০৮:৩০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৯ মার্চ ২০২৫, ২৫ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
                       

আদর্শ হোক জীবনের সাথী

মো. সরোয়ার উদ্দিন
  • প্রকাশ: ১১:৪৯:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫
  • / ৫৬ বার পড়া হয়েছে

দুনিয়ায় এ ভয়াবহ পরিস্থিতি হতে স্থায়ী মুক্তি, শান্তি-শৃঙ্খলা ও প্রবৃদ্ধির ধারা চলমান রাখার জন্য ইসলামী আদর্শকে পুরোপুরিভাবে প্রতিষ্ঠা ও চলামান রাখা আবশ্যক।

মহাগ্রন্থ আল কুরআনে স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেছেন, এ বিশ্বের সেরা ও শ্রেষ্ঠ জীব হলো মানুষ। রসায়নশাস্ত্রে প্রাপ্ত গবেষণায় এর যথার্থ প্রমাণও মিলেছে, ‘এ পর্যন্ত পৃথিবীতে ১১৪ হতে মতান্তরে ১১৯ প্রকার মৌলিক ধাতু আবিষ্কৃত হয়েছে যার ভেতর সর্বাধিক ৪০ প্রকার মৌলিক ধাতু কেবল মানবদেহে এবং অন্যান্য প্রাণী, উদ্ভিদ ও বস্তু প্রভৃতি প্রত্যেকটির ক্ষেত্রে ৫ হতে খুব বেশি ৬ প্রকার ধাতুর অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।’
সর্বাধিক সংখ্যক (৪০ প্রকার) ধাতুর অস্তিত্ব থাকায় কেবল মানুষের পক্ষে পর্যাপ্ত জ্ঞান অর্জনের নিমিত্তে পৃথিবীর বাস্তবতাসহ একাডেমিক (প্রথম শ্রেণি হতে মাস্টার্স ডিগ্রি পর্যন্ত) পরিমিত শিক্ষা গ্রহণের নিমিত্তে তিন স্তরে, যথা-০১. প্রাথমিক, ০২. মাধ্যমিক এবং ০৩. উচ্চশিক্ষা দানের জন্য নানা ধরনের স্কুল, মাদরাসা, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট প্রভৃতিতে যোগ্য ও দক্ষ শিক্ষক, গুরু ও উস্তাদ প্রমুখের বিশাল অভিজ্ঞতা, অসীম ধৈর্য, অকৃত্রিম সাহস এবং নানা বৈচিত্র্যময় কলাকৌশলের সর্বোত্তম ব্যবহারের মধ্য দিয়ে মেধাশক্তিকে পুরোপুরিভাবে বিকশিত ও উন্মুক্ত করতে সক্ষম হয়। নির্ধারিত পথে জ্ঞান পিপাসুরা নতুন নতুন উদ্ভাবনের নেশা এবং জ্ঞানভান্ডারকে আরো সমৃদ্ধ করার আশায় জ্ঞান সাগরে নিবিড় অনুসন্ধানের মধ্য দিয়ে জগৎ বিখ্যাত জ্ঞানী হয়।
বিশ্বপ্রকৃতি-প্রাণী, উদ্ভিদ ও বস্তু প্রভৃতির ওপর ব্যাপক গবেষণার মধ্য দিয়ে নানা তত্ত্ব, সূত্র, ফর্মুলা, মডেল ও গাইডলাইন প্রভৃতি উদ্ভাবনসহ বিশাল জ্ঞানের সমন্বয়ে নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে সক্ষম হচ্ছে- এ মানুষ।
নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও কঠিন রোগ-ব্যাধি প্রভৃতি হতে মুক্তির জন্য পরিমিত উপকরণ/ওষুধ; বিশাল পাহাড়-পর্বত ও অসমতল ভূমি প্রভৃতিকে সমতলে পরিণত অতঃপর ফসলি, বসতবাড়ি ও শিল্প কারখানা প্রভৃতির জন্য ডিনামাইট এবং বিশ্বে ব্যাপক জ্বালানি শক্তির ঘাটতি পূরণের জন্য পারমাণবিক বোমা উদ্ভাবনই ছিল মূল উদ্দেশ্য। অথচ কতিপয় দুর্বৃত্ত ও স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি, দল ও গোষ্ঠী প্রভৃতি কেবল কায়েমী স্বার্থ হাসিলসহ দুনিয়ায় ক্ষণিকের বাদশাহ হওয়ার জন্য সম্পূর্ণ মিথ্যা বাসনা, দম্ভ, ক্ষমতা, অহমিকা ও বাহাদুরীর জন্য নানাভাবে ক্ষতিসাধনসহ মারণাস্ত্র, যেমন- কামান, বন্দুক ও পারমাণবিক বোমা প্রভৃতি উদ্ভাবন অতঃপর ন্যূনতম সময় ও সহজে নিমিষের মধ্যে নির্মিত অট্টালিকা ও স্থাপনা প্রভৃতির ব্যাপক ক্ষতিসাধনসহ ধ্বংস এমনকি শিশু, নারী ও বৃদ্ধসহ নিরীহ মানুষের ওপর কঠিন নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। এছাড়াও সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও ধর্ম প্রভৃতিকে চরমভাবে অবজ্ঞাসহ মানবিক এবং দেশী ও আন্তর্জাতিক আইন ও বিধি-বিধান প্রভৃতি লংঘনের মধ্য দিয়ে সামাজিকভাবে নানা অপমান, অপদস্থ ও লাঞ্ছনাসহ বিচারিক আদালত কর্তৃক জেল, জরিমানা ও ফাঁসিকাষ্ঠে মৃত্যুদন্ড বলবৎ করছে- এ মানুষ।

