১০:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
                       

প্রবাসে নাগরিকত্ব গ্রহণকারী বাংলাদেশি ও রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের নিয়ে কৌশল, চ্যালেঞ্জ এবং এগিয়ে যাওয়ার পথ বাধা সমন্বয়হীনতা  

দেলোয়ার জাহিদ
  • প্রকাশ: ০৩:০৫:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জানুয়ারি ২০২৩
  • / ১১৭২ বার পড়া হয়েছে


Google News
বিশ্লেষণ-এর সর্বশেষ নিবন্ধ পড়তে গুগল নিউজে যোগ দিন

বিশেষ শর্তসাপেক্ষে এবং স্বল্পমূল্যে এই ওয়েবসাইটটি সামাজিক কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ কিংবা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নিকট বিক্রি করা হবে।

বাংলাদেশ হাই কমিশন, লন্ডন এর উদ্যোগে এবং অনুরোধে গত ১৮ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক স্মারকে জানানো হয়েছে যে, এখন থেকে যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব গ্রহণকারী বাংলাদেশি নাগরিকসহ দ্বিতীয় বা তৃতীয় প্রজন্ম পর্যন্ত বাংলাদেশি নাগরিকত্ব বহাল থাকবে বিধায় তাদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট পেতে দ্বৈত নাগরিকত্ব সনদের প্রয়োজন নেই। এ প্রেক্ষাপটে দ্বিতীয় বা তৃতীয় প্রজন্মের বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত ব্রিটিশ নাগরিকগণ শুধুমাত্র জন্মনিবন্ধন সনদ এবং পিতা/মাতার বাংলাদেশি পাসপোর্টের ভিত্তিতে নতুন বাংলাদেশি পাসপোর্ট গ্রহণ করতে পারবেন।(জিবিএন, ২০ ডিসেম্বর ২০২২) প্রতিবেদনটিতে প্রকাশ, ইতোপুর্বে বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর কর্তৃক ব্রিটিশ-বাংলাদেশি দ্বৈত নাগরিকগণের সন্তানদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট প্রাপ্তির ক্ষেত্রে দ্বৈত নাগরিকত্ব সনদ প্রদান বাধ্যতামূলক করার ফলে সৃষ্ট দীর্ঘসূত্রিতার কারণে উল্লিখিত সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনাকরণের জন্য বাংলাদেশ হাই কমিশন লন্ডন সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পত্র প্রেরণ করে এবং যোগাযোগ অব্যাহত রাখে। তারই ফলশ্রুতিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ১৮ ডিসেম্বর উল্লিখিত স্মারক ইস্যু করে।

অস্থায়ী এবং স্থায়ী বাংলাদেশিদের অভিবাসীদের প্রতি এ প্রতিবেদনটি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।  দূতাবাসের নেয়া এটি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। কিন্তু সুযোগটি কি শুধুমাত্র যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব গ্রহণকারী বাংলাদেশি নাগরিকসহ তাদের দ্বিতীয় বা তৃতীয় প্রজন্ম পর্যন্তদের জন্য নাকি বিদেশে সকল বাংলাদেশী নাগরিকত্ব গ্রহণকারীদের জন্য সমভাবে প্রযোজ্য তা স্পষ্ট নয়.

আন্তর্জাতিক সংস্থা অনুসারে মাইগ্রেশনের (IOM) ওয়ার্ল্ড মাইগ্রেশন রিপোর্ট ২০২০ এর তথ্য মতে মোট ৭.৫ মিলিয়ন বাংলাদেশি বিদেশে বসবাস করে, দেশটি আন্তর্জাতিক অভিবাসীদের জন্য শীর্ষ ২০টি দেশের মধ্যে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। আন্তর্জাতিক এ সংস্থার মতে, ভারত এখনও আন্তর্জাতিক অভিবাসীদের জন্য সবচেয়ে বড় দেশ, যেখানে ১৭.৫ মিলিয়ন ভারতীয় বিদেশে বসবাস করে, তারপরে মেক্সিকো (১১.৮ মিলিয়ন), চীন (১০.৭ মিলিয়ন), রাশিয়া (১০.৬ মিলিয়ন) এবং সিরিয়া (৫.৬ মিলিয়ন)…প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভিবাসীদের পাঠানো আন্তর্জাতিক রেমিট্যান্স ২০১৮ সালে বেড়ে $৬৮৯ বিলিয়ন হয়েছে, যার শীর্ষ সুবিধাভোগীরা হচ্ছে ভারত ($৭৮.৬ বিলিয়ন), চীন ($৬৭.৪ বিলিয়ন), মেক্সিকো ($৩৫.৭ বিলিয়ন) এবং ফিলিপাইন ($৩৪ বিলিয়ন)।

