গ্লুকোমা- বিশ্বব্যাপী অন্ধত্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক কারণ
গ্লুকোমার তাৎক্ষণিক নির্ণয় এবং চিকিৎসা অপ্রয়োজনীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতা প্রতিরোধ করতে পারে, তবে অনেকেই জানেন না যে তাদের এই রোগ রয়েছে। প্রত্যেককে নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করাতে উৎসাহ যোগানো হয় এ গ্লুকোমা-সপ্তাহে। বিশেষ করে ৪০ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য বছরে অন্তত একবার চোখ পরীক্ষা করানো জরুরি বলে পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
- প্রকাশ: ০৪:৩৩:৫০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ ২০২৪
- / ৬৩৪ বার পড়া হয়েছে
গ্লুকোমার তাৎক্ষণিক নির্ণয় এবং চিকিৎসা অপ্রয়োজনীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতা প্রতিরোধ করতে পারে, তবে অনেকেই জানেন না যে তাদের এই রোগ রয়েছে। প্রত্যেককে নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করাতে উৎসাহ যোগানো হয় এ গ্লুকোমা-সপ্তাহে। বিশেষ করে ৪০ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য বছরে অন্তত একবার চোখ পরীক্ষা করানো জরুরি বলে পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
গ্লুকোমা জটিল একটি চোখের রোগ, যা অপটিক স্নায়ুকে প্রভাবিত করে। এই রোগে অপটিক স্নায়ু (চোখ এবং মস্তিষ্কের মধ্যে সংযোগকারী একটি স্নায়ু) ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ক্রমশ চোখের দৃষ্টি কমে যায়। জানান না দিয়েই আসে এই দৃষ্টিঘাতী অসুখ। যে কোনও বয়সেই মানুষের চোখে গ্লুকোমা দেখা দিতে পারে। তবে যাদের বয়স ৪০ বছর ছাড়িয়েছে এবং বংশে কারও গ্লুকোমা আছে, তাদের গ্লুকোমার আশঙ্কা থাকে বেশি। ঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু না করলে চিরতরে দৃষ্টিশক্তিও কেড়ে নিতে পারে এই রোগ। বিশ্বব্যাপী, বর্তমানে প্রায় আট কোটি মানুষ এই অসুখে আক্রান্ত (গ্লুকোমা রিসার্চ ফাউন্ডেশন), যা ২০৪০ সাল নাগাদ এ সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় ১১ কোটিতে। বাংলাদেশে গ্লুকোমা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় ২৬ লাখ।
গ্লুকোমা কী এবং এর ধরন
মানুষের দেহে প্রধানত তিন ধরনের তরলজনিত চাপ খুব বেশি আলোচিত, যার মধ্যে চোখের অভ্যন্তরীণ চাপ বা ইন্ট্রাওকুলার প্রেসার (আই ও পি) হলো একটি; অপর দুটি হলো রক্তচাপ (সিস্টোলিক ও ডায়াস্টোলিক) এবং সেরেব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড বা মস্তিষ্কের সুষুম্না তরলের চাপ। এছাড়াও, দেহের বিভিন্ন অঙ্গেও নিজস্ব চাপ রয়েছে। চোখের অভ্যন্তরীণ চাপ ২১ মি.মি. পারদ চাপের বেশি থাকলে গ্লুকোমার আশঙ্কা বেশি। চোখের ভেতরে অতিরিক্ত চাপের কারণে অপটিক স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্থ হয়, ফলে ধীরে ধীরে দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণতর হতে থাকে, যা পরবর্তী কালে অন্ধত্ব ডেকে আনে।
প্রসঙ্গত: চোখের সিলিয়ারি প্রসেস দ্বারা প্রাকৃতিকভাবে তরল (জলীয় হিউমার) তৈরি হয় এবং একটি বিশেষ স্পঞ্জি টিস্যু (কর্নিয়ার গোড়ার চারপাশে অবস্থিত) ট্র্যাবেক্যুলার মেশওয়ার্কের মাধ্যমে এর নিয়মিত নিষ্কাশন সাধারণত চোখের চাপের ভারসাম্যতা বজায় রাখে এবং চোখের চাপ রাখে ২১ মি.