দুনিয়ায় এ ভয়াবহ পরিস্থিতি হতে স্থায়ী মুক্তি, শান্তি-শৃঙ্খলা ও প্রবৃদ্ধির ধারা চলমান রাখার জন্য ইসলামী আদর্শকে পুরোপুরিভাবে প্রতিষ্ঠা ও চলামান রাখা আবশ্যক। এক্ষেত্রে প্রত্যেক মানুষকে, ক. ভালো- সবক্ষেত্রে সহজ ও সরল নীতি অনুসরণ, কথা ও কাজে মিল রাখা, সত্য-কল্যাণ ও সমৃদ্ধকে অগ্রাধিকার দেওয়া, হাসি ও খুশি থাকার চেষ্টা এবং কোনো উপকার না করতে পারলেও কখনো ক্ষতি ও অনিষ্ট করার বাসনা ত্যাগ; খ. সুশিক্ষিত- ভালো ও মন্দ, উত্তম ও অধম, উন্নত ও অনুন্নত, সঠিক ও ভুল এবং গ্রহণ ও বর্জন প্রভৃতি ক্ষেত্রে বিকল্পের ভেতর উপকারী, উত্তম ও পরিমিতকে নির্বাচন করার ক্ষমতা; ঘ. দেশপ্রেম- নির্দিষ্ট ব্যক্তি, দল ও গোষ্ঠীর স্বার্থকে কখনো বিবেচনা না করে সামষ্টিকভাবে দেশ ও জাতির স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়ার নীতি এবং গ. অধিক দায়িত্বশীল- অর্পিত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে মহৎ, কল্যাণকর ও সমৃদ্ধি প্রভৃতি ক্ষেত্রে কোনারকম গাফিলতি, গড়িমসি ও দায়সারাভাব প্রভৃতিকে সম্পূর্ণভাবে পরিহার, বরং এক্ষেত্রে সর্বশক্তি, যোগ্যতা, দক্ষতা, সাহস ও নিরপেক্ষভাবে নির্দিষ্ট সময়ের ভেতর পরিমিতভাবে দায়িত্ব পালন করা প্রভৃতি ইসলামী আদর্শ কেবল মানুষের জন্যে ।
বিশ্বপ্রকৃতি, যথা- প্রাণী, উদ্ভিদ ও বস্তু প্রভৃতিসহ এগুলোর সমন্বয়ে পরিমিত প্রযুক্তির সাহায্যে উদ্ভাবিত শক্তি নানামুখী ব্যবহার এবং ইচ্ছা অনুযায়ী ব্যবহার, ভোগ এবং মওজুতকরণসহ নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণ ক্ষমতা দিয়েছেন কেবল মানুষকে মহান সৃষ্টিকর্তা।
সৃষ্টিকর্তার নির্ধারিত পদসহ ইসলামী আদর্শকে যথাযথভাবে অনুসরণ এবং পরিমিত ব্যবহারের মধ্য দিয়ে পরিপূর্ণ প্রশান্তিসহ এ পৃথিবীতে বসবাসসহ মৃত্যুর পর কবর ও হাশরের চূড়ান্ত বিচারে মুক্তিসহ পরম সুখ ও শান্তিসহ অনাবিল আনন্দে বেহেস্তে থাকবেন এ মানুষ। অপরদিকে সৃষ্টিকর্তার চরম হুঁশিয়ারীসহ কঠিন ধমক দিয়েছেন, মানুষ যদি এ আদর্শকে ভুলে কেবল জগতে অধিক ধন-সম্পদ ও ক্ষমতা প্রভৃতি অর্জনের নিমিত্তে অত্যাচার ও জুলুম প্রভৃতি দ্বারা সবক্ষেত্রে অন্যায় ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মধ্য দিয়ে ক্ষণিকের জন্য সম্পদ ও ঐশ্বর্র্য প্রভৃতি বৃদ্ধির সাথে সাথে নানা চরম অশান্তির মধ্য দিয়ে এ দুনিয়া হতে চির বিদায় নেয় এ পৃথিবী হতে অতঃপর পাকাপোক্ত পাপের বোঝা নিয়ে কবরে প্রবেশ করে হাশরের চূড়ান্ত বিচারে চরম অশান্তি এবং কঠিন যন্ত্রণা ভোগ করতেই হবে দোযখে- এ মানুষকে।

