৎক্ষপে বৃষ্টিপাত ঘটায়।