মি. পারদ চাপের নীচে। গ্লুকোমা অনেক প্রকারের হয়; তবে, তিনটি প্রধান ধরন হলো- প্রাথমিক ওপেন অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমা, ক্লোজড অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমা এবং স্বাভাবিক টেনশন গ্লুকোমা। অনেকের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক চাপ থাকা সত্ত্বেও অপটিক স্নায়ুর ক্ষতি হতে পারে যা স্বাভাবিক-টেনশন গ্লুকোমার অন্তর্ভুক্ত। সবচেয়ে সাধারণ প্রকার হলো ওপেন-অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমা, যেখানে চোখের মধ্যে তরল নিষ্কাশনের কোণ খোলা থাকে। ওপেন-অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমা সময়ের সাথে ধীরে ধীরে বিকশিত হয়, যদিও চোখে ব্যথা অনুভূত হয় না। চিকিৎসা না করালে প্রথমে পার্শ্বীয় দৃষ্টি, তারপর কেন্দ্রীয় দৃষ্টি নষ্ট হয়ে অন্ধত্ব বরণ করতে হয়। পক্ষান্তরে, ক্লোজড-অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমা বা ‘কোণ-অবসান গ্লুকোমা’ ধীরে ধীরে বা হঠাৎ করে হতে পারে। এর লক্ষণগুলি হলো চোখে তীব্র ব্যথা, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, ঝাপসা দৃষ্টি, চোখের মণি বা তারারন্ধ্র বড় হয়ে যাওয়া ও বমিভাব। ওপেন-অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমার ক্ষেত্রে ট্র্যাবেক্যুলার মেশওয়ার্কের মাধ্যমে জলীয় হিউমার পদার্থের নির্গমন বেশ ধীর বলে মনে করা হয়, যখন ক্লোজড-অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমায় আইরিস ট্র্যাবেক্যুলার মেশওয়ার্ককে ব্লক করে ফেলে। দক্ষিণ এশীয়দের মধ্যে ক্লোজড-অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমা হওয়ার ঝুঁকি বেশি, যা অন্ধত্বের কারণ। গ্লুকোমার কারণে দৃষ্টিশক্তি কমে গেলে তা একপর্যায়ে স্থায়ী হয়ে যায়। এছাড়া, নবজাত শিশুদের মধ্যেও কদাচিৎ গ্লুকোমা প্রকাশ প্রায় যাকে কনজেনিটাল বা জন্মগত গ্লুকোমা বলা হয়। এই ভাগটি করা হয় চোখের ভিতরের কোণগুলো পরীক্ষা করে– অর্থাৎ কোণ বলতে চোখের কর্নিয়ার পিছনের স্তর ও আইরিশ এর মধ্যবর্তী কোণকেই বুঝানো হয়। এছারা ‘ওসিটি (অপটিকাল কোহেরেন্স টোনোগ্রাফি)’ এর মাধ্যমে অপটিক নার্ভের কতটা ক্ষতি হয়েছে তার আনুমানিক একটা হিসাবও করা যায়। পক্ষান্তরে, ক্লোজড-অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমায় আক্রান্ত রোগীদের জরুরীভিত্তিতে চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। এই জাতীয় গ্লুকোমাতে রোগীর চোখে অনেক সময় ব্যথা হয়, চোখ লাল হয়ে ঝাপসা হওয়ার সম্ভাবনা হয়। এই ধরনের গ্লুকোমায়, আইরিস (চোখের রঙিন অংশ) থেকে তরল বের হতে বাধা পায়, ফলে তরল দ্রুত জমা হয়ে চোখের চাপ অল্প সময়ের মধ্যেই ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। যদি এটির চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই রোগীর দৃষ্টি একেবারেই চলে যেতে পারে।
গ্লুকোমার লক্ষণ কী কী?
পূর্বেই উল্লেখ করেছি, গ্লুকোমা অপটিক স্নায়ুর ক্রমবর্ধিষ্ণু ক্ষতি করে এবং এর কারণে অপটিক নিউরোপ্যাথিও দেখা দিতে পারে। গ্লুকোমায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের চোখে তরল নিষ্কাশনে বাধাগ্রস্ত হওয়ায় চোখের চাপ বেড়ে যায় এবং এর অগ্রগতির সাথে বিভিন্ন উপসর্গ তৈরি হয়। সাধারণভাবে গ্লুকোমায় চোখ লাল, পানি পড়া এবং অল্প ব্যথা হয়। পরবর্তীতে সে উপসর্গগুলো আরও বৃদ্ধি পায় এবং দৃষ্টি ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হয়ে আসে, মাথাব্যাথা হয়, বিবমিষা বা বমির উদ্রেক হয়। এছাড়া, এই রোগের একটা উল্লেখযোগ্য লক্ষণ হলো আলোর চতুর্দিকে ‘রেনবো হ্যালো’ বা রামধনুর ছটা। সামনের দৃষ্টি ততটা নাও কমতে পারে, তবে পার্শ্বীয় দৃষ্টিশক্তি, যেমন উপর, নীচ, ডান বাম এই চারদিকের দৃষ্টি সংকোচন হতে থাকে। এ অবস্থাকে ‘টানেল ভিসন’ বলা হয়। গ্লুকোমা রোগীদের ক্ষেত্রে প্রেসবায়োপিয়া বা নিয়ার ভিসন পাওয়ারের পরিবর্তন হতে পারে।