এ নিরিখে প্রাথমিক স্তরের একাডেমিক পাঠ্যসূচিতে সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও ধর্ম এবং বাংলা (মাতৃভাষা হিসেবে), গণিত ও ইংরেজি প্রভৃতি আবশ্যক বিষয়সমূহ অন্তর্ভুক্ত করা একান্ত প্রয়োজন। আদর্শ জ্ঞানে সমৃদ্ধতা অর্জন ও শক্ত ভিত্তির উপর কর্মকেন্দ্রিক বাস্তবসম্মত আধুনিক, যুগোপযোগী এবং প্রযুক্তি নির্ভর বিষয়ে পরিমিত যোগ্যতা ও দক্ষতা অর্জন এবং কার্যকর প্রশিক্ষণ গ্রহণসহ দীর্ঘ অভিজ্ঞতার আলোকে কেবল উত্তমকে নির্বাচন এবং যথাযথভাবে বাস্তবায়ন ছাড়াও আদর্শ বহির্ভূত সবকিছুকে চরমভাবে ঘৃণা এবং সম্পূর্ণভাবে বর্জনের মধ্য দিয়ে কেবল মঙ্গলজনক, শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে শতভাগ সততা এবং পরিমিত শক্তিকে পূর্ণমাত্রা ও সাহসে বলীয়ানসহ, নিরপেক্ষ ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ এবং মহৎ গুণের ভিত্তিতে প্রত্যেক পরিবার, অঞ্চল, দেশ ও জাতিকে সর্বোচ্চ শান্তি এবং উচ্চতার শিখরে টেনে তুলতে পারে অবশ্যই কামিয়াবি হবেই- সমৃদ্ধ আদর্শবানরা।
লেখক : গবেষক ও প্রফেসর