জাতীয় উন্নয়ন প্রচেষ্টায় অনাবাসী বাংলাদেশিদের সম্পৃক্ত করার জন্য বাংলাদেশের প্রচেষ্টাকে আরও ত্বরান্বিত করতে হবে। প্রবাসী বাংলাদেশিদের সর্বোচ্চ সেবা প্রদানে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। প্রবাসীদের জন্য উৎসাহজনক ও দৃশ্যমান সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হলে রেমিট্যান্স ও বিনিয়োগ বাড়বে।

সরকারি সূত্রে বর্তমানে প্রায় ৭.৫ মিলিয়ন বাংলাদেশি অভিবাসী সারা বিশ্বে কাজ করছে। বার্ষিক বাংলাদেশ থেকে অভিবাসন প্রায় ০.৩-০.৪মি. ২০১০ সালে, মাইগ্রেশন বাংলাদেশ থেকে ছিল ৩,৯০,৭০২ জন। বাংলাদেশী শ্রমিকদের মূলত ১৪৩ জন নিয়োজিত বিশ্বের দেশগুলি কিন্তু প্রায় ৯০% অভিবাসন মধ্যভাগে হয় পূর্ব ও মালয়েশিয়া। লিবিয়া, কাতার সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, ওমান, মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুর গন্তব্যের কয়েকটি প্রধান দেশ। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে দুই ধরনের আন্তর্জাতিক অভিবাসন ঘটে। স্থানটি বেশিরভাগ শিল্পোন্নত পশ্চিমে এবং অন্যটি মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো। শিল্পোন্নত পশ্চিমে স্বেচ্ছায় অভিবাসন অন্তর্ভুক্ত স্থায়ী বাসিন্দা, অভিবাসী, ওয়ার্ক পারমিট ধারক এবং পেশাদার। তারা সাধারণত দীর্ঘমেয়াদী বা স্থায়ী অভিবাসী হিসেবে ধরা হয়।

বিভিন্ন মহাদেশ ও দেশে বসবাসকারী অভিবাসীরা “বাংলাদেশি” নামে পরিচিত “ডায়াস্পোরা” যাদের মধ্যে দেশে  উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার অপার সম্ভাবনা রয়েছে।  বাংলাদেশি অ্যাকাডেমিয়া, সুশীল সমাজের সদস্য ও থিঙ্ক ট্যাঙ্কের অংশ যারা প্রবাসে রয়েছেন তাদের দক্ষতা, প্রযুক্তি জ্ঞান, রেমিট্যান্স ও দেশপ্রেম বাংলাদেশের উন্নয়নে সমন্বিতভাবে কাজে লাগাতে হবে।

শেয়ার করুন

মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার তথ্য সংরক্ষিত রাখুন

লেখকতথ্য

দেলোয়ার জাহিদ

সিনিয়র রিসার্চ ফ্যাকাল্টি মেম্বার, প্রাবন্ধিক ও রেড ডিয়ার (আলবার্টা, কানাডা) নিবাসী

বিশেষ শর্তসাপেক্ষে এই ওয়েবসাইটটি সামাজিক কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ কিংবা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নিকট বিক্রি করা হবে।

প্রবাসে নাগরিকত্ব গ্রহণকারী বাংলাদেশি ও রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের নিয়ে কৌশল, চ্যালেঞ্জ এবং এগিয়ে যাওয়ার পথ বাধা সমন্বয়হীনতা  

প্রকাশ: ০৩:০৫:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জানুয়ারি ২০২৩

বাংলাদেশ হাই কমিশন, লন্ডন এর উদ্যোগে এবং অনুরোধে গত ১৮ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক স্মারকে জানানো হয়েছে যে, এখন থেকে যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব গ্রহণকারী বাংলাদেশি নাগরিকসহ দ্বিতীয় বা তৃতীয় প্রজন্ম পর্যন্ত বাংলাদেশি নাগরিকত্ব বহাল থাকবে বিধায় তাদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট পেতে দ্বৈত নাগরিকত্ব সনদের প্রয়োজন নেই। এ প্রেক্ষাপটে দ্বিতীয় বা তৃতীয় প্রজন্মের বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত ব্রিটিশ নাগরিকগণ শুধুমাত্র জন্মনিবন্ধন সনদ এবং পিতা/মাতার বাংলাদেশি পাসপোর্টের ভিত্তিতে নতুন বাংলাদেশি পাসপোর্ট গ্রহণ করতে পারবেন।(জিবিএন, ২০ ডিসেম্বর ২০২২) প্রতিবেদনটিতে প্রকাশ, ইতোপুর্বে বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর কর্তৃক ব্রিটিশ-বাংলাদেশি দ্বৈত নাগরিকগণের সন্তানদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট প্রাপ্তির ক্ষেত্রে দ্বৈত নাগরিকত্ব সনদ প্রদান বাধ্যতামূলক করার ফলে সৃষ্ট দীর্ঘসূত্রিতার কারণে উল্লিখিত সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনাকরণের জন্য বাংলাদেশ হাই কমিশন লন্ডন সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পত্র প্রেরণ করে এবং যোগাযোগ অব্যাহত রাখে। তারই ফলশ্রুতিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ১৮ ডিসেম্বর উল্লিখিত স্মারক ইস্যু করে।