গ্লুকোমা হবার কারণসমূহ
চোখের ভিতরে, জলীয় হিউমার নামক একটি তরল চোখের আকৃতি বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং পুষ্টি সরবরাহ করে। চোখের জলীয় রস নিয়মিতভাবে ট্র্যাবেকুলার মেশওয়ার্ক-নামক একটি টিস্যুর মাধ্যমে নিষ্কাশিত হয়। ট্র্যাবেকুলার মেশওয়ার্ক অবস্থান করে সিলিয়ারি বডি সংলগ্ল কর্নিয়ার গা ঘেঁষে। ওপেন-অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমায়, এই নিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত হয়, যার ফলে তরল জমা হয় এবং চোখের ভিতরে বাড়তি চাপ তৈরি করে। এই উচ্চ চাপ অপটিক স্নায়ুর ক্ষতি করতে পারে। চাপ বাড়তে থাকলে ধীরে ধীরে দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণতর হতে থাকে, পরবর্তী কালে যা অন্ধত্ব ডেকে আনে। তবে, ইন্ট্রাওকুলার চাপ বৃদ্ধি না পেয়েও অপটিক স্নায়ুর ক্ষতি হতে পারে, যা স্বাভাবিক-টেনশন গ্লুকোমা নামে পরিচিত। গ্লুকোমা রোগের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে চোখের অভ্যন্তরীণ চাপ বা ইন্ট্রাঅকুলার প্রেসার বেড়ে যাওয়া। পরিবারের অন্য সদস্যের এই রোগ থাকা, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, অতিস্থুলতা, চোখে আঘাত পাওয়া ইত্যাদি কারণও চিহ্নিত হয়েছে। নিওভাসকুলার গ্লুকোমা ঘটে যখন চোখ অতিরিক্ত রক্তনালি তৈরি করে যা সাধারণত চোখের তরল নিষ্কাশনের অংশকে আবৃত করে। এটি সাধারণত ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপের মতো কারণে ঘটে থাকে। এই অবস্থাটিতেও চোখের দৃষ্টি সম্পূর্ণ হারাতে পারে। এমনকি চোখের আইরিস থেকে পিগমেন্ট ঝরে গিয়ে চোখ থেকে তরল বের হতে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে। এই অবস্থাকে বলা হয় পিগমেন্টারি গ্লুকোমা। এছাড়া, ছানি এবং টিউমারের মতো অন্যান্য স্বাস্থ্যের অবস্থাও গ্লুকোমা সৃষ্টি করতে পারে – তবে এটি তেমন সাধারণ নয়। এছাড়া, যারা স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ নেন নিয়মিত, তাদেরও গ্লুকোমায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকতে পারে। এমনকি, চোখের দৃষ্টিগত/প্রতিসরণকারী ত্রুটি ‘মায়োপিয়া’ (কাছের বস্তুগুলো পরিষ্কার দেখায়, কিন্তু দূরের বস্তু ঝাপসা দেখায়) গ্লুকোমা বিকাশের জন্য একটি ঝুঁকির কারণ হিসাবেও স্বীকৃত।
ইতিবাচক পারিবারিক ইতিহাস গ্লুকোমার ঝুঁকির কারণ, অর্থাৎ যাদের গ্লুকোমা-আক্রান্ত সহদর ভাইবোন আছে তাদের প্রাথমিক ওপেন-অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমা হওয়ার ঝুঁকি প্রায় দুই থেকে চারগুণ বেড়ে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, গ্লুকোমা বিশেষ করে প্রাথমিক ওপেন-অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমা বেশ কয়েকটি জিনের (MYOC, ASB10, WDR36, NTF4, TBK1, RPGRIP, OPA1, APOE এবং OPTN1) মিউটেশনের সাথে যুক্ত। মোট ষোলটি মানব জিনোমিক অঞ্চল ওপেন-অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমা (স্বাভাবিক টেনশন গ্লুকোমা সাবগ্রুপ সহ) এবং 8টি ক্লোজড-অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমা-এর সাথে যুক্ত। এই জিনগুলি মূলত গ্লুকোমার বিকাশ এবং অগ্রগতির সাথে জড়িত, যার মধ্যে ইন্ট্রাওকুলার চাপ নিয়ন্ত্রণ, রেটিনার গ্যাংলিয়ন কোষের এবং অপটিক স্নায়ুর ফাংশন অন্তর্ভুক্ত। দক্ষিণ এশীয় রোগীদের এবং জাপান, ইউরোপ বা আমেরিকায় অধ্যুষিত রোগীদের জড়িত থাকা জিনগুলির ভিন্নতা দেখা দিতে পারে। সে কারণে বাংলাদেশও এই জিনগুলি নিয়ে গবেষণা হওয়া প্রয়োজন।