বিষয়:

শেয়ার করুন

মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার তথ্য সংরক্ষিত রাখুন

বিশেষ শর্তসাপেক্ষে এই ওয়েবসাইটটি সামাজিক কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ কিংবা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নিকট বিক্রি করা হবে।

আদর্শ হোক জীবনের সাথী

প্রকাশ: ১১:৪৯:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫

মহাগ্রন্থ আল কুরআনে স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেছেন, এ বিশ্বের সেরা ও শ্রেষ্ঠ জীব হলো মানুষ। রসায়নশাস্ত্রে প্রাপ্ত গবেষণায় এর যথার্থ প্রমাণও মিলেছে, ‘এ পর্যন্ত পৃথিবীতে ১১৪ হতে মতান্তরে ১১৯ প্রকার মৌলিক ধাতু আবিষ্কৃত হয়েছে যার ভেতর সর্বাধিক ৪০ প্রকার মৌলিক ধাতু কেবল মানবদেহে এবং অন্যান্য প্রাণী, উদ্ভিদ ও বস্তু প্রভৃতি প্রত্যেকটির ক্ষেত্রে ৫ হতে খুব বেশি ৬ প্রকার ধাতুর অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।’
সর্বাধিক সংখ্যক (৪০ প্রকার) ধাতুর অস্তিত্ব থাকায় কেবল মানুষের পক্ষে পর্যাপ্ত জ্ঞান অর্জনের নিমিত্তে পৃথিবীর বাস্তবতাসহ একাডেমিক (প্রথম শ্রেণি হতে মাস্টার্স ডিগ্রি পর্যন্ত) পরিমিত শিক্ষা গ্রহণের নিমিত্তে তিন স্তরে, যথা-০১. প্রাথমিক, ০২. মাধ্যমিক এবং ০৩. উচ্চশিক্ষা দানের জন্য নানা ধরনের স্কুল, মাদরাসা, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট প্রভৃতিতে যোগ্য ও দক্ষ শিক্ষক, গুরু ও উস্তাদ প্রমুখের বিশাল অভিজ্ঞতা, অসীম ধৈর্য, অকৃত্রিম সাহস এবং নানা বৈচিত্র্যময় কলাকৌশলের সর্বোত্তম ব্যবহারের মধ্য দিয়ে মেধাশক্তিকে পুরোপুরিভাবে বিকশিত ও উন্মুক্ত করতে সক্ষম হয়। নির্ধারিত পথে জ্ঞান পিপাসুরা নতুন নতুন উদ্ভাবনের নেশা এবং জ্ঞানভান্ডারকে আরো সমৃদ্ধ করার আশায় জ্ঞান সাগরে নিবিড় অনুসন্ধানের মধ্য দিয়ে জগৎ বিখ্যাত জ্ঞানী হয়।
বিশ্বপ্রকৃতি-প্রাণী, উদ্ভিদ ও বস্তু প্রভৃতির ওপর ব্যাপক গবেষণার মধ্য দিয়ে নানা তত্ত্ব, সূত্র, ফর্মুলা, মডেল ও গাইডলাইন প্রভৃতি উদ্ভাবনসহ বিশাল জ্ঞানের সমন্বয়ে নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে সক্ষম হচ্ছে- এ মানুষ।
নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও কঠিন রোগ-ব্যাধি প্রভৃতি হতে মুক্তির জন্য পরিমিত উপকরণ/ওষুধ; বিশাল পাহাড়-পর্বত ও অসমতল ভূমি প্রভৃতিকে সমতলে পরিণত অতঃপর ফসলি, বসতবাড়ি ও শিল্প কারখানা প্রভৃতির জন্য ডিনামাইট এবং বিশ্বে ব্যাপক জ্বালানি শক্তির ঘাটতি পূরণের জন্য পারমাণবিক বোমা উদ্ভাবনই ছিল মূল উদ্দেশ্য। অথচ কতিপয় দুর্বৃত্ত ও স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি, দল ও গোষ্ঠী প্রভৃতি কেবল কায়েমী স্বার্থ হাসিলসহ দুনিয়ায় ক্ষণিকের বাদশাহ হওয়ার জন্য সম্পূর্ণ মিথ্যা বাসনা, দম্ভ, ক্ষমতা, অহমিকা ও বাহাদুরীর জন্য নানাভাবে ক্ষতিসাধনসহ মারণাস্ত্র, যেমন- কামান, বন্দুক ও পারমাণবিক বোমা প্রভৃতি উদ্ভাবন অতঃপর ন্যূনতম সময় ও সহজে নিমিষের মধ্যে নির্মিত অট্টালিকা ও স্থাপনা প্রভৃতির ব্যাপক ক্ষতিসাধনসহ ধ্বংস এমনকি শিশু, নারী ও বৃদ্ধসহ নিরীহ মানুষের ওপর কঠিন নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। এছাড়াও সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও ধর্ম প্রভৃতিকে চরমভাবে অবজ্ঞাসহ মানবিক এবং দেশী ও আন্তর্জাতিক আইন ও বিধি-বিধান প্রভৃতি লংঘনের মধ্য দিয়ে সামাজিকভাবে নানা অপমান, অপদস্থ ও লাঞ্ছনাসহ বিচারিক আদালত কর্তৃক জেল, জরিমানা ও ফাঁসিকাষ্ঠে মৃত্যুদন্ড বলবৎ করছে- এ মানুষ।