অস্থায়ী এবং স্থায়ী বাংলাদেশিদের অভিবাসীদের প্রতি এ প্রতিবেদনটি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।  দূতাবাসের নেয়া এটি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। কিন্তু সুযোগটি কি শুধুমাত্র যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব গ্রহণকারী বাংলাদেশি নাগরিকসহ তাদের দ্বিতীয় বা তৃতীয় প্রজন্ম পর্যন্তদের জন্য নাকি বিদেশে সকল বাংলাদেশী নাগরিকত্ব গ্রহণকারীদের জন্য সমভাবে প্রযোজ্য তা স্পষ্ট নয়.

আন্তর্জাতিক সংস্থা অনুসারে মাইগ্রেশনের (IOM) ওয়ার্ল্ড মাইগ্রেশন রিপোর্ট ২০২০ এর তথ্য মতে মোট ৭.৫ মিলিয়ন বাংলাদেশি বিদেশে বসবাস করে, দেশটি আন্তর্জাতিক অভিবাসীদের জন্য শীর্ষ ২০টি দেশের মধ্যে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। আন্তর্জাতিক এ সংস্থার মতে, ভারত এখনও আন্তর্জাতিক অভিবাসীদের জন্য সবচেয়ে বড় দেশ, যেখানে ১৭.৫ মিলিয়ন ভারতীয় বিদেশে বসবাস করে, তারপরে মেক্সিকো (১১.৮ মিলিয়ন), চীন (১০.৭ মিলিয়ন), রাশিয়া (১০.৬ মিলিয়ন) এবং সিরিয়া (৫.৬ মিলিয়ন)…প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভিবাসীদের পাঠানো আন্তর্জাতিক রেমিট্যান্স ২০১৮ সালে বেড়ে $৬৮৯ বিলিয়ন হয়েছে, যার শীর্ষ সুবিধাভোগীরা হচ্ছে ভারত ($৭৮.৬ বিলিয়ন), চীন ($৬৭.৪ বিলিয়ন), মেক্সিকো ($৩৫.৭ বিলিয়ন) এবং ফিলিপাইন ($৩৪ বিলিয়ন)।

জাতীয় উন্নয়ন প্রচেষ্টায় অনাবাসী বাংলাদেশিদের সম্পৃক্ত করার জন্য বাংলাদেশের প্রচেষ্টাকে আরও ত্বরান্বিত করতে হবে। প্রবাসী বাংলাদেশিদের সর্বোচ্চ সেবা প্রদানে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। প্রবাসীদের জন্য উৎসাহজনক ও দৃশ্যমান সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হলে রেমিট্যান্স ও বিনিয়োগ বাড়বে।

সরকারি সূত্রে বর্তমানে প্রায় ৭.৫ মিলিয়ন বাংলাদেশি অভিবাসী সারা বিশ্বে কাজ করছে। বার্ষিক বাংলাদেশ থেকে অভিবাসন প্রায় ০.৩-০.৪মি. ২০১০ সালে, মাইগ্রেশন বাংলাদেশ থেকে ছিল ৩,৯০,৭০২ জন। বাংলাদেশী শ্রমিকদের মূলত ১৪৩ জন নিয়োজিত বিশ্বের দেশগুলি কিন্তু প্রায় ৯০% অভিবাসন মধ্যভাগে হয় পূর্ব ও মালয়েশিয়া। লিবিয়া, কাতার সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, ওমান, মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুর গন্তব্যের কয়েকটি প্রধান দেশ। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে দুই ধরনের আন্তর্জাতিক অভিবাসন ঘটে। স্থানটি বেশিরভাগ শিল্পোন্নত পশ্চিমে এবং অন্যটি মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো। শিল্পোন্নত পশ্চিমে স্বেচ্ছায় অভিবাসন অন্তর্ভুক্ত স্থায়ী বাসিন্দা, অভিবাসী, ওয়ার্ক পারমিট ধারক এবং পেশাদার। তারা সাধারণত দীর্ঘমেয়াদী বা স্থায়ী অভিবাসী হিসেবে ধরা হয়।

বিভিন্ন মহাদেশ ও দেশে বসবাসকারী অভিবাসীরা “বাংলাদেশি” নামে পরিচিত “ডায়াস্পোরা” যাদের মধ্যে দেশে  উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার অপার সম্ভাবনা রয়েছে।  বাংলাদেশি অ্যাকাডেমিয়া, সুশীল সমাজের সদস্য ও থিঙ্ক ট্যাঙ্কের অংশ যারা প্রবাসে রয়েছেন তাদের দক্ষতা, প্রযুক্তি জ্ঞান, রেমিট্যান্স ও দেশপ্রেম বাংলাদেশের উন্নয়নে সমন্বিতভাবে কাজে লাগাতে হবে।