গ্লুকোমার চিকিৎসা
গ্লুকোমা পুরোপুরি প্রতিরোধ করা যায় না। তবে দ্রুত চিকিৎসা নিলে গ্লুকোমার কারণে অপটিক স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া বা অন্ধত্ব প্রতিরোধ করা যায়, যদিও চোখের ভিজ্যুয়াল ফিল্ড বেশি ক্ষতিগ্রস্ত না হওয়া পর্যন্ত গ্লুকোমা রোগ শনাক্ত করা যায় না। এ রোগে প্রচলিত তিন ধরনের চিকিৎসা রয়েছে: চোখের ড্রপস (ওষুধ) দ্বারা চিকিৎসা, লেজার চিকিৎসা এবং শল্যচিকিৎসা। ওপেন-অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমায় ‘ল্যাটানোপ্রোস্টেন বুনোড’ ধারণকারী একধরনের চোখের ড্রপ বেশ কার্যকরী, যা ওপেন-এঙ্গেল গ্লুকোমা বা চোখের উচ্চচাপ রোগীদের ইন্ট্রাওকুলার চাপ কমানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রে অনুমোদন পেয়েছিলো ২০১৭ সালে। এছাড়াও রয়েছে ল্যাটানোপোস্ট (প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন এনালগ পরিবার) এবং অন্যান্য প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন। এগুলো মূলত চোখের ‘ট্র্যাবেকুলার মেশওয়ার্ক’ টিসুতে ‘রো (Rho) কাইনেজ’ এনজাইমকে বাধা দিয়ে তরল নিষ্কাশনের গতি বাড়ায়। এর বাইরেও রয়েছে আল্ফ়া-অ্যাড্রেন্যর্জিক এগোনিস্ট, বেটা-ব্লকার এবং মাস্কারিনিক রিসেপ্টর এগোনিস্ট (পিলকারপিন)। ওপেন-অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমার রোগীদের আজীবন চিকিৎসায় থাকতে হয়। অন্যদিকে, ক্লোজড-অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমার ভালো দিক হলো এ ধরনের গ্লুকোমার চিকিৎসা আছে। নিরাময়মূলক লেজার চিকিৎসা গ্লুকোমার অগ্রগতি প্রতিরোধ করতে সক্ষম। গ্লুকোমার আধুনিক চিকিৎসা হলো এক্সপ্রেস শান্ট ইমপ্লান্টেশন, যাতে সফলতা অনেক বেশি এবং জটিলতা অনেক কম এবং বাংলাদেশেও বিদেশের তুলনায় অনেক কম খরচে এ ধরনের গ্লুকোমার শল্যচিকিৎসা করা সম্ভব। ক্ষতিগ্রস্ত অপটিক নার্ভের পুনরুদ্ধার বা অপটিক নার্ভ-সংযোজন ভবিষ্যতে হয়তো একটি সম্ভাব্য চিকিৎসা হতে পারে, তবে তা এখনও ‘দূর অস্ত’।
শেষকথা
গ্লুকোমা হলো চোখের রোগের একটি গ্রুপ এবং এটি অন্ধত্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কারণ। এবারের বিশ্ব গ্লুকোমা সপ্তাহ (মার্চ ১০ থেকে মার্চ ১৬, ২০২৪) একটি অনন্য উদ্যোগ যা বিশ্বব্যাপী প্রতিরোধযোগ্য অপরিবর্তনীয় অন্ধত্বের প্রধান কারণ হিসেবে গ্লুকোমার উপর আলোকপাত করে। গ্লুকোমার তাৎক্ষণিক নির্ণয় এবং চিকিৎসা অপ্রয়োজনীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতা প্রতিরোধ করতে পারে, তবে অনেকেই জানেন না যে তাদের এই রোগ রয়েছে। প্রত্যেককে নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করাতে উৎসাহ যোগানো হয় এ গ্লুকোমা-সপ্তাহে। বিশেষ করে ৪০ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য বছরে অন্তত একবার চোখ পরীক্ষা করানো জরুরি বলে পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। পরিবারে গ্লুকোমার ইতিহাস থাকলে সেক্ষেত্রে আরও সতর্ক হতে হবে। যেসব ব্যক্তির চোখে মাইনাস পাওযার, যাঁরা ডায়াবেটিস রোগাক্রান্ত, পরিবারের কেউ গ্লুকোমা রোগাক্রান্ত আছেন বা বহুদিন স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করছেন, তাঁরা অবশ্যই চোখের ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন। গ্লুকোমা সমন্ধে জানুন, সচেতন হন এবং অন্ধত্বের আভিশাপ থেকে বাঁচুন।