দুনিয়ায় এ ভয়াবহ পরিস্থিতি হতে স্থায়ী মুক্তি, শান্তি-শৃঙ্খলা ও প্রবৃদ্ধির ধারা চলমান রাখার জন্য ইসলামী আদর্শকে পুরোপুরিভাবে প্রতিষ্ঠা ও চলামান রাখা আবশ্যক। এক্ষেত্রে প্রত্যেক মানুষকে, ক. ভালো- সবক্ষেত্রে সহজ ও সরল নীতি অনুসরণ, কথা ও কাজে মিল রাখা, সত্য-কল্যাণ ও সমৃদ্ধকে অগ্রাধিকার দেওয়া, হাসি ও খুশি থাকার চেষ্টা এবং কোনো উপকার না করতে পারলেও কখনো ক্ষতি ও অনিষ্ট করার বাসনা ত্যাগ; খ. সুশিক্ষিত- ভালো ও মন্দ, উত্তম ও অধম, উন্নত ও অনুন্নত, সঠিক ও ভুল এবং গ্রহণ ও বর্জন প্রভৃতি ক্ষেত্রে বিকল্পের ভেতর উপকারী, উত্তম ও পরিমিতকে নির্বাচন করার ক্ষমতা; ঘ. দেশপ্রেম- নির্দিষ্ট ব্যক্তি, দল ও গোষ্ঠীর স্বার্থকে কখনো বিবেচনা না করে সামষ্টিকভাবে দেশ ও জাতির স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়ার নীতি এবং গ. অধিক দায়িত্বশীল- অর্পিত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে মহৎ, কল্যাণকর ও সমৃদ্ধি প্রভৃতি ক্ষেত্রে কোনারকম গাফিলতি, গড়িমসি ও দায়সারাভাব প্রভৃতিকে সম্পূর্ণভাবে পরিহার, বরং এক্ষেত্রে সর্বশক্তি, যোগ্যতা, দক্ষতা, সাহস ও নিরপেক্ষভাবে নির্দিষ্ট সময়ের ভেতর পরিমিতভাবে দায়িত্ব পালন করা প্রভৃতি ইসলামী আদর্শ কেবল মানুষের জন্যে ।
বিশ্বপ্রকৃতি, যথা- প্রাণী, উদ্ভিদ ও বস্তু প্রভৃতিসহ এগুলোর সমন্বয়ে পরিমিত প্রযুক্তির সাহায্যে উদ্ভাবিত শক্তি নানামুখী ব্যবহার এবং ইচ্ছা অনুযায়ী ব্যবহার, ভোগ এবং মওজুতকরণসহ নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণ ক্ষমতা দিয়েছেন কেবল মানুষকে মহান সৃষ্টিকর্তা।
সৃষ্টিকর্তার নির্ধারিত পদসহ ইসলামী আদর্শকে যথাযথভাবে অনুসরণ এবং পরিমিত ব্যবহারের মধ্য দিয়ে পরিপূর্ণ প্রশান্তিসহ এ পৃথিবীতে বসবাসসহ মৃত্যুর পর কবর ও হাশরের চূড়ান্ত বিচারে মুক্তিসহ পরম সুখ ও শান্তিসহ অনাবিল আনন্দে বেহেস্তে থাকবেন এ মানুষ। অপরদিকে সৃষ্টিকর্তার চরম হুঁশিয়ারীসহ কঠিন ধমক দিয়েছেন, মানুষ যদি এ আদর্শকে ভুলে কেবল জগতে অধিক ধন-সম্পদ ও ক্ষমতা প্রভৃতি অর্জনের নিমিত্তে অত্যাচার ও জুলুম প্রভৃতি দ্বারা সবক্ষেত্রে অন্যায় ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মধ্য দিয়ে ক্ষণিকের জন্য সম্পদ ও ঐশ্বর্র্য প্রভৃতি বৃদ্ধির সাথে সাথে নানা চরম অশান্তির মধ্য দিয়ে এ দুনিয়া হতে চির বিদায় নেয় এ পৃথিবী হতে অতঃপর পাকাপোক্ত পাপের বোঝা নিয়ে কবরে প্রবেশ করে হাশরের চূড়ান্ত বিচারে চরম অশান্তি এবং কঠিন যন্ত্রণা ভোগ করতেই হবে দোযখে- এ মানুষকে।

এ নিরিখে প্রাথমিক স্তরের একাডেমিক পাঠ্যসূচিতে সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও ধর্ম এবং বাংলা (মাতৃভাষা হিসেবে), গণিত ও ইংরেজি প্রভৃতি আবশ্যক বিষয়সমূহ অন্তর্ভুক্ত করা একান্ত প্রয়োজন। আদর্শ জ্ঞানে সমৃদ্ধতা অর্জন ও শক্ত ভিত্তির উপর কর্মকেন্দ্রিক বাস্তবসম্মত আধুনিক, যুগোপযোগী এবং প্রযুক্তি নির্ভর বিষয়ে পরিমিত যোগ্যতা ও দক্ষতা অর্জন এবং কার্যকর প্রশিক্ষণ গ্রহণসহ দীর্ঘ অভিজ্ঞতার আলোকে কেবল উত্তমকে নির্বাচন এবং যথাযথভাবে বাস্তবায়ন ছাড়াও আদর্শ বহির্ভূত সবকিছুকে চরমভাবে ঘৃণা এবং সম্পূর্ণভাবে বর্জনের মধ্য দিয়ে কেবল মঙ্গলজনক, শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে শতভাগ সততা এবং পরিমিত শক্তিকে পূর্ণমাত্রা ও সাহসে বলীয়ানসহ, নিরপেক্ষ ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ এবং মহৎ গুণের ভিত্তিতে প্রত্যেক পরিবার, অঞ্চল, দেশ ও জাতিকে সর্বোচ্চ শান্তি এবং উচ্চতার শিখরে টেনে তুলতে পারে অবশ্যই কামিয়াবি হবেই- সমৃদ্ধ আদর্শবানরা।
লেখক : গবেষক ও প্রফেসর